বাংলাদেশের সংবিধানে পিআর নামক কোনো শব্দ নেই: সালা‌হউদ্দিন


বাংলাদেশের সংবিধানে পিআর নামক কোনো শব্দ নেই: সালা‌হউদ্দিন

বাংলাদেশের সংবিধানে ‘পিআর’ নামে কোনো নির্বাচন ব্যবস্থা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে নেত্রকোণার ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ বক্তব্য দেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, যারা আজ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে ভোট অনুষ্ঠিত হতে দেবে না বলে ঘোষণা দিচ্ছে, তারা ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলছে। গতকাল একটি দলের সংবাদ সম্মেলনে শুনলাম, পিআর পদ্ধতি না হলে তারা বাংলাদেশে নির্বাচন হতে দেবে না। আমি আজ ঘোষণা দিচ্ছি আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, রমজান শুরুর সপ্তাহখানেক আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। সেই নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না, কারও সে শক্তি নেই, আল্লাহ ছাড়া।

তিনি আরও বলেন, যারা নানা অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায় বা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম করেছি, রক্ত দিয়েছি। সেই ফ্যাসিবাদবিরোধী গণআন্দোলনের ঐক্য ধরে রেখে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশজুড়ে এখন নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে, প্রার্থীরা জনসংযোগে ব্যস্ত। এমন সময়ে যদি কোনো দল নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে ৩০০ আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন।

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তাতে চার শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী প্রাণ দেন। এর মধ্য দিয়েই দেশে ফ্যাসিবাদী শক্তি উৎখাত হয়। অথচ আজও সেই শক্তি রাজনৈতিক ক্ষেত্র দখলের চেষ্টা করছে। সালাহউদ্দিনের মতে, এর জবাব দিতে হবে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।

সংস্কার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেসব সংস্কার কমিশনে ঐকমত্যে গৃহীত হয়েছে, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব। যেগুলোর জন্য সংবিধান সংশোধন দরকার নেই, সেগুলো সরকার চাইলে এখনই অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ বা অফিস আদেশের মাধ্যমে কার্যকর করতে পারে। তবে সংবিধানসংশ্লিষ্ট সংস্কার বাস্তবায়ন কেবলমাত্র নির্বাচিত সংসদ ও সরকারের কাজ।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। প্রধান বক্তা ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল আলম। সভাপতিত্ব করেন নেত্রকোণা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল হক এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ আলমগীর, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, আরিফা জেসমিন নাহিন প্রমুখ।

সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট পাঁচজন প্রার্থী। জেলার ১০টি উপজেলা থেকে আসা ১ হাজার ৫১৫ জন কাউন্সিলর সরাসরি ভোট দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী (মাছ প্রতীক), যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান দুদু (ফুটবল প্রতীক) এবং জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি (গরুর গাড়ি প্রতীক)।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×