দাওয়াত না দেওয়ায় মাদ্রাসার অনুষ্ঠানের সব খাবার খেয়ে গেলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা
- বরগুনা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৬:৫১ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বরগুনার আমতলীতে একটি মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ সভায় আমন্ত্রণ না পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য প্রস্তুতকৃত সব খাবার খেয়ে ফেলেন এবং বাকি খাবারগুলো নষ্ট করে দেন। ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে, আমতলী উপজেলার কালিবাড়ী এলাকার ‘ন ম ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসা’ প্রাঙ্গণে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই দিন মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রথম সভা উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক আয়োজন করা হয়, যেখানে প্রায় ৫০ জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে দাওয়াতের তালিকায় স্থান না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতাকর্মীরা।
ঘটনার একটি ভিডিও সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেকেই এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ও দলীয় ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন অভিযোগ করেন, “আমরা গত ৪ সেপ্টেম্বর নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করি। আমতলী সরকারি কলেজের প্রভাষক মো. ফজলুল হক কমিটির সভাপতি হন। প্রথম সভার দিন দুপুরে ৫০ জন অতিথির জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দাওয়াত না পেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মাদ্রাসায় ঢুকে পড়েন, আমাদের শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং সমস্ত খাবার খেয়ে ফেলেন। পরে বাকি খাবারে টিস্যু, উচ্ছিষ্ট ও নোংরা পানি মিশিয়ে তা নষ্ট করে দেন। যাওয়ার সময় হুমকিও দিয়ে যান।”
ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত, গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজী, ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনার পর রিপন কাজী তার ফেসবুক প্রোফাইলে মাদ্রাসার অনুষ্ঠানে তোলা কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন এবং লেখেন, “ন ম ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় পিকনিকের কিছু স্মৃতি।” এই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে।
অভিযুক্ত মাহবুব কাজী বলেন, “মাদ্রাসায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠান করা হয়েছে। আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তাই খাবার খেয়েছি, তবে খাবার নষ্ট করিনি।”
এদিকে, আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মৃধা বলেন, “যারা এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধা একে “অত্যন্ত গর্হিত কাজ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, “এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”