
কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়া ৫০ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-কে। এই সহায়তা চলমান সংকটের মধ্যে থাকা চার লাখ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে জরুরি সেবা প্রদানে সহায়ক হবে।
আইওএমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অনুদানের অর্থ ব্যবহার করে সংস্থা ৭টি ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) কার্যক্রম জোরদার করবে। এছাড়াও ১৭টি ক্যাম্পের ৪১,৫০০ রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য নিয়মিত এলপিজি সরবরাহের মাধ্যমে নিরাপদ রান্নার জ্বালানি নিশ্চিত করা হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা ক্যাম্পে পানি ও স্যানিটেশন সুবিধার নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধি, হাইজিন প্রচারণা জোরদার এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ওয়াশ সেবা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
প্রকল্পের আরেকটি মূল অংশ হলো রান্নার জ্বালানি সরবরাহ, যা শুধু নিরাপদ রান্নার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে না, বরং খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি উন্নত করে, বন উজাড় কমায়, স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস করে এবং বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের জন্য সুরক্ষা বৃদ্ধি করে, যারা জ্বালানি সংগ্রহের সময় সহিংসতার ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেন, “চলতি বছরও কোরিয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তায় দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে। এবারের সহায়তার মধ্যে রয়েছে এক কোটি মার্কিন ডলার অর্থায়ন এবং বিপুল চাল সরবরাহ। এটি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি কোরিয়ার অটল প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠী উভয়ই প্রয়োজনীয় সহায়তা পায় এবং ভবিষ্যতের জন্য টেকসই সমাধান নিশ্চিত হয়।”
আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রধান ল্যান্স বোনো বলেন, “এই সহায়তা ক্যাম্পে বসবাসরত মানুষের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও টিকে থাকার সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। দক্ষিণ কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে, যা স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা খাতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নতুন অনুদান কক্সবাজারের মানবিক পরিস্থিতি ও স্থিতিশীলতা জোরদারে তাদের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।”
২০১৭ সালে জরুরি পরিস্থিতি শুরু থেকে কোরিয়া সরকার ধারাবাহিকভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় অবদান রেখে আসছে। শুধু চলতি বছরেই তারা আইওএম ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাকে এক কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে।