ভুয়া সনদে বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন আবুল বাসার
- ঝালকাঠি প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৭:১০ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৫

ভুয়া শিক্ষাগত সনদের মাধ্যমে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার উত্তর উত্তমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন মো. আবুল বাসার। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির পদে থাকার জন্য প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক পাস হতে হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, মো. আবুল বাসার "ইবাইস ইউনিভার্সিটি" নামক একটি অবৈধ প্রতিষ্ঠানের জাল সনদ ব্যবহার করে ওই পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ইবাইস ইউনিভার্সিটির কোনো স্বীকৃতি নেই এবং তার সার্টিফিকেট বৈধ নয়। ইউজিসির গণবিজ্ঞপ্তিতে এই ইউনিভার্সিটি থেকে পাওয়া যেকোনো সনদকে অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করতে সতর্ক করা হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক অভিভাবক ও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, সভাপতি পদের জন্য আরও কয়েকজন উপযুক্ত প্রার্থী আবেদন করলেও রহস্যজনক কারণে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও একটি প্রভাবশালী চক্র মো. আবুল বাসারের নামই চূড়ান্ত করে বোর্ডে পাঠান।
মো. আবুল বাসারের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, তিনি তার মালিকানাধীন ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে তার এজেন্সি ‘মেগা ইন্টারন্যাশনাল’-এর বিরুদ্ধে টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য আদায় এবং পাসপোর্ট ছাড়া গ্রুপ বুকিং করে সেগুলো দ্বিগুণ দামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিক্রির অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একজন কালোবাজারি কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো সংবেদনশীল জায়গায় সভাপতির দায়িত্ব পান?” তাদের দাবি, টাকা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি এই পদ দখল করেছেন।
তবে উত্তর উত্তমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাইনুল এ বিষয়ে বলেন, “আমার পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসনের যাচাই-বাছাইয়ের পরেই বোর্ড সভাপতি তাকে অনুমোদন দিয়েছে। এটা এককভাবে আমার সিদ্ধান্ত নয়।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত মো. আবুল বাসার নিজের অবস্থানে অনড় থেকে দাবি করেন, “আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি, ক্লাস করেছি, আমার সার্টিফিকেট ১০০% অথেনটিক বলে আমি মনে করি।”