
শীতের কনকনে আবহাওয়া বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে ফিরেছে স্বস্তির হাওয়া। তাপমাত্রা নামার প্রভাব পড়েছে সবজির সরবরাহে, আর তার সরাসরি সুফল পাচ্ছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার ২৬ ডিসেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ শীতকালীন সবজি ও নতুন আলুর দাম এখন সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে। বিক্রেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, সারাদেশে শীতের তীব্রতা বাড়ায় মাঠ থেকে বাজারে সবজির জোগান বেড়েছে। সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে এবং সামনে আরও কমার সম্ভাবনাও রয়েছে।
তবে সব পণ্যে একই চিত্র নয়। বাজারে পুরনো পেঁয়াজের দাম এখনও তুলনামূলক বেশি থাকলেও নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজের দামও কমে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এতে বোঝা যায়, দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগের তুলনায় পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।
সবজির মধ্যে বাঁধাকপি ও ফুলকপিতে এসেছে উল্লেখযোগ্য স্বস্তি। মাঝারি আকারের বাঁধাকপি বাজার ও মানভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৩০ টাকার বেশি। একইভাবে ফুলকপির দামও কমেছে। আকার অনুযায়ী ফুলকপি এখন ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। শিমের বাজারেও পতন লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমানে অন্তত চার ধরনের শিম পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে নতুন আসা বিচিওয়ালা শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, আর অন্যান্য জাতের শিমের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে।
নতুন আলুর দামে এসেছে বড় পরিবর্তন। মাত্র দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগেও যেখানে প্রতি কেজি নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, সেখানে এখন দাম নেমে এসেছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। মুলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। বেগুনের দামও গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বর্তমানে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে রয়েছে।
পাকা টমেটোর দাম কিছুটা কমলেও এখনো পুরোপুরি ক্রেতাদের স্বস্তি দিতে পারেনি। বাজারে প্রতি কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে শাকের দামে ভালো খবর রয়েছে। পালং শাক, লাল শাক ও মুলা শাকের আঁটি এখন ১০ থেকে ১৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সবজির পাশাপাশি অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কম রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। বাজারভেদে প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকায় এবং সোনালি মুরগির কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারেও বড় কোনো পরিবর্তন নেই। চাষের তেলাপিয়া, পাঙাশ ও কই মাছ প্রতি কেজি ২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। রুই ও কাতলা মাছের দাম কেজিপ্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে। বিক্রেতারা জানান, এসব পণ্যের দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রায় একই রয়েছে।