একদিনে ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪৫৮

রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি মৃতের তালিকাও দীর্ঘ হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুইজনের প্রাণহানি হয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ে এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৫৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৪৩৮ ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে গত অক্টোবর মাসেই ১৩৫ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা বেশী। এছাড়া চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৮২৬ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশী।শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ১৮১ জন ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে (সিটি করপোরেশন বাদে) খুলনা বিভাগে ৬৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬২ জন, ঢাকা বিভাগে ৫৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ জন, বরিশাল বিভাগে ২০ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন ও সিলেট বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৭০৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

দেশে ডেঙ্গু প্রাণ নিল আরো নয়জনের

সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরো এক হাজার ২১৪ জন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ৪৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এই সময়ে মশাবাহিত রোগটি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ হাজার ৩৬৮ জন।’ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৮২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেষনের বাইরে) ৪৩০, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৯৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৪১, খুলনা বিভাগে ১১৭ জন রয়েছেন। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগে ৩৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯১ জন, রংপুর বিভাগে ১৪ জন এবং সিলেট বিভাগে ১১ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে শুরু হয় ২০০০ সালে। ২০০০-২০২২ সাল পর্যন্ত দুই লাখ ৪৪ হাজার ২৪৬ জন এ রোগে আক্রান্ত হন। এ সময় মারা যান ৮৫৩ জন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গেল বছর। ওই বছর তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের অতিবৃষ্টি ডেঙ্গু বাড়ার কারণ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এডিসবিরোধী অভিযান না থাকাও বড় সংকট।

দেশে ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষই নির্যাতনের শিকার

সমাজের প্রায় ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ম্যানস রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএমআরএফ)। সংস্থাটির পরিসংখ্যার অনুযায়ী, বিগত নয় বছরে পুরো দেশে চার হাজার ২৬৮ জন ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় দুই হাজার ৩২৮ জন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তবে, প্রকৃত পুরুষ নির্যাতনের সংখ্যা আরো বহু বেশি। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উপলক্ষে বিএমআরএফের চেয়ারম্যান শেখ খায়রুল আলম সোহেল এ তথ্য জানান। বিএমআরএফের তথ্যানুযায়ী, পুরো বাংলাদেশে চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত এক হাজার ৬৭ জন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পূর্বে, ২০২৩ সালে ১০৪৯ জন, ২০২২ সালে ৭৯২ জন, ২০২১ সালে ৪৫০ জন, ২০২০ সালে ৩৩০ জন, ২০১৯ সালে ২৪০ জন, ২০১৮ সালে ১৭০ জন, ২০১৭ সালে ১২০ জন ও ২০১৬ সালে ৫০ জন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ হিসেবে গেল নয় বছরে চার হাজার ২৬৮ জন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তবে, প্রকৃত সংখ্যা আরো বহু বেশি বলে দাবি করেছে সংস্থাটি। বিএমআরএফের তথ্যানুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ জেলায় চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৬৪৭ জন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পূর্বে, ২০২৩ সালে ৬৩২ জন, ২০২২ সালে ৩৯৭ জন, ২০২১ সালে ২১২ জন, ২০২০ সালে ১৫৩ জন, ২০১৯ সালে ১১৭ জন, ২০১৮ সালে ৮২ জন, ২০১৭ সালে ৬৫ জন ও ২০১৬ সালে ২৩ জন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ হিসাব অনুযায়ী গেল নয় বছরে দুই হাজার ৩২৮ জন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শেখ খায়রুল আলম সোহেল বলেন, ‘পুরুষের অধিকার ও নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের সংগঠনটি কাজ করছে। আমাদের সংগঠনের জরিপে দেখা গেছে, পুরো দেশে গেল কয়েক বছর গড়ে প্রায় এক হাজারের অধিক ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় প্রায় ৬০০-৭০০ জনের অধিক পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়। বিবাহিত পুরুষরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। পুরো দেশে প্রায় ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তবে, বাস্তবে নির্যাতনের শিকার পুরুষের সংখ্যা আরো কয়েক গুণ বেশি। লোকলজ্জা ও সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার ভয়ে বহু পুরুষ এসব নিয়ে কথা বলতে চান না। এসব ঘটনায় নির্যাতিতদের আইনি সহায়তা দেওয়াসহ নির্যাতন প্রতিরোধে আমরা কাজ করে আসছি।’ আইনের অপব্যবহারের ফলে পুরুষ নির্যাতন বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইন থাকলেও পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধ আইন নেই। ফলে, নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। এতে বহু পুরুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, মিথ্যা মামলার মধ্য দিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে। বহু পুরুষ এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। কিন্তু, লোকলজ্জা ও সম্মান হানির ভয়ে অনেকে তা বলতে পারছে না। এমন নানা অভিযোগ নিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের সংগঠনের কাছে অনেকে আসছে। তবে, তারা প্রকাশ্যে এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হন না।’

এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হচ্ছে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, `মানবদেহে ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে বহু সময় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হচ্ছে।’ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে ‘বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) জনসচেতনতা সপ্তাহ-২০২৪’-উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেমিনারে ফরিদা আখতার আরো বলেন, ‘তার চেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হল আমরা যে এন্টিবায়োটিক খাচ্ছি, তা ফের পরিবেশে ফিরে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে নিয়ে কেউ ভাবছে না, এ যে ভাববার বিষয় তা আমাদের ঠিক করতে হবে।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘ওয়ান হেলথ বলতে যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয়, তাহলে শুধু তাদের ব্যাপারে নিয়েই কাজ করবে। ওয়ান+ওয়ান=ওয়ান হবে, না ওয়ান বলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অথবা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বুঝাবে, তা ভেবে দেখা উচিৎ।’ তিনি বলেন, ‘এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপারে অত্যন্ত দেরি হয়েছে, এখনই কাজ করার সময়-প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে বোঝার ক্ষেত্রে এখনো ঘাটতি রয়েছে। এখন সময় এসেছে দায়িত্ব নেয়ার, কোন কাজ কোথায় করব তা জেনে বুঝে করা অতি জরুরি।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে এর অর্থ এই নয় যে, স্বাস্থ্যের দিক থেকে আমরা বহু উন্নত। আমরা বেঁচে আছি তবে ভালভাবে বাঁচছি না। সুস্থ্যতার জন্য ওষুধের ওপর নির্ভর নয় বরং ওষুধ ছাড়া আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হবে। এখনো বহু মানুষ অসুখ হলেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে, এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হওয়ার ফলে মানুষ তথা রাষ্ট্রের ব্যয় বাড়ছে আর মানুষ অসুস্থ থেকে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।’ সেমিনারে অন্য বক্তারা বলেন, ‘প্রেসক্রিপশনের সময় সঠিক এন্টিবায়োটিক নির্বাচন, মাত্রা, ব্যবহার ও প্রয়োগবিধি নিশ্চিত করতে হবে। জীবাণু সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে এন্টিবায়োটিক নির্বাচন করা ও সম্ভব হলে এন্টিবায়োটিকের বিকল্প ব্যবহার করতে হবে।’ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব এটিএম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাকিলা ফারুক, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আবদুর রউফ, ফ্লেমিং ফান্ড গ্রান্ট বাংলাদেশের টিম লিডার প্রফেসর শাহ্ মনির হোসেন, সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং ফর ওয়ান হেলথের চিফ অব পার্টি অধ্যাপক নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশে নিযুক্ত খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কান্ট্রি টিম লিডার ইরিখ ব্রুম। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডাক্তার মো. বয়জার রহমান। প্রাণির স্বাস্থ্য খাতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ ক্ষমতার তথ্য উপস্থাপনা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডাক্তার মো. শাহীনুর ইসলাম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডাক্তার নূর আসাদ উজ জামান।

ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

জাল-জালিয়াতি, প্রতারণা ও ব্যবসায়িক লেনদেনে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজাসহ চার জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) শুনানি শেষে এটি জারি করেন ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী পারভেজ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন ইউনাইটেড হাসপাতালের এফসিএ মোস্তাক আহমেদ, সাব্বির আহমেদ ও কোম্পানি সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। গ্রেফাতর সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এর পূর্বে, গেল ১৭ নভেম্বর মামলাটির তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পেয়ে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জোবায়ের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। পারভেজ আহমেদ বলেন, `পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।’ মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ফরিদুর রহমান খান দীর্ঘ ১৫ বছর ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। করোনাকালীন ২০২০ সালের মে মাসে হাসান মাহমুদ রাজারসহ মামলার অন্য তিন আসামি ফরিদুর রহমানকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেন। এরপর প্রতিষ্ঠানটিতে ফরিদুর রহমানের থাকা এক লাখ ২০ হাজার ১৬৫টি শেয়ার এজাহারনামীয় আসামিরা দখল করেন। সেসময় প্রতিটি শেয়ারের জন্য এক হাজার টাকা হিসেবে মোট ১২ কোটি এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু, আসামিরা কোন টাকা দেননি। এরপর থেকে ফরিদুর রহমান খানের শেয়ারের পাওনার বিপরীতে লভ্যাংশ না দিয়ে প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এছাড়া, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ফরিদুর রহমান খানকে অবহিত না করে ইউনাইটেড হাসপাতালের পরিচালক পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় গেল ২৮ আগস্ট ইউনাইটেড হাসপাতালের প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফরিদুর রহমান খান ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান রাজাসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে কমিশন গঠন করল সরকার

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক একে আজাদকে প্রধান করে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে ১২ জন বিশিষ্ট কমিশন গঠন করেছে সরকার। মন্ত্রি পরিষদ বিভাগ রোববার (১৭ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিভ অধিদপ্তরের অধ্যাপক ডাক্তার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার লিয়াকত আলী, গাইনোকোলজিস্ট অধ্যাপক ডাক্তার সায়েরা আক্তার, পেডিয়াট্রিক এন্ড নিউরোসায়েন্স বিভাগের নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডাক্তার নায়লা জামান খান, নাবেক সচিব এমএম রেজা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাক্তন আঞ্চলিক উপদেষ্টা ডাক্তার মোজাহেরুল হক, আইসিডিডিআরবির আজহারুল ইসলাম, স্কয়ার হাসপাতালের স্কয়ার ক্যানসার সেন্টারের অধ্যাপক ডাক্তার সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন, গ্রিন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চের অধ্যাপক ডাক্তার সৈয়দ আতিকুল হক, আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ডাক্তার আহম্মেদ এহসানুর রহমান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফ। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, কমিশন দ্রুত কার্যক্রম শুরু করবে ও সংশ্লিষ্ট সব মতামত বিবেচনা করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে। কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদমর্যাদা ও বেতন পাবেন এবং সুবিধা ভোগ করবেন। তবে, তাদের কেউ যদি সুবিধা না নিয়ে স্বেচ্ছায় কাজ করতে চান, তবে তাকে অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। গেল ১৭ অক্টোবর স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার ও নারী বিষয়ক চারটি নয়া সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয় সরকার।

ডা. একে আজাদ খানকে প্রধান করে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খানকে প্রধান করে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন এবং কমিশনের কার্যপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে।সোমবার (১৮ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী, সহজলভ্য ও সার্বজনীন করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবের লক্ষ্যে 'স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন' গঠনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার অনুশাসন আছে বলে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান। প্রধান উপদেষ্টার অনুশাসন অনুযায়ী নিম্নরূপভাবে 'স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন' গঠনপূর্বক প্রজ্ঞাপন জারি করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রধান বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতিঅধ্যাপক একে আজাদ খান অন্যান্য সদস্যরা হলেন: ১) জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিক অধিদপ্তরের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন। ২) পথিকৃৎ ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী। ৩) গাইনোকলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার। ৪) শিশু স্নায়ুতন্ত্র বিভাগ অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান। ৫) সাবেক সচিব এম এম রেজা। ৬) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল) অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক। ৭) আইসিডিডিআর, বির ডা. আজহারুল ইসলাম। ৮) স্কয়ার হাসপাতালের স্কয়ার ক্যান্সার সেন্টারের প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো: আকরাম হোসেন ৯) গ্রিন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার এন্ড রিসার্চের চিফ কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. সৈয়দ আতিকুল হক। ১০) আইসিডিডিআর, বির শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানি ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান। ১১) ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফ। এতে আরও বলা হয়, কমিশন অবিলম্বে কার্যক্রম শুরু করবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল মতামত বিবেচনা করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।

শীতে যে জন্য খাবেন খেজুরের গুড়

শীত প্রায় এসে গেছে। সেই সাথে আসছে খেজুর গুড়ের মৌসুমও। কম বেশি সকলের কাছেই এ গুড় বহু পছন্দের। বিভিন্ন ধরনের পিঠা কিংবা মিষ্টিজাতীয় কোন খাদ্য বানাতে এ গুড়ের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু, আপনি কি জানেন, শীতের এ গুড় নিয়মিত এক চামচ খেলে দেহে কেমন পরিবর্তন আসে? পুষ্টিবিদরা বলছেন, ‘চিনির চেয়ে গুড় খাওয়া বহু বেশি স্বাস্থ্যকর। আর বিভিন্ন ধরনের গুড়ের মধ্যে খেজুর গুড়ের পুষ্টি বহু বেশিই বলা যায়।খেজুর গুড়ে রয়েছে ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়ামজাতীয় খনিজ উপাদান। যারা নিয়মিত এক চামচ গুড় খান, তারা পাবেন খেজুর গুড়ের বিভিন্ন উপকারিতা।খেজুর গুড় ওজন কমাতে দারুণ কাজ করে। যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত ডায়েটে রাখতে পারেন এক চামচ খেজুর গুড়।খেজুরের গুড় কোল্ড অ্যালার্জি থেকে অনেকটাই আপনাকে দূরে রাখে। রক্তাল্পতায় ভুগলেও খেতে পারেন খেজুর গুড়। কারণ, এই গুড় শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও খেতে পারেন এই গুড়।কাবোহাইড্রেট, আয়রন কিংবা গ্লুকোজের ঘাটতি হলেও খেজুরের গুড় দেহে ভাল কাজ করে। গুড়ে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কাজে লাগাতে পারেন সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও। কেন না, এই গুড় ত্বক সতেজ রাখে, পাশাপাশি ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমায়।শীতে দেহ গরম রাখতে কিংবা সর্দি-কাশি ও জ্বরের মত রোগ থেকেও নিজেকে দূরে রাখতে খেতে পারেন খেজুরের গুড়।তবে, খেয়াল রাখবেন, একমাত্র খাটি গুড় থেকেই এসব উপকারিতা আপনি পাবেন। ভেজাল গুড় খেলে দেহে উপকারিতার চেয়ে অপকারিতাই বেশি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডেঙ্গুর ভয়ানক রূপ, মৃত্যু ৪০০ ছাড়াল

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একইসাথে এই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে ৪০৭ জনের মৃত্যু হল। শনিবার (১৬ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর ফলে চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০৭ জনে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৮ হাজার ৫৯৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৮৪ জন।এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৩৮ জন, বরিশাল বিভাগে ১১৯ জন, চট্টগ্রামে ৬৫ জন, খুলনায় ৭৪ জন, ময়মনসিংহে ৪৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬১ জন, রংপুর বিভাগে পাঁচজন ও সিলেট বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৮ হাজার ৫৯৫ জন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের নতুন আরএস হলেন ডা.শাওন

রাজধানীতে অবস্থিত জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের নতুন আবাসিক চিকিৎসক হলেন (আরএস) ডা. শাওন বিন রহমান। তিনি বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই দায়িত্ব গ্রহণ করে রোগীদের চিকিৎসা কাজে যুক্ত হয়েছেন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকালে ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট দেশের বৃহত্তম প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে এ হাসপাতাল।তিনি আরও বলেন, আমি আবাসিক সার্জনের ( জরুরি বিভাগ) দায়িত্ব পেয়েছি কিছুদিন হলো।আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে যাবো জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের নিরাপদ চিকিৎসা সেবার জন্য। শীত চলে এসেছে, এ সময়টাতে রোগীর চাপ অনেক বেশি থাকে,সব চিকিৎসকের হিমশিম খেতে হয় ঠিকই কিন্তু কারো আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। রোগীদের জন্য পরামর্শ থাকবে এ সময়ে আগুন পোহানো বা গরম পানি, চা, দুধ বহনে সতর্কতা অবলম্বন করার। আর সাংবাদিক ভাইদের প্রতি আহ্বান থাকবে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে যেন আমরা সবাই মিলে ভালো কিছু করতে পারি।

একদিনে ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৭৪

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় সারা দেশে ৪৭৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) দুজন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৩৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭৪ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২০ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৬ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিনজন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩১ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর ৭৩ হাজার ১২৬ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৭৭ হাজার ৬০১ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক এক শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক নয় শতাংশ নারী রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩৯৯ জন। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

ক্যান্সার হাসপাতালের নতুন পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবীর

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডা. মো. জাহাঙ্গীর কবীর। এর আগে তিনি হাসপাতালটির সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের (পার-১) উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের কর্মকর্তা জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর কবীরকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পদে পদায়ন করা হলো। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তিনি বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় পরবর্তী কর্মদিবসে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি মর্মে গণ্য হবেন।

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২২১ জন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়েছে, নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৯৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৩২৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২১৩ জন এবং দক্ষিণ সিটিতে ১৭১ জন, খুলনা বিভাগে ১৬০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৫ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন এবং রংপুর বিভাগে ২৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।এদিকে, গত একদিনে সারা দেশে ১১০১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭১ হাজার ৫৫৪ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৭৬ হাজার ২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩৭২ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।

গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গিয়ে তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে যারা এখনও চিকিৎসাধীন আছেন, ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে সঙ্গে নিয়ে তাদের দেখতে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। কিন্তু, আহত সবার সঙ্গে দেখা না করায় হাসপাতালেই তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। একটা পর্যায়ে উপদেষ্টার গাড়ি আটকে তাতে কিল-ঘুষিও মারেন বিক্ষুব্ধরা। বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) জরুরি বিভাগের সামনে ঘটে এ ঘটনা।জানা যায়, সকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকসহ নিটোরে আহতদের দেখতে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তারা হাসপাতালের চতুর্থ তলার পুরুষ ওয়ার্ড প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে ঘুরে দেখেন এবং চলে যাওয়ার জন্য রওনা হন। কিন্তু তিন তলার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আহতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাদের সঙ্গে দেখা না করায়।এছাড়া রোগীদের পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টার প্রোটকলে থাকা এক দায়িত্বরত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রোগীকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। এসময় জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে অর্থ না পাওয়ারও অভিযোগ তোলেন অনেকে। সব মিলিয়ে ব্যাপক তোপের মুখে দ্রুত হাসপাতাল ছাড়ার চেষ্টা করেন উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার। তবে, বিক্ষুব্ধরা তাদের গাড়ি ঘিরে ধরেন।দেখা যায়, কেউ একজন গাড়ির সামনে বসে পড়েন। আরেকজন উঠে পড়েন গাড়ির ছাদে। কিছু সময় তারা গাড়িতে কিল-ঘুষিও মারতে থাকেন। নেমে আসতে বলেন গাড়ির চালককে। পরে নিরূপায় হয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অন্য একটি গাড়িতে করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই গাড়ি ও প্রটোকলে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি আটকে দেন এবং রাস্তায় অবস্থান নেন।এদিকে, নিটোরের গেট বন্ধ করে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় অবস্থান নেওয়ায় যানজট দেখা দেয়। এসময় মো. হাসান নামে আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের এক একটা ওয়ার্ডে ৪৮ জন মানুষ আছে। কিন্তু তারা তাদের পছন্দের বিদেশি পাঁচজন সাংবাদিক নিয়ে এসেছেন এবং আমাদের দেশীয় কোনো সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারা দু-একজনের সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। আমরা কথা বলতে গেলেও আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের সামান্য ট্রিটমেন্ট দিয়ে তিন মাস বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমার পায়ে নয়টি অপারেশন করা হয়েছে, তারপরও এখন পর্যন্ত সুস্থ হতে পারিনি।

ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু, একদিনে ৭ জনের মৃত্যু

এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৭ জনে। গত এক দিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও এক হাজার ২১১ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৮০০ জনে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো নিয়মিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে পাঁচজনই ঢাকা বিভাগের। বাকি একজন করে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের।স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০২ জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫০৯ জন রোগী।চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭৪ হাজার ৮০০ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ নারী।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত এক দিনে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছে এক হাজার ৬১৯ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ৭০ হাজার ৪৫৩ জন ছাড়পত্র পেয়েছে। বর্তমানের দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে চার হাজার ৩৪৭ ডেঙ্গু রোগী। প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

একদিনে ডেঙ্গু কেড়ে নিলো ৫ প্রাণ

রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৬৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম আট দিনেই ডেঙ্গুতে ৪৫ জন মারা গেলেন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৩৪২ জন ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে গত অক্টোবর মাসেই ১৩৪ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা বেশী। এছাড়া চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৯২২ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশী।শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ২৪২ জন ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে (সিটি করপোরেশন বাদে) ঢাকা বিভাগে ৯২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৪৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৬ জন, সিলেট বিভাগে ৩ জন ও রংপুর বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে চার হাজার ২৮৭ জন চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৭০৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

ইউনিয়ন-উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

দেশের ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে সদর হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।সোমবার (৪ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, উপজেলা বা গ্রাম লেভেলে রোগীদের বাছাই করে যদি জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে পাঠানো যায় তাহলে সত্যিকার অর্থে জটিল রোগীরা সেবা পাবেন। ইউনিয়ন লেভেলে যে ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো আছে, সেগুলোতে লোকবল ও যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। এখনও উপজেলা হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালে সমস্যা রয়ে গেছে। চিকিৎসা সেবাটা আসলে সবকিছুর সমন্বয়ে হয়ে থাকে।চিকিৎসক, টেকনোলজিস্ট বা মেশিনারিজের মধ্যে কোনো একটি অংশ কাজ না করলে পুরো চিকিৎসা সেবাটা দেওয়া সম্ভব হবে না। এর আগে উপদেষ্টা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। চমেক হাসপাতাল ছাড়াও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

একদিনে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল ১০ জনের

শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে পরদিন শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানি হয়েছে আরও ১০ জনের। এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৯৯৬ জন।শনিবার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬৯, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৭২, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৮০, খুলনা বিভাগে ৮১ জন রয়েছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪০ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।এই সময়ে সারাদেশে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৯১ জন ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৭২৯ জন।স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৬৩ হাজার ১৬৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। আর চব্বিশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১০ জনের। তেইশে মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

৫ দিনে ১৮ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা নিয়েছেন

দেশে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) চলমান টিকা কার্যক্রম গত পাঁচ দিনেই ১৮ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন। গ্যাভি, ইউনিসেফ এবং ডাব্লিউএইচও’র সহায়তায় পরিচালিত এই টিকা কার্যক্রমে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং স্কুলের বাইরে থাকা ১০ থেকে ১৪ বছরের কিশোরীরা বিনামূল্যে পাচ্ছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।এসময় জানানো হয়, দেশের ৭টি বিভাগে ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থীকে এইচপিভি টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা সরকারের। এরমধ্যে স্কুল পর্যায়ে এই টিকা পাবে ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯১৮ জন, বাকিগুলো স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদের দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এইচপিভি টিকা নেওয়ার লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত ৩৪ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৮ জন শিক্ষার্থী অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে ১৮ লাখ ১৭ হাজার ৩২৬ জন শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন।সংবাদ সম্মেলনে টিকা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ। এসময় তিনি জানান, গত ২৪ অক্টোবর শুরু হওয়া এক ডোজের এ টিকার ক্যাম্পেইন চলবে ১৮ দিন। এই ক্যাম্পেইনে ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৫৯ কিশোরীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য আমাদের। এই মুহূর্তে সরকারের হাতে টিকার মজুত রয়েছে ৭৯ লাখ ৪৭৮ লাখ।এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর আমাদের অসংখ্য মায়ের মৃত্যু হয় ক্যান্সারে। পৃথিবীতে এসব ক্যান্সারের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রকোপ অনেক বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে প্রতিবছর ৬ লাখ ৬০ হাজার নারী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, তাদের মধ্যে ৫০ ভাগই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি লাখে ১৬ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, এরমধ্যে মারা যান ৫/৬ হাজারের মতো। দেশে মোট মৃত্যুর মধ্যে ক্যান্সারে মৃত্যু দ্বিতীয় স্থানে। আমাদের মতো দরিদ্র দেশগুলোতে প্রায় ৮০ শতাংশই রোগীর মৃত্যু হয়। তবে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকা দিলে এতোসব আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসবে।

একদিনে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৬, হাসপাতালে ১২৪৮

সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ২৪৮ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে সারাদেশে মোট ২৭৭ জন মারা গেছেন। আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা উত্তর সিটিতে একজন, দক্ষিণ সিটিতে একজনসহ ঢাকা বিভাগে ৪ জন এবং বরিশাল ও রংপুর বিভাগে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।চলতি বছর দেশে মোট ৫৬ হাজার ৯১১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ৩২ হাজার ৯৩৩ জন ঢাকার বাইরের।বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৯৮৪ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন, যার মধ্যে ২ হাজার ৪৫ জন ঢাকার বাইরের।

২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৮ জনের মৃত্যু

এডিস মশাবাহী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১১০০ জন। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৮৪, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৪২, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৬০, খুলনা বিভাগে ১৪৩ জন রয়েছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৪০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩২, রংপুর বিভাগে ২৬ এবং সিলেট বিভাগে চারজন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৪৭ হাজার ৫০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৩৪ জনের। এছাড়া গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর ১ হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

একদিনে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু

গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। যা চলতি বছরে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। পাশাপাশি এই সময়ে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।এ নিয়ে চলতি বছর মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১০ জনে। এদের মধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসেই ৮০ জন মারা গেছেন। এদিকে, চলতি মাসের প্রথম বারো দিনেই ৪৭ জন মারা গেলেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশী। তাছাড়া, এ বছরে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৮১০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৩৩১ জন ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে (সিটি করপোরেশন বাদে) চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৭ জন, বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন, ঢাকা বিভাগে ১০০ জন, খুলনা বিভাগে ৯৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন ও সিলেট বিভাগে ৪ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া, শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৫২২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। ডেঙ্গুতে এই সিটি করপোরেশনে ৯০৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন সর্বোচ্চ ১১২ জন।উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৭০৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

একদিনে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু

গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। যা চলতি বছরে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। পাশাপাশি এই সময়ে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।এ নিয়ে চলতি বছর মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১০ জনে। এদের মধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসেই ৮০ জন মারা গেছেন। এদিকে, চলতি মাসের প্রথম বারো দিনেই ৪৭ জন মারা গেলেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশী। তাছাড়া, এ বছরে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৮১০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৩৩১ জন ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে (সিটি করপোরেশন বাদে) চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৭ জন, বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন, ঢাকা বিভাগে ১০০ জন, খুলনা বিভাগে ৯৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন ও সিলেট বিভাগে ৪ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া, শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৫২২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। ডেঙ্গুতে এই সিটি করপোরেশনে ৯০৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন সর্বোচ্চ ১১২ জন।উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৭০৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস আজ

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক। তাদের বেশির ভাগই কর্মক্ষম। পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল হওয়া সত্ত্বেও কর্মক্ষেত্রে এর স্বীকৃতি না পাওয়া, কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ, অতিরিক্ত পরিশ্রম ও হতাশায় তাঁরা মানসিক রোগে আক্রান্ত।দেশের এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পৃথকভাবে সভা, সেমিনার ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য, অগ্রাধিকার দেওয়ার সময় এখনই’। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত পরিশ্রম, কম পারিশ্রমিক, কর্মী ছাঁটাই, কর্মক্ষেত্রে অসন্তুষ্টি, সহকর্মীদের অসহযোগিতা, দারিদ্র্য ও সামাজিক অবস্থান হারানোর ভয়ে মূলত কর্মীরা বিষণ্ণতায় ভোগেন।জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন,উন্নত বিশ্বে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে গড়ে প্রায় ১০ শতাংশ কর্মী কেবল বিষণ্ণতার কারণে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এতে বছরে গড়ে ৩৬ কর্মদিবস নষ্ট হয়। এসব রোগীর ৫০ শতাংশ চিকিৎসাসেবা নেন না। অনেক সময় মানসিক সমস্যার কথা মুখ ফুটে বললে চাকরি হারানোর ভয় থাকে। কর্মক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনে একজন মানসিক সমস্যায় ভোগেন। আর তাঁদের মধ্যে গুরুতর মানসিক অসুস্থতার জন্য ৮০ শতাংশ কাজ হারান। এসব ব্যক্তি অনুপস্থিতি, কর্মদক্ষতা হ্রাস, কাজে কম মনোযোগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব এবং মনে রাখার সমস্যায় ভোগেন। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে হাসপাতালটির বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ ও ভর্তি রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত সমস্যায় চিকিৎসা নিতে এসেছে। এ ছাড়া সোমাটিক সিম্পটম ডিস-অর্ডার (মানসিক রোগের সমষ্টি), অবসেসিভ কমপালসিভ ডিস-অর্ডার (অবাঞ্ছিত চিন্তা-ভাবনা), বাইপোলার ডিস-অর্ডার (অতিরিক্ত উচ্ছ্বাসপ্রবণতা), সিজোফ্রেনিয়া (উদ্ভট চিন্তা, অসংগতিপূর্ণ কথাবার্তা) ও অন্যান্য সাইকোটিক ডিস-অর্ডার নিয়ে এসেছে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে ৭৪ হাজার ৭৪৪ জন। এর মধ্যে ছয় হাজার ৬৫৮ জন শিশু-কিশোর, যা ১০ শতাংশ। এদের বেশির ভাগেরই কনডাক্ট ডিস-অর্ডার বা আচরণগত সমস্যা।দেশে কত মানুষ ভুগছে—এ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে গত পাঁচ বছরে কোনো জরিপ বা গবেষণা হয়নি। ২০২২ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল ঠিক করা হলেও এর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। শিশুদের মধ্যে এই হার ১২ দশমিক ৬ শতাংশ। এসব রোগীর মধ্যে চিকিৎসার বাইরে ৯৪ শতাংশ।সরকারের সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশে মোট মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ আছেন ৩৫০ জন, অর্থাৎ প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে ০ দশমিক ১৭ জন। সাইকোলজিস্ট ৫৬৫ জন বা প্রতি লাখে ০ দশমিক ৩৪ জন, সাইকিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার সাতজন বা প্রতি লাখে ০ দশমিক ০০৪ জন। অকুপেশনাল থেরাপিস্ট ৩২৪ জন বা প্রতি লাখে ০ দশমিক ১৮ জন। নার্স ৭০০ জন।জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, উন্নত বিশ্বে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে গড়ে প্রায় ১০ শতাংশ কর্মী কেবল বিষণ্ণতার কারণে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এতে বছরে গড়ে ৩৬ কর্মদিবস নষ্ট হয়। এসব রোগীর ৫০ শতাংশ চিকিৎসাসেবা নেন না। অনেক সময় মানসিক সমস্যার কথা মুখ ফুটে বললে চাকরি হারানোর ভয় থাকে। তবে কাজের চাপ, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা, উদ্বেগ, পরিবারে সময় কম দেওয়া ইত্যাদি কারণে নারী-পুরুষ উভয়ের ওপর মানসিক চাপ বাড়ে, যা কর্মদক্ষতা কমিয়ে দেয়।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মনোরোগবিদ্যা বিভাগের ফেজ বি রেসিডেন্ট ডা. নাহিদ আফসানা জামান বলেন, মানসিক রোগীদের মধ্যে ৯২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ শিশু-কিশোর চিকিৎসার আওতায় আসছে না। চিকিৎসা শুরু হতেই গড় বিলম্ব হয় ২৪ থেকে ৩৬ মাস। গড় বিলম্বজনিত কারণে মানসিক রোগ চরম মাত্রা ধারণ করতে পারে এবং রোগীরা ভোগান্তির শিকার হয়।