চাঁদাবাজির অভিযোগে ২ বিএনপি কর্মীকে কারাদণ্ড, প্রতিবাদে থানা ভাঙচুর
- লালমনিরহাট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১২:৪৬ পিএম, ০৩ জুলাই ২০২৫

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই বিএনপি কর্মীকে কারাদণ্ড দেওয়ার জের ধরে থানা ঘেরাও করে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপর ৬ জনকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া বিএনপির অন্তত ১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানা ঘেরাও করে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এর আগে রাত সাড়ে ১০টায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাস চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার দুই বিএনপি কর্মীকে এক মাসের কারাদণ্ড দেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বুড়িমারী-রংপুর মহাসড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে সোহেল রানা ও বেলাল হোসেন নামের দুজন বিএনপি কর্মীকে আটক করে এক মাসের সাজা দেন পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস। তবে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি সম্প্রতি ইজারা পাওয়া পাথর কোয়াড়ির বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা নিচ্ছিলেন তারা। যদিও ইউএনও উত্তম কুমার দাসের দাবি, ইজারার শর্তে উল্লেখ আছে পাথর কোয়াড়ির সুনির্দিষ্ট স্থান হতেই পাথর অপসারণ ও উত্তোলন করতে হবে। কিন্তু কোনো ধরনের মহাসড়কে টোলঘর বসিয়ে চাঁদা তুলতে পারবেন না। কিন্তু তারা সেটা করছিলেন বিধায় লক্ষাধিক টাকার রিসিভ মানিসহ গ্রেফতার করে তাদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ হয়ে পাটগ্রাম থানায় জড়ো হন বিএনপির বেশকিছু নেতাকর্মী। এসময় পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। এবং পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির কয়েক শত নেতাকর্মী জড়ো হয়ে থানা ঘেরাও করে ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান বলেন, ইজারাদারদের সঙ্গে পুলিশের বিরোধকে বিএনপির দায় চাপানো হচ্ছে। পুলিশের অতিরঞ্জিত বাড়াবাড়িতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। আজ সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরা হবে।
পাটগ্রাম থানার ওসি (তদন্ত) স্বপন কুমার সরকার বলেন, অবৈধ চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি চপলকে গ্রেফতারের জেরে পুলিশের ওপর হামলা চালায় তার কর্মীসমর্থকরা। এসময় থানার আসবাবপত্র, জানালার গ্লাস, কম্পিউটার ভাঙচুর করা হয়েছে এবং আমাদের আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, থানায় হঠাৎ আক্রমনের ঘটনা ঘটলে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা বেশকিছু সরঞ্জাম নষ্ট করে দেয়। এসময় ৮ জন পুলিশ আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাটগ্রাম থানা পরিদর্শনে আসেন রংপুরের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম ও লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।