
ঢাকা একুশে বইমেলায় শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীর ‘দ্বিচারিতা’র মোড়ক উন্মোচন
ঢাকা অমর একুশে বইমেলায় সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীর কাব্যগ্রন্থ ‘দ্বিচারিতার মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলার মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্টেটেন্ড আইল্যান্ড লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট শামসুদ্দিন হারুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাধারা’র সম্পাদক ও প্রকাশক সালেক নাসির উদ্দিন, কবি বাসুদেব নাথ ও সানাতুল হক চৌধুরী। অনুষ্ঠানের বক্তারা বলেন, ‘দ্বিচারিতা কাব্যগ্রন্থে জটিল সমাজচিত্র আর জীবনের বিচিত্রতাকে তুলে ধরা হয়েছে। সমাজের অসঙ্গতি, মানুষের বহুমুখী আচরণ, সৎ ও সমাজ সেবকের আড়ালে অপকর্মের সাথে সংশ্লিষ্টতার নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।’ বক্তারা আরো বলেন, ‘জুলাই গনঅভ্যুত্থানে নিহত বীর শহীদদের বিরত্বগাঁথা এই কাব্যগ্রন্থকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করেছে। প্রতিটি কবিতার শব্দচয়ন, ছন্দ পাঠকদের আকৃষ্ট করেছে।’ প্রসঙ্গত, দ্বিচারিতা কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন। এটি শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীর পঞ্চম গ্রন্থ। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বইমেলায় অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনের স্টলে এই বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীর কাব্যগ্রস্থ ‘দ্বিচারিতা’র মোড়ক উন্মোচন
চট্টগ্রামে অমর একুশে বই মেলায় সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী কাব্যগ্রন্থ ‘দ্বিচারিতা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বইমেলার অক্ষরবৃত্ত স্টলে এ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার রিজিওনাল এডিটর জাহিদুল করিম কচি।চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে স্বাগত বক্তব্য দেন কবি অভীক ওসমান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংবাদিক বিকাশ বড়ুয়া, দৈনিক কালের কন্ঠের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ, সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, ৭১ টেলিভিশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সাবেক সহকারী কমিশনার কামরুল ইসলাম চৌধুরী, রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন, রোটারি ক্লাব অব চট্টগ্রাম স্মাইলের প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট রওশন আক্তার, ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রঞ্জন বড়ুয়া, ফজলুল কাদের, সাংবাদিক সৈয়দ আজমল হোসেন, কবি সুমনা বড়ুয়া ও জেসমিন আক্তার।অনুষ্ঠানে জাহিদুল করিম কচি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে বৈষম্যের অবসান হলো তার পূর্ণ সুফল পেতে হলে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। এ দায়িত্ব শুধু রাজনীতিবিদ বা নীতিনির্ধারকদের নয়, বরং কবি-সাহিত্যিকদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’ রিয়াজ হায়দার চৌধুরী কবি শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীর সংগ্রামী চেতনার অনন্য শব্দ চয়নের প্রশংসা করে বলেন, ‘মানুষের অধিকার ও বৈষম্য বিরোধী চেতনা যেমন গ্রন্থটিতে উপজীব্য হয়েছে, তেমনি ভবিষ্যতেও যেন বঞ্চনা অপ্রাপ্তি , স্বপ্নভঙ্গ ও দ্রোহের কথা অব্যাহত থাকে।’ অন্য বক্তরা বলেন, ‘দ্বিচারিতা কাব্যগ্রন্থে শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী মানুষের অন্তর্গত দ্বন্ধ ও সমাজের বহিরঙ্গের বৈপরীত্যের নানা বিষয় তুরে ধরেছেন। জটিল সমাজচিত্র আর জীবনের বিচিত্রতাকে ধারণ করেই রচিত হয়েছে ‘দ্বিচারিতা’ কাব্যগ্রন্থ। ভালোবাসা, দ্বন্ধ, প্রতিরোধ আর জুলাই বিপ্লবের নিহত বীরদের বিরত্বগাঁথা নিয়ে পংক্তিমালা এই কাব্যগ্রন্থকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।’ প্রসঙ্গত, দ্বিচারিতা শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীর পঞ্চম গ্রন্থ। এটি প্রকাশ করেছে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন। এর আগে শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীর অশ্রু, বিষ্ময় বালিকা, হনন নামে তিনটি উপন্যাস এবং বিবর্ণ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাথে যুক্ত আছেন। তিনি ২০২৪-২৫ রোটারি বর্ষে রোটারি ক্লাব অব চট্টগ্রাম স্মাইলের প্রেসিডেন্ট এর দায়িত্ব পালন করছেন।

বইমেলায় কবি বদরুজ্জামানের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘মুক্তির সংগ্রামে দাড়াও’
অমর একুশ বইমেলা ২০২৫-এ প্রকাশ হয়েছে ফ্রান্স প্রবাসী কবি বদরুজ্জামান জামানের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘মুক্তির সংগ্রামে দাড়াও’। গ্রন্থটি প্রকাশ হয়েছে বুনন প্রকাশন থেকে। পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা বইমেলা বুনন প্রকাশন ৩৬৫ নম্বর স্টলে ও সিলেট বইমেলাসহ দেশের বিভিন্ন লাইব্রেরীতে।বইটির প্রচ্ছেদ করেছেন শফিক মামুন। মূল্য ২০০ টাকা। এটি বদরুজ্জামান জামানের অষ্টম গ্রন্থ। ‘মুক্তির সংগ্রামে দাড়াও’ চার ফর্মার এই গ্রন্থে মোট ৫৬ টি কবিতা স্থান পেয়েছে।বদরুজ্জামান জামানের কবিতার নিজস্ব একটা স্টাইল আছে। ভাব, ভাষা ছন্দ ও উপমা ব্যবহারে তিনি খুবই সচেতন। প্রবাস জীবনের ব্যস্ততা স্বদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও ব্যাকুলতা তিনি হৃদয়ে ধারণ করেন। স্বদেশ প্রীতির কারণে দেশের যে কোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে কবির কলম গর্জে উঠেন। বিশেষ করে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কবিকে প্রবাসে অস্থির করে তুলে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন কলম হাতে। কবি তার কবিতায় আশা ব্যক্ত করেন এভাবে-‘অচিরেই এই সন্ধিক্ষণ কেটে যাবেসূর্যোদয়ের সোনালী আভা পূর্বাকাশেসূর্য উঠবেই পাখি ডাকবেই ।কবি তার কবিতা দিয়ে রাঙাবে প্রভাতআর সুর সঙ্গীতের মূর্ছনায় উদ্ভাসিত হবে মানুষ।’ এ রকম ৫৬টি কবিতার সমষ্টি ‘মুক্তির সংগ্রামে দাড়াও’ গ্রন্থটি।বদরুজ্জামান জামান দীর্ঘ দিন থেকে ফ্রান্সে বসবাস করছেন। প্রবাস জীবনের যান্ত্রিক ব্যস্ততার মধ্যেও স্বদেশ প্রীতি ও শিকড়ের টানে প্রতিনিয়ত লিখছেন। তার প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে কাব্যগ্রন্থ অশান্ত সমুদ্র পুষি (২০১৫), বোধের দরোজায় খিল (২০১৬), নানা রঙের ছড়া (২০১৭), জলরঙে আঁকা ছবি (২০১৮), জটের ক্রন্দনসুর (২০১৯), জেগে আছি রৌদ্রছায়ায়(২০২০), আদিম অরণ্যে মানুষের পৃথিবী (২০২১), ছড়া গ্রন্থ নানারঙের ছড়া (২০১৭)।তাছাড়া তিনি সাহিত্যের ছোটোকাগজ ‘স্রোত’ সম্পাদনা করেন।

কাজী জহিরুল ইসলামের ৯টি নতুন বই
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বইমেলায় এসেছে কাজী জহিরুল ইসলামের নতুন প্রবন্ধের বই ‘প্রমিত উচ্চারণের ভেতর’। বইটির ভূমিকায় লেখক লেখেন, ‘প্রমিত উচ্চারণের ভেতর নীরব একটি কোলাহল বেড়ে ওঠে। আমরা সর্বদাই সেটাকে ধামচাপা দিয়ে রাখি। কখনোই সেই স্বতস্ফূর্ত কোলাহলকে খুব বেশি বাড়তে দিই না। ফিসফিস করে বলি, এটা অসভ্যতা। মানুষ সভ্যতার পোশাক পরেই মঞ্চে ওঠে, কিন্তু একজন ধুলোমাখা নগ্ন মানুষ তার পাশে এসে দাঁড়ালে সব সময় তাকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দিতে নেই। তার কথাটিও আমাদের শুনতে হবে। ঝলমলে পরিচ্ছন্ন, অত্যাধুনিক ডিজাইনের পোশাক, অলঙ্কার, সাজ-সজ্জা দেখে আমরা মোহিত হই বটে কিন্তু এই পোশাকের ভেতর থেকে যদি মানুষটিকে খুলে নিয়ে যাই, কী মূল্য আছে এই সজ্জার? প্রমিত উচ্চারণের ভেতরে যে কোলাহল খুব ধীরে বেড়ে ওঠে, অপ্রমিত ভঙ্গিতে, আঞ্চলিকতায়, গ্রাম্যতায়, অসভ্যতায়, প্রতিবাদের তীব্র আর্তনাদে, সেটিই হচ্ছে সভ্যতার দেহ, বাকিটা কেবল পোশাক। এই গ্রন্থে প্রমিত উচ্চারণের ভেতরে উচ্চারিত হয়েছে অপ্রমিত উষ্মা। আশা করি, আমার পাঠকেরা সে উষ্মাকে অগ্রাহ্য করবেন না।" এছাড়া এ বছর তার ৩টি নতুন কবিতার বই এসেছে ঢাকার একুশে বইমেলায়। জলধি প্রকাশ করেছে ‘আমার দুঃখগাছে অশ্রু ফোটে যদি’, পুথিপ্রকাশ এনেছে ‘কবুয়তনামা’, বাবুই এনেছে ‘চমক দেখি তার’। চমক দেখি তার বইটির কলকাতা সংস্করণও কলকাতা বইমেলায় বেরিয়েছে। কলকাতা সংস্করণ প্রকাশকরেছে সৃস্টিসুখ। ঢাকার বইমেলায় আরো ৩টি গদ্যের বই বেরিয়েছে তার। অগ্রদূত অ্যান্ড কোম্পানি এনেছে ১০২৪ পৃষ্ঠার রয়েল সাইজের সুবিশাল ভ্রমণগ্রন্থ ‘ভ্রমণ সংগ্রহ’। স্বরে-অ বের করেছে জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর রচিত গদ্যগ্রন্থ ‘পেছনে পুলিশ সামনে স্বাধীনতা’ ও বাংলা প্রকাশ এনেছে ‘নজরুল ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’। জুলাই অভ্যুত্থানের সময়, জুলাই ও আগস্ট মাসে আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, সেগুলোর ইংরেজি সংকলন ‘থার্টি সিক্স ডেইজ অব জুলাই’ প্রকাশ করেছে স্টুডেন্ট ওয়েজ। বইটি যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন কাজী জহিরুল ইসলাম ও মুক্তি জহির।
/salauddin mahmud.jpg)
বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে সালাহ উদ্দিন মাহমুদের ‘বিষন্ন সন্ধ্যা কিংবা বিভ্রম’
অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে কবি ও কথাশিল্পী সালাহ উদ্দিন মাহমুদের গল্পগ্রন্থ ‘বিষন্ন সন্ধ্যা কিংবা বিভ্রম’। বইটি প্রকাশ করছে কিংবদন্তী পাবলিকেশন। প্রচ্ছদ করেছেন সাদিয়া তারান্নুম। এটি সালাহ উদ্দিন মাহমুদের পঞ্চম গল্পগ্রন্থ এবং পনেরোতম বই। ‘বিষণ্ন সন্ধ্যা কিংবা বিভ্রম’ বইটিতে মোট ১৩টি গল্প স্থান পেয়েছে। গল্পসমূহ হলো- ‘বিষণ্ন সন্ধ্যা কিংবা বিভ্রম’, ‘হালিমে আঙুলের হদিস’, ‘জলের ভেতর অনল’, ‘রবিতনের অন্তিম সংযম’, ‘নুন আনতে জীবন ফুরায়’, ‘একটি মসজিদের ইতিবৃত্ত’, ‘কাঁচ ভাঙা স্বপ্ন’, ‘আঁচলে বাঁধা চিরকুট’, ‘আদিম লালসার খদ্দের’, ‘কলেরাকালের দিনলিপি’, ‘অন্ধকারের শেষ সীমান্তে’, ‘মায়ের হাতের মলিদা’ এবং ‘মুঠোফোন এবং মমতাময়ী মা’। সালাহ উদ্দিন মাহমুদ বাংলা সাহিত্যে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে গবেষণা করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রাজিব মণ্ডলের অধীনে। পেশাগত জীবনে দশ বছর ধরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের ফিচার বিভাগে কর্মরত। তিনি গল্প, উপন্যাস, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ, কলাম ও ছড়া লিখে থাকেন। সালাহ উদ্দিন মাহমুদের গল্পের বই ‘সার্কাসসুন্দরী’, ‘নিশিসুন্দরী’, ‘সুন্দরী সমগ্র’ ও ‘এখানে কয়েকটি জীবন’। কবিতার বই ‘মিথিলার জন্য কাব্য’ ও ‘তুমি চাইলে’। সাক্ষাৎকার সংকলন ‘আমার আমি’ ও সচেতনতামূলক বই ‘অগ্নিকাণ্ড সতর্কতা ও নির্বাপণ কৌশল’। উপন্যাস ‘মমতা’। প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বাংলা সাহিত্যের একাল-সেকাল’ ও ‘বাংলা সাহিত্যে শিল্পপ্রবণতা’। কিশোর জীবনকথা ‘হাজী মহম্মদ মহসীন’। শিশুতোষ বই ‘স্বাধীনতার গল্প’ ও ‘ছোটদের ছয় ঋতু’। প্রকাশক অঞ্জন হাসান পবন জানান, ‘সালাহ উদ্দিন মাহমুদের গল্প বরাবরই জীবনের কথা বলে। নানাবিধ সংকট উঠে আসে তার লেখনীতে। তার গল্পে ভালোবাসা, হিংসা, মানবিকতা, জীবনযুদ্ধ, রহস্য, নিম্নবিত্ত জীবন, স্বপ্ন, সম্ভাবনা, প্রবৃত্তি, হতাশা এবং জীবন-স্মৃতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। আশা করি এবারের গল্পগুলোও পাঠকের হৃদয়কে স্পর্শ করবে।’ গল্পগ্রন্থ সম্পর্কে সালাহ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘দুই বছর বিরতির পর নতুন গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হলো। বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা। বইটি বইমেলায় কিংবদন্তী পাবলিকেশনের ৭৫-৭৬-৭৭ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের অনলাইন বুকশপগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে।’

কবিতা: একুশে ফেব্রুয়ারি । । গনি মিয়া বাবুল
একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির জাগরণবাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবীতে স্পর্ধিত উচ্চারণ,ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার অপসারণঅন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিস্ফোরণ। বিশ্বে সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক ঘটনাবাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা,শহীদের রক্ত শ্রোত নয় কোন রটনাসশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রেরণা। স্বাধীনতার ডাক, জাতির মুক্তিমোদের অহংকার, সাহস ও শক্তি,তুমি আছো বিশ্ব জুড়েবাঙালির হৃদয়ে-অন্তরে। বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য কৃষ্টিবাঙালির স্বাধীনতা-বাংলাদেশ সৃষ্টি,তুমি সভ্যতার ধারক-বাহকসংগ্রাম সফলতার মহানায়ক। কবি: শিক্ষক, কলাম লেখক, কবি, সমাজসেবক ও সংগঠক)উপদেষ্টা, কবি সংসদ বাংলাদেশচেয়ারম্যান, লেখক উন্নয়ন কেন্দ্রঢাকা।
 25/book fair 1.jpg)
বইমেলার তৃতীয় দিনে এলো ৩২ নতুন বই
অমর একুশে বইমেলার আয়োজনে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন-নতুন বই। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার তৃতীয় দিনে এসেছে ৩২ নতুন বই। এর মধ্যে রয়েছে কবিতার বই দশটি, উপন্যাস আটটি, প্রবন্ধ তিনটি, রাজনীতি দুটি, জীবনী দুটি এবং গল্প, ভ্রমণ, ইতিহাস, গবেষণা, শিশুসাহিত্য, বিজ্ঞানবিষয়ক একটি করে বই এসেছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
 25/book fair 1.jpg)
রোববার বইমেলায় নতুন বই এলো ১৩টি
অমর একুশে বইমেলার ২য় দিনে মেলায় ১৩টি বই নতুন এসেছে। এর মধ্যে কবিতার বই রয়েছে ৪টি, গল্পগ্রন্থ ২টি, বিজ্ঞান ২টি, উপন্যাস, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ১টি করে এবং অনন্য বই ২টি। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘হেলাল হাফিজের রাজনৈতিক পাঠ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. কুদরত-ই-হুদা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মৃদুল মাহবুব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুমন রহমান। ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, `উনসত্তরের গর্ভ থেকে যেসব কবির জন্ম হয়েছিল, কবি হেলাল হাফিজ তাদের অন্যতম। তার কবিতার উচ্চারণ ছিল রাখঢাকহীন, স্পষ্ট, অনাবিল ও অভাবিত। কবিতা তার কাছে কেবল ব্যক্তিগত দীর্ঘশ্বাসের বিষয় ছিল না। তিনি মনে করতেন, সমষ্টির জন্যও কবিতার একটা দায় আছে। সত্তর থেকে চুয়াত্তরের মধ্যে যে রাজনৈতিক কবিতাগুলো তিনি লিখেছেন, সেগুলোর মূল সুর কখনো মুক্তিযুদ্ধ, কখনো স্বাধীনতা উত্তর রাজনৈতিক পরিস্থিতিজাত হতাশা, আশাবাদ, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের অবস্থা ও অবস্থান, রাষ্ট্রের কাছে কবির প্রত্যাশা, দ্রোহ- এসব তার কবিতায় কখনো প্রত্যক্ষভাবে, কখনবা পরোক্ষভাবে উঠে এসেছে।' আলোচক মৃদুল মাহবুব বলেন, `কবি হেলাল হাফিজের কবিতার কথা বললেই পাঠকের মানসপটে ভেসে ওঠে ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ পঙক্তিটি। বাংলা ভাষার যেসব কবি কবিতা, নিজস্ব জীবনদর্শন ও জীবনযাপন দিয়ে মিথ হয়ে উঠতে পেরেছেন, কবি হেলাল হাফিজ তাদের একজন। কবিতার ভেতর প্রেম, বিদ্রোহ ও রাজনৈতিক চেতনা কবিকে মানুষের অনুভূতির কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে। হেলাল হাফিজ তার কবিতার মাধ্যমে মানুষের অনুভূতির সেই সুরটি স্পর্শ করতে পেরেছিলেন।' সভাপতির বক্তব্যে সুমন রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে উনসত্তর ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি সময়। কবি হেলাল হাফিজ তার কবিতায় সেই সময়কে ধারণ করেছেন। পাশাপাশি, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় উদ্ভূত দ্রোহ, সংগ্রাম, আশাবাদ, বিষাদ সবকিছুই তিনি কবিতায় তুলে এনেছেন। ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি রাসেল রায়হান, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন শফিক এবং শিশুসাহিত্যিক আশিক মুস্তাফা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি হাসান হাফিজ এবং জাকির আবু জাফর। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী অনন্যা লাবণী এবং শিপন হোসেন মানব। সুমন মজুমদারের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন সঙ্গীতমঞ্জুরী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রিজিয়া পারভীন, প্রিয়াংকা গোপ, ইসরাত জাহান, মিজান মাহমুদ রাজীব, মো. মাইদুল হক এবং নাফিজা ইবনাত কবির। বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন শিমুল বড়ুয়া (তবলা), রাজিব আহমেদ (কিবোর্ড), মো. মেজবাহ উদ্দিন (অক্টোপ্যাড), সাইদ হাসান ফারুকী (লিড গিটার), পল্লব দাস (বেইজ-গিটার)।

একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে লিটু আনামের গ্রন্থ ‘রিহলা’
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এ প্রকাশিত হচ্ছে নিউইয়র্ক প্রবাসী কথা সাহিত্যিক লিটু আনামের ভ্রমণ উপন্যাস ‘রিহলা: প্রকৃতির টানে প্রকৃতির পানে’। ইতিহাসের কিংবদন্তি ভ্রমণকারী ইবনে বতুতার রিহলা বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের বিস্ময়কর কাহিনির এক অমূল্য দলিল। বিশেষ করে কেউ বেড়াতে গেলে সে যা যা দেখে তাই লিখে ফেলে। ভ্রমণের বই হিসেবে সেটাতে এক ধরনের টেস্ট পাওয়া যায়। তবে ইবনে বতুতার ভ্রমণের বই বিখ্যাত হবার অন্যতম একটি কারণ হলো তিনি যে দেশে গিয়েছেন সে দেশে বসবান করেছেন। ১১ বছর তিনি ভারতবর্ষে ছিলেন। ভারতবর্ষে তিনি তৎকালীন সুলতানের অধীনে কাজীর দায়িত্ব পালন করেন। রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ রিহলা। তারই পথ ধরে লেখা হয়েছে রিহলা: প্রকৃতির টানে প্রকৃতির পানে, যেখানে আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা পেয়েছে নতুন এক ব্যাখ্যা। লিটু আনামের লেখা ভ্রমণ উপন্যাস ‘রিহলা: প্রকৃতির টানে প্রকৃতির পানে’ বইটি ভালো লাগবে। কারণ লিটু আনাম দীর্ঘ এক যুগের বেশী সময় ধরে আমেরিকায় বসবাস করছেন। ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন প্রদেশ এবং আমেরিকা ও কানাডার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। ছুটে চলা যার নেশা। তিনি যা দেখেন তাই লেখেন। একেবারে ধরে ধরে তিনি বর্ণনা করেছেন। আধুনিক সভ্যতার বিশালত্ব, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রূপ এবং সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের সমন্বয় নিয়ে রচিত এই ভ্রমণ কাহিনি পাঠকদের এক ভিন্ন আমেরিকা দেখাবে। নিউইয়র্কের ঝলমলে আলোকিত রাত্রি, গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মুগ্ধতা, আমেরিকার গ্রামীন জীবনের সাদামাটা চার্ম, ইতিহাসের স্মৃতিসৌধ এবং আধুনিক স্থাপত্যের অপরূপতা সবকিছুর ভান্ডার হচ্ছে রিহলা। রিহলা শুধু একটি ভ্রমণ কাহিনি নয়; এটি ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষের ভেতরের পরিবর্তন, উপলব্ধি, এবং বিশ্বকে নতুন চোখে দেখার এক অনন্য প্রয়াস। প্রতিটি অধ্যায়ে পাঠক অনুভব করবেন কেমনভাবে ভ্রমণ মানুষকে তার শেকড় থেকে মুক্ত করে এক মহাবিশ্বের অংশ করে তোলে।‘রিহলা’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হবে প্রিয়মুখ প্রকাশনী থেকে। অমর একুশে বইমেলায় প্রিয়মুখ স্টলে পাওয়া যাবে। মেলার পর রকমারিসহ সব অনলাইন শপ থেকে অর্ডার করা যাবে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন হোসেন শাহরিয়ার তৈমুর এবং অলংকরণ করেছেন রায়হান শশী।

বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার থেকে বাদ পড়ল তিন নাম
‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন তালিকায় তিনজনের নাম বাদ দিয়েছে বাংলা একাডেমি। তারা হলেন- মোহাম্মদ হাননান, ফারুক নওয়াজ ও সেলিম মোরশেদ। বুধবার বাংলা একাডেমির ফেসবুক পেইজে বিষয়টি জানানো হয়েছে। মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের বরাত দিয়ে জানানো হয়, বাংলা একাডেমি নির্বাহী পরিষদের পুনর্বিবেচনা-সভা ২৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্থগিতকৃত পুরস্কৃত লেখক তালিকা নিম্নোক্তভাবে চূড়ান্ত করা হয়: ক. কবিতা: মাসুদ খানখ. নাটক ও নাট্যসাহিত্য: শুভাশিস সিনহাগ. প্রবন্ধ/গদ্য: সলিমুল্লাহ খানঘ.অনুবাদ: জি এইচ হাবীবঙ. গবেষণা: মুহম্মদ শাহজাহান মিয়াচ. বিজ্ঞান: রেজাউর রহমানছ. ফোকলোর: সৈয়দ জামিল আহমেদ উল্লেখ্য, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার নীতিমালার চতুর্থ অধ্যায়, নবম ধারা অনুযায়ী নির্বাহী পরিষদ নতুন কাউকে পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করতে পারবেন না এবং দশম ধারা অনুযায়ী সুপারিশকৃত কোনো নাম বিবেচনা না করার ক্ষমতা বাংলা একাডেমি নির্বাহী পরিষদ সংরক্ষণ করেন।

বইমেলায় দর্পণ কবীরের দুই বই প্রকাশিত হচ্ছে
কবি ও কথা সাহিত্যিক দর্পণ কবীরের দুটি বই প্রকাশিত হচ্ছে আগামী একুশের বইমেলায়। অনন্যা পাবলিশার্স থেকে তার চতুর্থ কিশোর উপন্যাস ‘এক ঠ্যাঙা ভূত’ এবং ঝুমঝুমি প্রকাশন থেকে ‘কথোপকথন’ নামে সপ্তম কাব্যগ্রন্থ বের হচ্ছে। দুটি বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন মামুন হোসাইন। লেখকের এর আগে ২৬টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। দর্পণ কবীর উপন্যাস, কবিতা, গল্প, ছড়া ও গান লিখেন নিয়মিত। সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রাবস্থায় তার লেখালেখির হাতেখড়ি। কবিতাপ্রিয়দের কাছে তার কবিতা সমাদৃত। বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য আবৃত্তিশিল্পীরা তার কবিতা আবৃত্তি করেছেন। প্রয়াত অভিনেতা ও বাচিক শিল্পী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে আবৃত্তি হওয়া ‘বসন্ত নয় অবহেলা’ কবিতাটি পাঠক হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।দর্পণ কবীর স্ব-পরিবারে ২০০২ সাল থেকে নিউইয়র্ক শহরে বাস করছেন। পেশায় তিনি সাংবাদিক। ঢাকা ও নিউইয়র্কে তিনি বেশ কয়েকটি মিডিয়ায় কাজ করেছেন। বর্তমানে দেশকণ্ঠ ওয়েব’-এর সম্পাদক। এ ছাড়া, তিনি আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।

কবিতা: সেন্টমার্টিনের বিকেল । উম্মে সালমা চৌধুরী
সেই ছোট্ট কেয়া বনের পাশে,আমার কাঠের ঘরআর আঙ্গিনা জুড়ে আছড়ে পড়া বঙ্গোপসাগর।। আকাশ হেথায় ডুব দিয়েছে,নীল জলেতে ভেসে,সূর্য যেথায় কুসুম রঙ্গা,লজ্জাবতীর বেসে।। রঙিন রঙিন হাজার ঝিনুকঢেউয়ের তালে এসে,সাজিয়ে দেয় বালুচরচুপটি করে বসে।। সাগর তীরে স্থির দাঁড়িয়েঅবাক প্রবাল পাথরদুয়ার খুলে দেখেছিলাম,মায়ায় ভরা সাগর।। কবি: সংস্কৃতিকর্মী, চট্টগ্রাম

বাংলা একাডেমি পুরস্কার ২০২৪ পাচ্ছেন দশজন
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ পাচ্ছেন দশজন। অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেবেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) একাডেমির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিরা হলেন কবিতায় মাসুদ খান, কথাসাহিত্যে সেলিম মোরশেদ, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে শুভাশিস সিনহা, প্রবন্ধ-গদ্যে সলিমুল্লাহ খান, শিশুসাহিত্যে ফারুক নওয়াজ, অনুবাদে জিএইচ হাবীব, গবেষণায় মুহম্মদ শাহজাহান মিয়া, বিজ্ঞানে রেজাউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ হাননান ও ফোকলোরে সৈয়দ জামিল আহমেদ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রস্তাবক কমিটির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার কমিটির সিদ্ধান্তে একাডেমির নির্বাহী পরিষদ তা অনুমোদন করে।

কবিতা: তার শুভ জন্মদিন । মো. গনি মিয়া বাবুল
২০ জানুয়ারি তার শুভ জন্মদিন৩৬ বছর যুগলবন্দী স্মৃতি অমলিন,সুখে-দুঃখে অগ্রযাত্রায় এক সাথেএগিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত সফলতার পথে। নাম তার মুর্শিদা গনিউত্তম তার স্বভাব খানি,হৃদয়ে স্নেহ মমতায় ভরপুরজন্ম তার ঐতিহাসিক গাজীপুর। গর্ভে ধারণ করেছে রত্নের মতো তিন সন্তান সেদুই ছেলে এক মেয়ে চিকিৎসক প্রত্যেকে,দেশকে দিয়েছে ত্রিরত্ন উপহারতার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ বারবার। পেয়েছে রত্নগর্ভা মা পুরস্কারগড়েছে সুখী- সুন্দর সংসার।সে আমার প্রাণের প্রিয়জনতাঁকে ভালোবাসি সদা-সর্বক্ষণ। মোদের প্রেম-প্রীতি অদৃশ্য অন্তরেনিশ্চয় অটুট থাকবে আদি-প্রান্তরে,তাঁর জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছাপূরণ হোক তাঁর মনের সব ইচ্ছা। কবি: শিক্ষক, কবি, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সংগঠকউপদেষ্টা, কবি সংসদ বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় কমিটিচেয়ারম্যান, লেখক উন্নয়ন কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় কমিটি

অলোক আচার্যের কবিতা: মুখোশে ঢাকা এবং অন্যান্য
মুখোশে ঢাকা আজকাল সবকিছুতেইআমাদের উল্লাস চলে রাতভরনগ্নতায়, রাজপথে বিবেকের বেচাকেনা!ভেঙে যায় বোধের দেওয়াল, তাতেও উল্লাস-মুখোশে ঢাকা মানুষের চলাচলঅন্ধকার ঢেকে দেয় নপুংসকতা।অলিতে-গলিতে যৌবনের হাতবদলে,এক অদ্ভুত উন্মাদনা! জন্মভূমি বুকের গভীরে খুঁজে দেখো তুমিযেটুকু দেখেছো গভীরে, ধূলিকণা, প্রস্তর, কাদামাটিসেটুকু আমার জন্মভূমি। চেয়ে দেখ, এইখানেমাটি লেগে আছে লাঙলের ফলায়সাত সমুদ্র তেরো নদী ঢুকে গেছে এই বুকেদেখেছো যেটুকু অধিকার বৃক্ষের ছায়াময়সেটুকু আমার জন্মভূমি। পোস্টমর্টেম আমিও প্রথমমৃতদেহ দেখে ভেবেছিলামএ শরীরকোন দিন যায়নি মিছিলে মাথা উঁচু করেবিদ্রোহের আগুন ছিল না বুকেনিভে ছিল পাথরের মত বরফ শীতল!হয়তো, হিমঘরে জেগে ছিল বহুকালকারো আসার ছিল! খোলা চোখে তারগভীর ক্ষত!নীরব উষ্ণতার জন্য-এ শরীর কোন দিন ফেরারী হয়নি।

কবিতা: সুনজর । মো. গনি মিয়া বাবুল
একই মঞ্চে পঞ্চ কবিরস্বপ্ন ছবি সুনজর,ঢেউ খেলে যায় রক্ত অরুণকেউ দিবেন না কুনজর। রত্ন গর্ভা গাজীপুরেরগর্বে ভরা ইতিহাস,শাল গজারীতে ভরপুরভাওয়াল রাজার প্রীতিচাষ। সুনজরের সুনজরইদৃষ্টি হারা মনের,হতে পারে কৃষ্টি আলোস্বপ্ন জনগণের। দলাদলির উর্ধ্বে থেকেচলতে সবাই একসাথে,সকল দ্বন্দ দূরে ঠেলেকেউ যেও না সংঘাতে। কবি: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সংগঠকউপদেষ্টা, কবি সংসদ বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় কমিটিচেয়ারম্যান, লেখক উন্নয়ন কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় কমিটিঢাকা

আজ কবি তুহিন মাহামুদের জন্মদিন
আজ ৩১ ডিসেম্বর কবি ও প্রবাসী সাংবাদিক তুহিন মাহামুদের জন্মদিন। তিনি এই দিনে গোপালঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের মোল্লাদী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২টি। তার কবিতায় গ্রামবাংলা থেকে শুরু করে নগরায়ণ, নাগরিক জীবন, জীবনের জটিলতা, প্রেম, পরবাস, পরাবাস্তব প্রভৃতি প্রতিফলিত হয়।২০২০ একুশে বই মেলায় তুহিন মাহামুদের ‘অতৃপ্ত বাসনা’ কাব্য গ্রন্থটি পাঠক মহলে বেশ সমাদৃত হয়। উক্তি ও শ্লোক বিষয়ক তার দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘পরিবর্তন’ও পাঠকে মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে।ছাত্র জীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেন কবি তুহিন মাহামুদ। মাদারীপুর সাপ্তাহিক আঁড়িয়াল খাঁতে তার প্রথম কবিতা প্রকাশ হয়। মঞ্চ নাটকে কাজ করা, কলেজে দেয়াল পত্রিকা সম্পাদনা, আবৃত্তি সহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিভিন্ন শাখায় কাজ করেছেন। এরপর ১৯৯৭ সালে পাড়ি জমান ইউরোপে।বর্তমানে তিনি স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে স্বপরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। প্রবাসের মাটিতেও রয়েছে তার সামাজিক,রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক হিসেবে সুপরিচিত। সাংস্কৃতিক সংগঠন “শিকড়” ও বাংলাদেশের সর্ববৃহত সংগঠন “বাংলার মুখ” ইতালি শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।পাশাপাশি প্রবাসী সাংবাদিকদের সংগঠন “মিলান বাঙলা প্রেসক্লাব এর উপদেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়া ফোরাম (আইএমএফ) এর সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।লেখালেখি করেছেন অসংখ্য পত্রিকায়। ইতালি প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেছেন এনটিভি, বাংলা ভিশন টেলিভিশনে। মানবতার কল্যাণে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত লিখে যেতে চান তিনি।

রাজধানীতে ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সাংস্কৃতিক আন্দোলন কেন জরুরি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
‘সাংস্কৃতির আন্দোলন’ আয়োজিত ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সাংস্কৃতিক আন্দোলন কেন জরুরি’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। কবি সানাউল্লাহ সাগরের সঞ্চালনায় সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ‘সাংস্কৃতির আন্দোলন’ এর আহ্বায়ক কবি পলিয়ার ওয়াহিদ।তিনি বলেন, সাংস্কৃতির আন্দোলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে; সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন তথা ভারতের নন-পলিটিক্যাল শিল্প-সাহিত্যের হেজিমনি থেকে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে মুক্ত করা। এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক পরামর্শ ও গঠনমূলক সমালোচনার লক্ষ্যে কবি লেখক শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা। কারণ জুলাই স্পিরিটকে জারি রাখতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। বিগত সময়ে ঐক্যের অভাবে ও আওয়ামী জাহেলিয়াতের লেখকদের দালালির কারণেই ভারত বাংলাদেশকে নোংরাভাবে ব্যবহার করতে পেরেছে। ফলে শিল্প সাহিত্যের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফ্যাসিস্টের দালালদের অপসারণ করতে হবে।সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি ও গবেষক রাজা আবুল কালাম আজাদ।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কবি ও প্রাবন্ধিক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পলায়নের পর হাসিনা সৃষ্ট ফ্যাসিবাদের দালালী সাংস্কৃতিক শেকড় উপড়ে ফেলে বাংলাদেশি সংস্কৃতির নব-অভ্যুদয়ের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ জুলাইয়ের স্পিরিট হবে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার। এ জন্যকে ঐক্যবন্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।কবি ও কথাসাহিত্যিক আসমা সুলতানা শাপলা বলেন, মনোউপনিবেশ কীভাবে বহু বছর ধরে আমাদের ভেতরে ক্রিয়াশীল রয়ে গেছে আর তা ব্রিটিশ পরবর্তী কোলকাতা ধরে রেখে ভাষার ওপর মোড়লগিরি ফলিয়ে আজ অবধি পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশের সাহিত্যে। ফলে এই উপনিবেশের কারণে এখনো প্রমিত কলিকাতা রীতির পক্ষে ভারতীয় আগ্রাসনকে বাংলাদেশের কোনো কোনো লেখক এখনো বেগবান করার পক্ষে। তবে আশা কথা, এর বিরুদ্ধে অলরেডি বিপ্লবের সূচনা হয়েছে আরও ১৫/২০ বছর আগেই। আমরা এখন এসে তার ধারাটা ধরবার চেষ্টায় আছি।তিনি আরও বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থী বন্ধুদের পুলিশ তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে রাজপথে স্লোগানে সুর ধরতে গিয়ে আমি আমার মেয়ের চোখে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে রোশ ও জোশ দেখেছি সেটাই এই প্রজন্মের ভাষা। এরাই ৬ আগস্টের পরে মোহাম্মদপুর থেকে লালমাটিয়া হাতিরঝিল থেকে গুলশান অবধি গ্রাফিতি করেছে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। এই যে গতি ও শক্তি এটাই ধরে রাখতে হবে।কবি ও জাগ্রত ছাত্রশক্তির সমন্বয়ক রিদওয়ান নোমানী বলেন, খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। এবং গণশত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত বিচার করতে হবে। অন্যথায় মব সংস্কৃতি বন্ধ করা সম্ভব হবে না।অনুষ্ঠানে অতিথি আলোচক ছিলেন লেখক ও অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক শামস আরেফিন ও সংস্কৃতিবিষয়ক গবেষক নুরুন্নবী শান্ত। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জসীমউদ্দিন আপন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কবি শাইখ আল তমাল, শরীফ হাসান, শেখ সাদী ইমু, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ, সাংবাদিক জোবায়ের আহমেদ মুরাদ, জান্নাতুল মাওয়া, আজিম ভূঁইয়া, রাশেদ হাসান, মুনতাসিক মুকিত ও নাদিমসহ অনেকে।এছাড়া অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করেন কবি এনামূল হক পলাশ, মুসা আল হাফিজ, নকিব মুকশি, সাজ্জাদ সাঈফ, এহসান হাবীব, মাহফুজা অনন্যা, সাঈদ হাফিজ, মাসুম মুনওয়ার, বহ্নি কুমুস, রাজিয়া সুলতানা ঈষিতা, মঈন মুনতাসীর, লেখক দিদার মুহাম্মদ, কথা হাসনাত, মঈন মোশাররফ, দীপান্ত রায়হান, মাহদী আনাম, ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম, আবৃত্তিশিল্পী তরিকুল ফাহিম, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের আহমেদ ইসহাক ও ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ আল হাদী।

আজ মরমী কবি হাছন রাজার জন্মদিন
আজ মরমি কবি ও সংগীতসাধক হাসন রাজার ১৭০তম জন্মদিন। ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ ১২৬১ বঙ্গাব্দ) সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রী পরগণার তেঘরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই মহান শিল্পী। জমিদার পরিবারের সন্তান হলেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন মানবতাবাদী এক কবি, যার সুর ও সৃষ্টিকর্ম আজও মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে।হাসন রাজার জীবনের নানা দিকেই রয়েছে গভীর বৈচিত্র্য। জমিদার পরিবারের সন্তান হওয়ায় তিনি কৈশোরে বিশাল জমিদারির দায়িত্ব নেন। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, রামপাশা, লক্ষণশ্রী এবং সিলেটের একাংশ জুড়ে তার জমিদারি বিস্তৃত ছিল। কিন্তু একসময় তিনি বিত্ত-বৈভব আর ক্ষমতার মোহ ছেড়ে এক আধ্যাত্মিক জীবনের দিকে ধাবিত হন। তিনি বুঝতে পারেন, স্রষ্টার অনুসন্ধান বাহিরে নয়, নিজের ভেতরেই।হাসন রাজা তার গানের মাধ্যমে মানুষের মনের গভীরে স্থান করে নিয়েছেন। ‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম রে’, ‘লোকে বলে ঘরবাড়ি ভালানা আমার’, ‘গুড্ডি উড়াইল মোরে’—এমন অসংখ্য গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯০৭ সালে তার ২০৬টি গানের একটি সংকলন ‘হাসন উদাস’ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তার গান বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও হাসন রাজার গানের প্রশংসা করেছেন। ১৯২৫ সালে কলকাতায় এবং ১৯৩৩ সালে লন্ডনে প্রদত্ত বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ তার গান নিয়ে আলোচনা করেন। এটি প্রমাণ করে, হাসন রাজার সৃষ্টিকর্ম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সমাদৃত।একসময় বিত্তশালী এই জমিদার নিজের সম্পদ জনকল্যাণে দান করেন এবং স্রষ্টার সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। তার গানে যেমন আধ্যাত্মিক ভাব ফুটে ওঠে, তেমনি মানবতার প্রতি তার গভীর ভালোবাসা প্রতিফলিত হয়। সব ধর্ম ও জাতির বিভেদ অতিক্রম করে তিনি গেয়েছেন মাটি ও মানুষের গান।১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর এ মরমি কবি মৃত্যুবরণ করেন। তাকে সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রীতে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি নিজেই তার কবর প্রস্তুত করেছিলেন।কবির জন্মদিনে তার জন্মভিটায় প্রতিষ্ঠিত ‘হাসন রাজা মিউজিয়াম’ একটি পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মী, পর্যটক ও ভক্তরা। একইসঙ্গে তার গান নিয়ে হাছন উৎসব, গানের বিকৃতি রোধেও কার্যকর উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান।

কবিতা: হেমন্তে নবান্ন । মো. গনি মিয়া বাবুল
হিম কুয়াশায় ভোর বিহানেরবির চোখে ছানি,ঘাসের সাথে আবছা আলোকরছে কানা কানি। শীত আসে নাই তা জানি ভাইআমেজ তবু শীতের,হেমন্তের এই নবান্নতেকী আনন্দ গীতের! বঙ্গ মাতার ছাতার তলেসোনালী ধান হাসে,কিষাণ বধূ মনের পাতায়নতুন ছবি আঁকে। পল্লী মায়ের আঁচল বাঁধাকান্না হাসির গান,হৃদয় কাড়া মূর্চ্ছনাতেশহর মারে টান। কবি: চেয়ারম্যান, লেখক উন্নয়ন কেন্দ্র, ঢাকা

ইসলামি বইমেলা হেরার জ্যোতির পথ দেখায়
ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ইসলামি বইমেলা হেরার জ্যোতির পথ দেখায়।’ বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকালে ঢাকার বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বইমেলায় বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স প্রকাশিত তাহফীয কুরআনুল কারীম ও চারটি বইয়ের পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বই জ্ঞানের ধারক ও বাহক। বইয়ের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে জ্ঞান সঞ্চারিত হয়। বই পাঠের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হয়। মানুষ নতুন করে চিন্তা করতে শেখে। মানুষের নতুন ভাবনা দিগন্ত উন্মোচন করে বই।’ সঠিক বই নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ‘বই মানুষের মনোজাগতিক পরিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার। আর এই মনোজগত পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত বই। এক্ষেত্রে, ইসলামি বইগুলোর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচন করা যায়। ইসলামি বইগুলো মানুষকে সঠিক পথ দেখায়।’ উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘ইসলামি বই মেলা শুধুই বাণিজ্য নয়, এটা জ্ঞান চর্চার একটি কার্যকর মাধ্যম। ইসলামী গ্রন্থ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেবে ‘ তিনি আগামী দিনের ইসলামি বইমেলা আরো বৃহৎ পরিসরে আয়োজনের আশ্বাস দেন। এছাড়া, ইসলামি বইমেলা আয়োজনের জন্য লেখক ও অনুবাদক, প্রকাশকদেরকে উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানান। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ড. খালিদ বলেন, ‘বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স গেল দুই দশক ধরে জাতির ধর্মীয় জ্ঞানের খোরাক জোগাতে ভূমিকা রেখেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ইসলামী গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে সমাজে নৈতিকতা ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।’ তিনি বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের বইগুলো মুসলিম সমাজের আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত, এ অনুষ্ঠানে তাহফীয কুরআনুল কারীম ও মাসউদুল করিম রচিত অপারেশন হিকট্রাক্টস-১ ও ড. আহমদ আবদুল কাদের রচিত জাতি ভাষা সংস্কৃতি স্বাধীনতা, আধুনিক যুগে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ধর্ম ও ধর্ম নিরপেক্ষতা শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্সের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমদ আব্দুল কাদের, দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র সহ-সম্পাদক লিয়াকত আলী, দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহ-সম্পাদক বায়দুর রহমান খান নদভী বক্ত্যে দেন। উপস্থিত ছিলেন মুফতি আব্দুস সালাম, মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদী, আহমদ বদরুদ্দীন খান, মাসউদুল কাদির, হুমায়ুন আইয়ুব, জহির উদ্দিন বাবর, মুফতি ইমরানুল বারি সিরাজি, মুফতি আবদুল্লাহ তামিম। এর পূর্বে, উপদেষ্টা ঢাকার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের মিলনায়তনে জাতীয় শিশু-কিশোর মাসিক পত্রিকা নকীব আয়োজিত জাতীয় কুইজ প্রতিযোগিতার জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

কবি মাকিদ হায়দার আর নেই
সত্তরের দশকের অন্যতম কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মাকিদ হায়দারের ছেলে আসিফ হায়দার গণমাধ্যমকে কবির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর ১২টার পর বাবার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। তবে কবিকে কখন কোথায় দাফন করা হবে সে বিষয়টি এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি মাকিদ হায়দার অনেকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাবনার দোহারপাড়ায় কবি মাকিদ হায়দারের জন্ম। তার বাবা হাকিমউদ্দিন শেখ ও মা রহিমা খাতুন। সাত ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ষষ্ঠ। সাত ভাইয়ের বোনও ছিল সাতজন। মাকিদ হায়দারের ভাই রশীদ হায়দার, জিয়া হায়দার, দাউদ হায়দার, জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার সবাই সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত। মাকিদ হায়দারের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা (১৯৭৬), আপন আঁধারে একদিন (১৯৮৪), ও পার্থ ও প্রতিম (২০০৭), কফিনের লোকটি (২০১১), যে আমাকে দুঃখ দিলো (২০১২), প্রিয় রোকানালী (২০১৩), মুমুর সাথে সারা দুপুর (২০১৪)। এছাড়াও তার একটি গল্পগ্রন্থ ও একটি প্রবন্ধের বই রয়েছে।

সাহিত্য সম্পাদকের ভূমিকা : শংকর ব্রহ্ম
সম্পাদকের প্রধান কাজ হল, নিরপেক্ষ ভাবে লেখা বিচার করা। লেখকের নাম দেখে নয়, লেখার মান দেখে তা বিচার করা। অবশ্য নিরপেক্ষতা মানে এই নয় যে তার ব্যক্তি ও সম্পাদক সত্তার আলাদা কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। অবশ্যই তা থাকবে। তার নিজস্ব রুচিবোধ, বিচারবোধ থাকবে। যেহেতু তিনি সাহিত্য সম্পাদক, বলা বাহুল্য তার সাহিত্য সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে। জমা পড়া অনেক লেখার মধ্য থেকে তাকে জহুরির মতো সাহিত্যগুণ সম্পন্ন হীরকখন্ডটি (লেখাটি) বাছাই করে নিতে হবে। (এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে , ‘কবিতা’ পত্রিকার সম্পাদক কবি বুদ্ধদেব বসুর কথা। তিনিই প্রথম কবি হিসেবে আবিষ্কার করেছিলেন জীবনানন্দ দাশকে। তার আগে কেউ জীবনানন্দ দাশকে ‘কবি জীবনানন্দ’ হিসেবে তেমন ভাবে চিনতেন না। আর যারা চিনতেন, তারাও তাকে কবি হিসাবে মেনে নিতে পারতেন না। সত্যি কথা বলতে গেলে, তার লেখাগুলো যে কবিতা তা অনেকেই সেই সময় স্বীকার করতে চাননি এবং তা সমসাময়িক কবিদের চেয়ে তিনি যে শুধু ভিন্ন নন, সময়ের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে, এককথায় সমকালের কবিদের মন ও মানসিকতার তুলনায় ভিন্ন ধারার, এ’কথা ওই সমসাময়িক কবিরা অনেকেই বুঝতেই পারেননি। তাই তখন তার লেখা সমালোচকদের হাত থেকে নিস্তার পায়নি। সজনীকান্ত দাস তাঁর কবিতা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন বহুবার। উপহাস করেছেন তার কবিতা নিয়ে । সভা-সমিতিতে তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা মস্করা করেছেন। রবীন্দ্রনাথও তার কবিতার আধুনিকা বুঝতে না পেরে, তাকে শুধুমাত্র ‘চিত্রকাব্য’ আখ্যা দিয়েম এড়িয়ে গেছেন।) আমার দেখা সম্পাদক হিসাবে সাগরময় ঘোষের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি সমরেশ বসু, বিমল কর, রমাপদ চৌধুরী, সুনীল গাঙ্গুলী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, জয় গোস্বামী প্রমুখ প্রতিধাধর লেখদের বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় তুলে এনেছেন। যথার্থ একজন সম্পাদক এক নজর দেখেই বুঝে নেন কোন লেখাটির মধ্যে সাহিত্যগুণ আছে, কোনটিতে নেই । কিন্তু সমস্যা হলো, — সাহিত্য বিষয়টি এমন একটি ভাবের বিষয়-বস্তু যে, একজন সম্পাদকের কোন লেখা ভাল না লাগলেও অন্য কোন সম্পাদকের তা সহজেই ভাল লেগে যেতে পারে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই । একই লেখা নিয়ে বিভিন্ন সম্পাদকের মধ্যে তাই ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকতে পারে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে, একজন কবি বা লেখকের জীবনে সম্পাদকের ভূমিকা অসীম, এ কথা অনস্বীকার্য। লেখক ও সম্পাদকের সম্পর্ক একে অন্যের পরিপূরক। কোন হীরকখন্ডের যেমন বাইরে থেকে ঔজ্জ্বল্য ধার নিতে হয় না, তবে সুপরিকল্পিতভাবে হীরকখন্ডটি কাটিং করলে শুধু ঔজ্জ্বল্যই বাড়ে না, সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে ওঠে তার সৌন্দর্যের দ্যুতি । তেমনি একজন সম্পাদক জহুরির মতো নতুন প্রতিভাবানদের নিজেরই তাগিদে তুলে নিয়ে এসে তাদের দ্যুতি বাড়িয়ে তুলতে পারেন। তিনি সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে (পাঠকের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে) অপূর্ব এক মধুর স্বাদ অনুভব করেন হৃদয়ে, একথা অনস্বীকার্য। অজ্ঞাতপ্রায় হারিয়ে থাকা লেখকদের পাঠকদের সামনে এনে হাজির করেন তিনি। এখন প্রশ্ন —সাহিত্য সম্পাদকের করণীয় কাজটা কি? এক কথায় বলতে গেলে, নিরপেক্ষভাবে লেখা বিচার করা। লেখকের নাম দেখে নয়, লেখার মান দেখে লেখা বিচার করা উচিৎ তার। সাহিত্যের মান বিচার করতে গেলে নিজের অনুভূতি দিয়ে তা বিচার করতে হয়। নিজের জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে তা পরীক্ষা করতে হয়। তাই, যথেষ্ট পরিমাণে তার সাহিত্য সম্পর্কে জ্ঞান বুদ্ধি থাকতে হয়। ক’জন সম্পাদক আর সেই পরিশ্রমটুকু করতে রাজী হন? নামী লেখদের লেখা প্রকাশ করতেই তারা বেশি আগ্রহ বোধ করেন। কারণ, নামী লেখকরা কি লিখছেন তা অনেকে না জানলেও, তিনি যে একজন নামী লেখক তা অনেকেই জানেন। তাই তাদের লেখা প্রকাশ করায় অনেক ঝুঁকি কম। তাছাড়া মানসিক ভাবে সাহিত্যের মান বিচার করার পরিশ্রমটুকু করার প্রয়োজন হয় না। তবে সম্পাদকের দায়িত্ব অনেক কমে যায়। সম্পাদক এ রকম ফাঁকিবাজ হলে, সেই পত্রিকার মান আর কত ভাল হতে পারে, তা তো সহজেই বোঝাই যায়। লেখক যেভাবে লেখা পাঠান, লেখা হুবহু সেভাবেই প্রকাশ করা উচিত সম্পাদকের। তবে এটা মনে রাখতে হবে, সম্পাদকের মতো লেখকও একজন সাধারণ মানুষ। তাই কোনও সময় বানান বা বাক্যগত কোনও ত্রুটি থেকে যেতেই পারে, সে ক্ষেত্রে সম্পাদক নিজের প্রয়োজন মতো ত্রুটি সংশোধন করে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করবেন। এবার কথা হলো — তিনি লেখকের সঙ্গে আলোচনা করে সেটা করবেন, নাকি তার অনুমতি ছাড়াই করবেন? লেখকের সঙ্গে আলোচনা করে কাজটি করতে পারলেই ভাল হয়। লেখকের অনুমতি ছাড়া সম্পাদক নিজের মতো করে লেখকের লেখায় কলম চালালে, তার লেখার মৌলিকতা যেমন নষ্ট হতে পারে , তারচেয়েও বেশি কষ্টদায়ক হয় , অনেক সময় লেখকের পক্ষে এই পরিবর্তন মেনে নেওয়া। হয়তো তিনি বিষয়টি নিয়ে অন্যরকম কিছু ভেবে লিখেছিলেন লেখাট তার। সে ক্ষেত্রে সম্পাদকে কোনও লেখায় কলম চালানোর আগে লেখকের সঙ্গে একবার আলোচনা করে নিতে পারলে ভাল হয়। সেটাই হওয়া বঞ্ছনীয় মনেহয়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যায়, ভিক্টর গোলাঞ্জ বলেছেন, ‘সম্পাদনা তুলনামূলক নতুন একটা বিষয় আর এটা শুধু গদ্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’ এরপর তিনি আরও লিখেছেন, ‘একজন গীতি-পরিচালক যেমন সম্পাদিত গীতির কথা চিন্তা করে গীতিকারকে দিয়ে গান লিখিয়ে নেন, কিংবা এমন একজন চিত্রব্যবসায়ী যিনি সম্পাদনা করে চিত্রকর দিয়ে আঁকিয়ে নিলেন, তিন চিত্রকরের কথা ভাবেন না ! … আমি যদি লেখক হতাম, আমি আমার লেখায় অন্যকে হাত দিতে দেওয়ার চেয়ে মরে যাওয়া শ্রেয় মনে করতাম।’ ভিক্টর গোলাঞ্জ একেবারে ভুল বলেননি। তিনি সম্পাদনার বিপক্ষে না, তবে অতিসম্পাদনার পক্ষেও নন। তিনি সুন্দরভাবে সম্পাদনা করার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সম্পাদনা কখনও কখনও শিল্পকর্মের শৈল্পিক গুণকে নষ্ট করে দেয়।’ তবে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিখ্যাত ইংরেজ কবি টি এস এলিয়ট তাঁর বিখ্যাত কবিতা ‘দ্য ওয়েস্টল্যান্ড’ লেখার পর সম্পাদনার জন্য অগ্রজ কবি, সমালোচক ও সম্পাদক এজরা পাউন্ডের কাছে পাঠিয়েছিলেন। এজরা পাউন্ড কবিতাটির একটা বড় অংশ ফেলে দিয়েছিলেন। পরে এলিয়ট মনঃক্ষুণ্ন হলেও এই সম্পাদিত কবিতাটি বিশ্বপাঠক ও নোবেল প্রাইজ কমিটির নজর কেড়েছিল, এমনকি ১৯৪৮ সালে এই কবিতা রচনার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান এবং এখনও এটি আধুনিককালের অন্যতম কবিতা হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই কবিতা থেকে শুরু করে সব ধরনের লেখাই সম্পাদিত হলে সেটা বস্তুনিষ্ঠ হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে পাঠযোগ্য (কামরুল হাসান শায়ক)। প্রকৃত সাহিত্য সম্পাদকের উচিৎ নবীনদের লেখকদের প্রকাশের আলোয় নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করা। প্রকৃত প্রতিভাকে প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া তার প্রথমিক কর্তব্য। স্বল্প সাহিত্যে-জ্ঞানের সঙ্গে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি সম্পন্ন সম্পাদকরা সাহিত্যচর্চার নামে নিজস্ব দল গঠন করেন। জোর গলায় চিৎকার করে বলেন, ‘নতুনদের সাহিত্যের আঙ্গিনায় তুলে এনে নতুন ভাবনার ঝড় বইয়ে দেবেন’। সাহিত্যে নতুন জোয়ার আনবেন বলে দাবিও করেন। প্রথাগতঃ পদ্ধতির বাইরে গিয়ে নবীনদের নতুন ভাবনাকে জায়গা করে দেবেন। কিন্তু সূচিপত্র দেখে বোঝা যায় (সূচিপত্র জানিয়ে দেয়) পর্দার ভেতরে থাকা গোপন রহস্য। নতুনদের সুযোগ নয়, বরং তাদের সুযোগ দেওয়ার নাম করে, নিজের স্বার্থসিদ্ধি করাই এই শ্রেণীর সাহিত্য সম্পাদকের গোপন উদ্দেশ্য। তারা নতুন লেখকদের মাথা মুড়িয়ে, তাদের ব্যবসাটা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলেন। নতুন লেখকদের আখরে কিছুই লাভ হয় না। শেষপর্যন্ত তারা প্রতারিত হন, এইসব সম্পাদকের পাল্লায় পড়ে। সব খারাপের মধ্যেও কিছু ভালো থাকে। নতুন কিছু মুখের সঙ্গে নতুন ধ্যানধারণা আর একইসঙ্গে উঠে আসে বর্তমান প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি, নতুনদের সৃষ্টিতে। আবার নিজেকে কবি-লেখক নামে পরিচিত করার জন্য অনেকেই সাহিত্য পত্রিকা শুরু করেন। প্রথম সারিতে বড় বড় নামিদামী কবি-লেখকের লেখা রেখে বাকিটা নিজেদের লেখা প্রকাশ করেন। অনেক সম্পাদক আবার সম্পাদনার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশকও হয়ে ওঠেন। যাদের কবিতা তার পত্রিকায় ছাপেন, তাদের ভুল বুঝিয়ে ঘোল খাইয়ে বই বের করিয়ে নেন বাজারের তুলনায় দ্বিগুণ মূল্যে। এই ধরনের ব্যক্তিরা সম্পাদক নামের কলঙ্ক। এদের সম্পাদক নামে অভিহিত করলে, প্রকৃত সম্পাদকদের অপমান করা হয়, যারা আজও নিজেদের পকেট মানি বাঁচিয়ে, তা খরচ করে পত্রিকা বের করে থাকন একান্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। নিজেদের অমূল্য সময় ব্যয় করেন পত্রিকা প্রকাশ করার কাজে। এমন সাহিত্যগুণসম্পন্ন যোগ্য ব্যক্তির অভাব নেই। আর এরা আছে বলেই এখনও বাংলা সাহিত্য সংকীর্ণ পরিধিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েও, শেষ হয়ে যায়নি। আশার আলো দেখাবে সেই সব সম্পাদকেরাই ভবিষ্যতে। তারাই সাহিত্যের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে। লেখক পরিচিতি শংকর ব্রহ্ম – ১৯৫১ সালের ২রা মার্চ, কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৭০ সাল থেকে লেখা-লেখি শুরু। প্রকাশিত কবিতার সংখ্যা শ’পাঁচেক-এর বেশী। প্রায় শতাধিক পত্রিকায় লেখেন। যেমন “দৈনিক বাংলা স্টেটসম্যান”, “পুরশ্রী”, “প্রসাদ”, “ঘরোয়া”, “বিকল্প বার্তা” (শারদীয়া সংখ্যা – ১৪২৮ এবং ১৪২৯), শব্দ সাঁকো, সয়ংসিদ্ধা, অমেয়, দৈনিক দেশজগত, বঙ্গীয় সাহিত্য দর্পণ, শব্দনগর, উদ্ভাস, শব্দ লেখা, নীলকমল, বোধগম্য, অচিন পাখি, স্বরধ্বনি পত্রিকা, সৃজাম্যহম্ , খেয়ালী খাম, কাব্যতরী, কাব্যপট, ইলশে গুঁড়ি, সাময়িকি (নরওয়ে থেকে প্রকাশিত),আশ্রম (অটোয়া থেকে প্রকাশিত) প্রভৃতি। এ’ছাড়াও লিখেছেন সমরেশ বসু সম্পাদিত “মহানগর”, “শিবনারায়ণ রায়” সম্পাদিত “জ্ঞিসাসা”, কিরণ শংকর সেনগুপ্ত সম্পাদিত “সাহিত্য চিন্তা”, পবিত্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত “কবিপত্র” দীপেন রায় সম্পাদিত “সীমান্ত সাহিত্য” প্রভৃতি পত্রিকায়। তিনি বহু পুরস্কার পেয়েছেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ – “তোমাকে যে দুঃখ দেয়”, “স্মৃতি তুমি আমাকে ফেরাও”, “যাব বলে এখানে আসিনি”, “আবার বছর কুড়ি পরে”। এ’ছাড়াও কবির আরও দশটি “ই-বুক” প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকাওয়াচ/টিআর

লেখক হিসেবে সম্বর্ধিত হলেন আসাদুজ্জামান সম্রাট
আমাদের নতুন সময়ের নগর সম্পাদক, লেখক ও গবেষক আসাদুজ্জামান সম্রাট লেখক হিসেবে আবারও সম্বর্ধিত হলেন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তাকেসহ ৩২ জন লেখক ও সাংবাদিককে এ সম্বর্ধনা দেয়া হয়। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আবিস্কার থেকে যেসব সাংবাদিক ও লেখকের বই প্রকাশিত হয়েছে তাদের সম্বর্ধনা দেয়া হয়। সম্বর্ধিত লেখক ও সাংবাদিকদের উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয় আবিষ্কারের পক্ষ থেকে। আসাদুজ্জামান সম্রাটের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান। আবিষ্কারের কর্ণধার এস ডি দেলোয়ার হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডেইলি লাইফের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভুইয়া, কবি ও শিল্পী অপর্ণা খান প্রমুখ। আসাদুজ্জামান সম্রাট ছাড়াও আরো সম্বর্ধিত হলেন, কবি আব্দুল মান্নান, রফিক হাসান, মুহাম্মদ আকবর, কুদরত ই খোদা, দীপক কুমার আচার্য, পুষ্পিতা আচার্য প্রমুখ। ঢাকাওয়াচ/স