
দেশের সংগীতাঙ্গনে যিনি ব্যতিক্রমী ধারা তৈরি করেছিলেন, সেই কিংবদন্তি শিল্পী ও সাংবাদিক সঞ্জীব চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৯ নভেম্বর। ব্যান্ড ‘দলছুট’-এর প্রতিষ্ঠাতা এই শিল্পী ২০০৭ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
১৯৬৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্ম নেওয়া সঞ্জীব চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। আশির দশকে সাংবাদিকতা শুরু করে তিনি আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ, যায়যায়দিনসহ একাধিক দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করেছেন। দেশের পত্রিকাগুলোতে ফিচার বিভাগের বিকাশে তার ভূমিকা পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত।
ছাত্রজীবনে ‘শঙ্খচিল’ নামে একটি সংগীতদলের সঙ্গে তার পথচলা শুরু। পরে ১৯৯৬ সালে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে মিলে সৃষ্টি করেন স্বকীয়তায় ভরা ব্যান্ড ‘দলছুট’। ব্যান্ডটির চারটি অ্যালবাম- ‘আহ্’ (১৯৯৭), ‘হৃদয়পুর’ (২০০০), ‘আকাশচুরি’ (২০০২) এবং ‘জোছনা বিহার’ (২০০৭)- এ সঞ্জীবের কণ্ঠ, সুর ও কথার স্বকীয় ছাপ স্পষ্ট।
১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এই শিল্পী। কবি, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, সংগঠক- নানামুখী প্রতিভায় তিনি ছিলেন অসম্ভব সমৃদ্ধ। তার সৃষ্টিগুলোতে সমাজ, রাজনীতি ও মানুষের জীবনবোধ অনন্যভাবে উঠে এসেছে।
‘বায়োস্কোপ’, ‘আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ’, ‘আমি তোমাকেই বলে দিব’, ‘রিকশা’, ‘কথা বলব না’, ‘সাদা ময়লা রঙ্গিলা পালে’, ‘চোখ’, ‘আহ ইয়াসমিন’- এসব জনপ্রিয় গান এখনও শ্রোতাদের কাছে সমান আবেগে বাজে।
দেশের সংগীতে আধুনিক সংবেদন এনে দেওয়া এই শিল্পীকে আজও অগণিত ভক্ত গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে।