ইয়াবাসহ আটকের পর বিএনপি কর্মীর মৃত্যু, থানার সামনে বিক্ষোভ
- কুমিল্লা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:১৫ এম, ২০ জুন ২০২৫

কুমিল্লায় পুলিশের অভিযানে ইয়াবাসহ আটকের পর শেখ জুয়েল নামের এক বিএনপি কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পুলিশি নির্যাতনে জুয়েলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার। তবে এ অভিযোগ সত্য নয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুয়েলের মৃত্যু হয়। এদিকে পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে থানার সামনে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
শেখ জুয়েল (৪৫) পেশায় একজন ইন্টারনেট ব্যবসায়ী। তিনি মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঙ্গরা বাজার ব্রিক ফিল্ড এর পূর্ব পাশে একটি বাড়ি থেকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ জুয়েল ও তার চার সহযোগীকে আটক করে থানায় আনা হয়। রাতে হাজতে জুয়েল অসুস্থ হয়ে পড়লে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে পরিবারের দাবি, পুলিশের নির্যাতনে জুয়েলের মৃত্যু হয়েছে। যদিও নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।
জুয়েলের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমার স্বামী ইন্টারনেটের বিল কালেকশন করতে যায়। দুপুরের পরপরই খবর পাই যে আমার স্বামীকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। পরে থানায় গিয়ে আমার স্বামীর সাথে কথা বলতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। অনেক অনুরোধ করে তার সাথে দেখা করি। সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় আমার স্বামী আমাকে বলেছে যে আমি কিছু করি নাই। আমাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করো।
তিনি আরও অভিযোগ, রাতে খবর পাই আমার স্বামীকে মুরাদনগর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার স্বামী আর বেঁচে নেই। পুলিশ আমার স্বামীকে মেরে ফেলছে।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে জুয়েলকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। আমরা পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তাকে মৃত অবস্থায় পাই। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে মৃত্যুর খবর এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয়রা রাতে বাঙ্গরা বাজার থানার সামনে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে রাত পৌনে ১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৭০ পিস ইয়াবাসহ জুয়েল ও তার আরও চার সহযোগীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। রাতে থানায় সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, আটক জুয়েলকে পুলিশ নির্যাতন করেনি। অন্য কোন কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। শুক্রবার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।