ফরিদপুরে এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলা, বিএনপি নেত্রী নায়াব ইউসুফের ওপর অভিযোগ
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:০৬ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

বিএনপি নেত্রী নায়াব ইউসুফের নির্দেশে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ কে আজাদ গণসংযোগ শুরু করেন পরমানন্দপুর বাজার এলাকায়। এর আগে তিনি স্থানীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন। কিন্তু খুব বেশি সময় না যেতেই সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান এবং কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি নান্নু মোল্লার নেতৃত্বে একটি মিছিল ঘটনাস্থলে এসে জড়ো হয়। তারা বিএনপি নেত্রী নায়াব ইউসুফের নামে স্লোগান দিতে থাকে। এরপর ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিয়ে মিছিলকারীরা এ কে আজাদকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়। এরপর এ কে আজাদ পুলিশের নিরাপত্তায় এলাকা ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু ঘটনাস্থল ছাড়ার সময় বিকেল ৫টার কিছু পর তার গাড়িবহরের পেছনের দুটি গাড়িতে হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, যুবদলের কর্মীরাই এ হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে তার একজন সমর্থক আহত হন। পুলিশ জানায়, ভাঙচুর হওয়া গাড়িগুলোর একটি এ কে আজাদের বহরের এবং অন্যটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
এ কে আজাদ বলেন, “রাজনীতিতে সহিংসতার এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। এ ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। গত নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম হকও এ জাতীয় আচরণ করেননি। নায়াব ইউসুফের কাছ থেকে এ জাতীয় আচরণ এলাকাবাসী প্রত্যাশা করেনি। এ সব ঘটনা রাজনৈতিক সংকটকে ঘনিভূত করবে।” তিনি জানান, এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নায়াব ইউসুফ। তিনি বলেন, “আমি আমার নেতাকর্মীদের স্পষ্টভাবে বলেছি, কোনো ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াবে না। এ কে আজাদের অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পৃক্ততা থাকায় স্থানীয়দের ক্ষোভ থেকেই এমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে।”
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনার সঙ্গে দলের কর্মীদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, “পরমানন্দপুরে যুবদলের কোনো ইউনিট কমিটি নেই। আমাদের কোনো নেতাকর্মী এই ঘটনায় জড়িত নয়।”
ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান জানান, হাটের দিন হওয়ায় বাজারে প্রচুর জনসমাগম ছিল। একই সময়ে দুই পক্ষ গণসংযোগ করছিল। এক পর্যায়ে মুখোমুখি অবস্থানে গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। “পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে,” বলেন তিনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।