
সুদানের উত্তর করদোফান প্রদেশে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) পরিচালিত ড্রোন হামলায় অন্তত ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, সোমবার প্রাদেশিক রাজধানী আল-ওবেইদের পূর্বাঞ্চলীয় আল-লুয়াইব গ্রামে এই হামলা চালানো হয়। স্থানীয় এক কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানান, ড্রোন হামলাটি সরাসরি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল।
প্রাদেশিক প্রশাসনের বরাতে জানা গেছে, একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার তাঁবুকে নিশানা করে ড্রোনগুলো আঘাত হানে, যেখানে বহু মানুষ একত্রিত ছিলেন। এতে নারী, শিশু ও প্রবীণসহ অসংখ্য বেসামরিক মানুষ হতাহত হন। সরকার এই ঘটনাকে “আরএসএফের বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে আরেকটি নৃশংস অপরাধ” হিসেবে অভিহিত করেছে।
সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, আরএসএফকে অবিলম্বে “সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা করা হোক। তাদের অভিযোগ, আরএসএফ নিয়মিতভাবে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।
এর আগে আরএসএফ ঘোষণা দিয়েছিল, তারা অচিরেই আল-ওবেইদ শহরে অভিযান শুরু করবে এবং স্থানীয়দের নিরাপদ করিডোর ব্যবহার করে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, অক্টোবরের শেষ দিক থেকে উত্তর ও দক্ষিণ করদোফান অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়ায় অন্তত ৩৮ হাজার মানুষ নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
সম্প্রতি আরএসএফ উত্তর করদোফানের বারা শহর দখল করে নিয়েছে। তবে তারা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ উত্তর দারফুর প্রদেশের রাজধানী আল-ফাশের শহরও দখল করে নেয়, যেখানে পরে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের সংঘাত সুদানের ভৌগোলিক বিভাজনকে আরও গভীর করতে পারে।
২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে দেশটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত। এই সংঘাতের অবসানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একাধিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চললেও এখন পর্যন্ত শান্তির কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি।