সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ কাজ না পাওয়ায় প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করলেন বিএনপি নেতা
- ফেনী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:২২ এম, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
ফেনীতে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিনের ওপর চড়াও হয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য কামরুল হাসান মাসুদ। প্রকৌশলীর অভিযোগ, দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়েও মাসুদ জোরপূর্বক কাজটি পেতে চেয়েছিলেন।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নোডাল সিটি প্রকল্পের আওতায় শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক সম্প্রসারণ, ফুটপাত ও ড্রেন নির্মাণের জন্য ২৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান: “জেবি” ও “পিডিএল”দরপত্র জমা দেয়। প্রস্তাব মূল্য দরপত্রের চেয়ে তিন শতাংশ কম হওয়ায় মূল্যায়নে “পিডিএল” প্রতিষ্ঠানটি নির্বাচিত হয়।
নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিন জানান, দরপত্র সম্পূর্ণভাবে ই-জিপি (e-GP) সিস্টেমে সম্পন্ন হওয়ায় ম্যানুয়ালভাবে কাউকে কাজ দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, “মাসুদ দরপত্রে অংশ না নিয়েও কাজটি পেতে চেয়েছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় পৌরসভায় এসে তিনি উত্তেজিত হয়ে হামলার চেষ্টা করেন এবং আমার সামনে থাকা ল্যাপটপ ও ফাইলপত্র ছুড়ে ফেলেন।”
পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন জানান, ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে এবং জেলা বিএনপির নেতৃত্বকেও অবহিত করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ পৌরসভায় গিয়ে তদন্ত করে। তিনি আরও বলেন, “সময়সীমার মধ্যে কাজটি শুরু না হলে বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই রাতেই পিডিএল প্রতিনিধির সঙ্গে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে।”
অভিযুক্ত কামরুল হাসান মাসুদের সঙ্গে সোমবার রাতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, “ঘটনাটি বিএনপির হাইকমান্ডকে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।”
একটি সূত্র জানায়, কামরুল হাসান মাসুদের নিজের ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকলেও তিনি প্রায়ই অন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন নিয়ে কাজ করেন। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের পালিয়ে যাওয়া নেতাদের বরাদ্দ পাওয়া কিছু কাজ কয়েকজন ঠিকাদার ভাগ করে নেন, আর তা নিয়ে বিএনপির মধ্যেই বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।