গণ-অভ্যুত্থানের পর এলাকার ‘বিলাসী নেতা’ চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার


গণ-অভ্যুত্থানের পর এলাকার ‘বিলাসী নেতা’ চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগের এক সাবেক সংসদ সদস্যের বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত নেতা জানে আলম অপু সম্পর্কে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার পুনঘরদীঘি গ্রামের বাসিন্দা অপু একসময় ছিলেন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তবে গণ-অভ্যুত্থানের পর হঠাৎ করেই বদলে যায় তার জীবনধারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রিন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অপু একসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক পদেও ছিলেন, তবে পরবর্তীতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হন।

অপুর বাবা আনোয়ার হোসেন দুলাল ঢাকায় একটি বেসরকারি চাকরি করতেন এবং প্রায় আট বছর আগে মারা যান। মা অন্যত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ায় ছোট বোনের সঙ্গে চলে গেছেন। ফলে গ্রামের বাড়ি বেশিরভাগ সময় তালাবদ্ধই থাকে। অপু মূলত নানাবাড়িতে থেকে বেড়ে ওঠেন এবং পড়াশোনা চালিয়ে যান উপহার ও সাহায্যের মাধ্যমে।

তবে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর দৃশ্যপট একেবারেই পাল্টে যায়। ঢাকায় দামি পোশাক, বিলাসবহুল গাড়ি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে ক্ষমতাধর নেতা হিসেবে তুলে ধরতেন অপু। জয়পুরহাটে ফিরে আসার সময় জেলা পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সংবর্ধিতও হন।

পুনঘরদীঘি গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, “অপুর আচরণ তার বয়সের তুলনায় অনেক পরিণত ছিল, তবে তার উত্থানে আমরা অবাক হইনি। চাঁদাবাজির ভিডিও প্রকাশের পর সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে।”

আক্কেলপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দেওয়ান তানভীন নেওয়াজ জানান, ২০২২ সালের দিকে অপু ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তবে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি নানা সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় আশ্রয় নেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন ক্ষমতাধরদের সঙ্গে ছবি প্রকাশ করতেন।

ছাত্রদলের আরেক নেতা আরমান হোসেন বলেন, “অভ্যুত্থানের পর থেকেই তার জীবনযাপন একেবারে পাল্টে যায়। চাঁদাবাজি ও তদবিরই ছিল তার মূল আয়ের উৎস। ঢাকায় বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে শোনা যায়, যদিও এলাকায় তিনি বিশেষ কোনো কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন না।”

অপুর এই আকস্মিক উত্থান ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×