গ্রেফতারের একদিন পর কারাগারে আসামির মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের


February 4 2025/chua-20250603103945.jpg

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতারের একদিন পর জেলা কারাগারে মহিরুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন।

রোববার (১ জুন) রাতে কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে রাতেই তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২ জুন) ভোরে তিনি মারা যান।

এদিকে পরিবারের দাবি, গ্রেফতারের সময় মহিরুল সুস্থ ছিলেন। নির্যাতনের ফলে মৃত্যু তার হয়েছে। তারা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছেন।

মহিরুল ইসলাম দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন। রোববার সকালে নিজ গ্রামে ফেরার পর দর্শনা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশের দাবি, তার বিরুদ্ধে মাদক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর জানান, থানার এসআই রেজাউল হোসেনের নেতৃত্বে মহিরুলকে আটক করা হয় ও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে কোর্ট হাজতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মো. ফখর উদ্দিন জানান, মহিরুলকে বিকেলে কারাগারে আনা হয়। অসুস্থ বিধায়, তাকে কারাগারের হাসপাতালে রাখা হয়। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ১টার পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, রাতে তাকে কারা কর্তৃপক্ষ অজ্ঞান অবস্থায় নিয়ে আসেন। আমরা সব ধরনের চিকিৎসা দিয়েছি। জরুরি বিভাগের যিনি চিকিৎসক ছিলেন, তিনি ব্লাড প্রেসারও স্বাভাবিক পেয়েছিলেন। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ব্রেন স্ট্রোকে তার মৃত্যু হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এদিকে মহিরুলের পরিবারের অভিযোগ, গ্রেফতারের সময় তিনি পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের ভাতিজা সাইদুর রহমান বলেন, এটা কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। সুস্থ মানুষ কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যায় কীভাবে? আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

এ ঘটনায় কুড়ুলগাছি গ্রামের স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু, যা আড়াল করার চেষ্টা চলছে। নিহতের পরিবার দ্রুত বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা শোনা গেলেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা পাওয়া যায়নি।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×