পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রদল নেতার নির্দেশনা, ৪ শিক্ষককে অব্যাহতি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:১৮ পিএম, ২৬ জুন ২০২৫

নাটোরের বড়াইগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রদলের নেতাকে পরীক্ষার্থীদের নির্দেশনা প্রদান করতে দেখা যায়। একই সময় কক্ষ পরিদর্শক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তরপত্র বিতরণ করছেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতার এক সহযোগী ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। এতে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রের ২০৫ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় কেন্দ্রসচিব ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোহিনুর খাতুনকে শোকজ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই কক্ষে পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা চার শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন মোসাদ্দেক হোসেন, নারগিস আলম, মতিউর রহমান ও তসলিম উদ্দিন।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রাকিব সরদার। তিনি ছাত্রদলের বনপাড়া শহর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বনপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব সরদার রফিকের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন শুধু পরীক্ষার্থী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কেন্দ্র প্রবেশের নির্দেশনা রয়েছে। একই সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এই সময় ছাত্রদল নেতা রাকিব সরদার ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তাঁর সহযোগীসহ কেন্দ্রে প্রবেশ করে বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের নির্দেশনা-অভয় দিতে থাকেন। সবশেষ ২০৫ নম্বর কক্ষে গিয়ে স্মার্ট ফোন দিয়ে নিজের ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। অথচ কোনোভাবেই পরীক্ষাকেন্দ্রে স্মার্ট ফোন অনুমোদিত নয়।
অভিযোগ স্বীকার করে কেন্দ্রসচিব ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোহিনুর খাতুন বলেন, ‘বিষয়টি আমার অগোচরেই ঘটে গেছে। তবে প্রশ্নপত্র বিতরণের আগেই ওই নেতা কেন্দ্র ত্যাগ করেন।’ তিনি আরও বলেন, ২০৫ নম্বর কক্ষে দায়িত্বরত চারজন কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘ইউএনও মহোদয় আমাকে অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে আইগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।’
ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমি ৯টা ৪০ মিনিটে বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রে পৌঁছে উপস্থিত অভিভাবক ও বহিরাগতদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিই। এরপর শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শন টিম তাদের কার্যক্রম শেষ করে চলে যাওয়ার পর ১০টা ৪০ মিনিটে ওই কেন্দ্র ত্যাগ করি। এর আগে ছাত্রদলের ওই নেতা কক্ষে প্রবেশ করেছিলেন। পরে ফেসবুকে ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে ঘটনাটি আমার নজরে আসে। এরপর কেন্দ্রসচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং ২০৫ নম্বর কক্ষে দায়িত্বরত চারজন কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’