‘ঢাকা-থ সিএনজি অটোরিক্সা’ মহানগরীতে চলাচলের অনুমতির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৫০ পিএম, ২২ জুন ২০২৫

ঢাকা মেট্রোপলিটন এড়িয়ায় ২০০০ সালের আগে ৩৫ হাজার ‘বেবি ট্যাক্সির’ চলাচল ছিল। তাহা উচ্ছেদ করে মাত্র ১৫ হাজার ‘ঢাকা মেট্রো-থ’ সিএনজি অটোরিক্সার অনুমোদন দেওয়া হয়। ফলে সেই সময়ে ২০ হাজার চালক গাড়ি না পেয়ে বেকার হয়ে পড়েন। এছাড়া ২০০০ সালের পর প্রতিদিন বিআরটিএ হইতে বৈধ থ্রি-হুংইলার ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে ২৫ বৎসরে অসংখ্য চালক এই সেক্টরে যোগ হয়েছে। অথচ নতুন কোন গাড়ী রেজিষ্ট্রেশন দেওয়া হয়নি, ফলে নতুন চালকদের কোন কর্মস্থান হয়নি।
অন্যদিকে, ‘ঢাকা মেট্রো-থ’ মালিকগণ একচেটিয়া ব্যবসা করার লক্ষে সিন্ডিকেট তৈরি করে চালকদের নিকট থেকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত জমা গ্রহণ করা এবং কথায় কথায় ছাটাইয়ের ভয়-ভিতি প্রদর্শনসহ নানা নির্যাতনের কারনে উক্ত মালিকদের গাড়ী চালাতে চালকরা অনাগ্রহী হয়ে পড়ে। এই সকল কারনে ঢাকা মেট্রো এড়িয়ার কিছু সংখ্যক চালকরা ধার, কর্জ, চড়া সুদে লোন, পরিবারের স্বর্ণ অলংকার বিক্রিসহ ইত্যাদির মাধ্যমে ‘ঢাকা-থ’ সিএনজি অটোরিক্সা ক্রয় করে মেট্রো এড়িয়ার আশেপাশে ঢাকা জেলার সড়ক সমূহে গাড়ী চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে আসিতেছিলেন।
এমতাবস্থায়, গত ২০১৬ সালের ২৮ জুন তারিখে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার উক্ত মেট্রো এড়িয়ার আশেপাশের ১৬টি ইউনিয়ন ঢাকা জেলার এড়িয়া হইতে কেটে নিয়ে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড তৈরি করে ঢাকা মেট্রো এড়িয়া বৃদ্দি করেন। ফলে ঢাকা সিটির সেই চালকরা যারা উক্ত ইউনিয়ন সমূহের সড়কে গাড়ী চালাতেন তারা তাদের সেই এড়িয়া হইতে উচ্ছেদ হইয়া পুনরায় বেকার হইয়া পড়িলে উপায়ন্তর না পেয়ে অবশেষে তারা কম/বেশি ৩ হাজার ‘ঢাকা-থ’ সিএনজি অটোরিক্সা ঢাকা মেট্রো এড়িয়ায় চলাচলের মাধ্যমে পরিবার পরিজনের বেচে থাকার জন্য মুখে 'দু' মুঠো খাবার যোগাড় করে চলছেন। ইতিমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক সার্জেন্ট গন উক্ত চালকদেরকে মেট্রো এরিয়া হইতে উচ্ছেদের জন্য অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে অধিক তৎপরতার মাধ্যমে অতিরিক্ত মামলা, রেকার, ড্রাম্পিং দেওয়ায় উক্ত চালকগন বর্তমানে পুনরায় আবার বেকার হয়ে পড়েছেন।
আজ প্রায় একটানা ৫ মাস গত হলো গাড়ী বন্ধ রয়েছে। চালকরা বেকার হয়ে পড়ায় পরিবার গুলিতে হাহাকার বিরাজ করছে। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া পরিবারের সদস্যদের খাওয়া পড়া, বাসা ভাড়া, চিকিৎসা ইত্যাদি সংকটের কারনে তারা নতুন নতুন ধার দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে।
কম/বেশি ৩ হাজার ‘ঢাকা-থ’ সিএনজি অটোরিক্সা ঢাকা মেট্রো এড়িয়ায় চলাচলের অনুমতির দাবীতে রাজপথে সভা-সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান এবং তার সাথে গত ০৩/০১/২০২৩ইং ও ১৪/০৮/২০২৪ইং সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বরাবর দরখাস্ত প্রদান এবং ২৫/০৯/২০২৪ইং ও ১৬/১০/২০২৪ইং তারিখে উপদেষ্টা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় বরাবর ১ম ও ২য় স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। যাহার প্রেক্ষিতে গত ২৪/১০/২০২৪ইং তারিখে সহকারি সচিব মোঃ জসিম উদ্দীন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিএ সংস্থাপন শাখা আমাদের উক্ত দাবী বিষয়ে জরুরী মতামত প্রেরনের জন্য চেয়ারম্যান, বিআরটিএ’কে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন।
বিগত চেয়ারম্যান উক্ত বিষয়ে কি মতামত প্রদান করেছেন, আমাদের বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে ইত্যাদি বিষয় শতচেষ্টা করেও আমরা কোন দপ্তর হইতে সংবাদ সংগ্রহ করতে পারিনি। এই দিকে গত ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিআরটিএ চেয়ারম্যান ঢাকা মহানগরীতে নতুন সিএনজি অটোরিক্সার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মত প্রদান করে সিনিয়র সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় বরাবর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পত্র প্রেরণ করেন। কিন্তু আমাদের আবেদনের বিষয়টি উক্ত পত্রে উল্লেখ করেননি। অতপর উক্ত পত্র পেয়ে বিআরটিএ সংস্থাপন শাখা নতুন সিএনজি অটোরিক্সার প্রয়োজনীয়তার সংখ্যা জানিয়ে মতামতের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে পত্র প্রেরণ করেন। উক্ত পত্রে বিভিন্ন সংগঠনের আবেদনের বিষয়টি উল্লেখ করলেও আমাদের আবেদনের বিষয়ে কিছুই লেখা হয়নি। অথচ উভয় দপ্তরই আমাদের দাবী বিষয়ে অবগত রয়েছেন।
সম্প্রতি আমাদের "ঢাকা-থ" সিএনজি অটোরিক্সা মালিক শ্রমিকদের ২টি সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে "ঢাকা-থ” সিএনজি অটোরিক্সা মালিক শ্রমিক ঐক্য জোট নাম গ্রহণ সমাপ্ত করা হয়েছে। উক্ত নতুন নামের সংগঠন উভয় গ্রুপের ঢাকাস্থ বিভিন্ন থানা এড়িয়ার প্রতি কমিটির ৫ জন (সুপার ফাইভ) কর্মিদের নিয়ে গত ১৮/০৬/২০২৫ইং তারিখে বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ শিশু কল্যান পরিষদ মিলনায়তনে মালিক শ্রমিক ঐক্য কর্মি সভা অনুষ্ঠিত করে উক্ত সভায় উপস্থিতিদের নিকট আগামী দিনের কর্মসূচী বিষয়ে মতামত আহ্বান করে নিম্ন লিখিত কর্মসূচী পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন, যাহা আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা ঘোষনা করছি।
আমাদের দাবীসমূহ সরকারের যথাযথ বিভাগে জানানোর পর থেকে আমরা বিআরটিএ এবং মন্ত্রনালয়ে সাক্ষাৎ করলে নানান কারনসহ শিলিং বৃদ্ধি করা জটিল বিষয় বলে আমাদেরকে জানিয়ে বারবার কাল বিলম্ব করে চলছে। অথচ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৬ষ্ঠ অধ্যায় ধারা ৩৩ এর ২ অনুচ্ছেদ মতে যে কোন এলাকায় গাড়ি অতিরিক্ত হইলে অন্যান্য এলাকায় তাহা চলাচলের অনুমতি প্রদান করা যাইবে। মন্ত্রনালয়, বিআরটিএ, পুলিশ কমিশনার তার দপ্তর আমাদের সাথে কাজে এবং কথায় যেই ধরনের নেক্কার জনক আচরণ প্রদর্শন করে চলছেন তার জন্য আমাদের সদস্যদের মাঝে অত্যন্ত ক্ষোভ বিরাজ করছে। যেকোন সময়ে উক্ত ক্ষোভ বিক্ষোভে রুপান্তরিত হয়ে অনাকাংখিত ঘটনার জন্ম দিতে পারে। যদি অঘটন ঘটেযায় তবে এইজন্য চেয়ারম্যান, বিআরটিএ, সিনিয়র সচিব, ও উপদেষ্টা এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশানর সম্পূর্ন রুপে দায়ী থাকিবেন।
এমনি পরিস্থিতিতে আমাদের দাবী, আগামী ৭ দিনের মধ্যে আমাদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টির সুরাহা না করা হলে, বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের সামনে আগামী ২৯/০৬/২০২৫ইং তারিখ রোজ রবিবার সকাল ১০টা হইতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রতিদিন লাগাতার অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হইবে।