ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য বেতনস্কেল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে


December 2024/Imam.jpg

ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য বেতনস্কেল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এর ফলে, তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে এবং তারা নিবেদিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে।’

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভা কক্ষে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের শিক্ষক, মসজিদের খতিব ও ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সভায় ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘ইমাম-মুয়াজ্জিনরা সমাজের অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তারা সামাজিক শক্তির প্রতিভূ। একেবারে তৃনমূল পর্যায় পর্যন্ত তাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু, যুগ যুগ ধরে তারা অবহেলিত। মসজিদ-মাদরাসার ফান্ডে পর্যাপ্ত টাকা থাকলেও তাদেরকে উপযুক্ত বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না। এ কারণে ২০১৫ সালের বেতনস্কেলকে সামনে রেখে তাদের জন্য একটি একীভূত বেতন কাঠামো তৈরিতে কাজ করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।’

খালিদ হোসেন আরো বলেন, ‘ইমাম-মুয়াজ্জিনদের চাকরির নিশ্চয়তা থাকা দরকার। একজনের কথাতে ইমাম নিয়োগ দেওয়া হবে, আরেকজনের কথাতে বরখাস্ত করা হবে- এ সিস্টেম চলতে পারে না। কোন ইমামের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে সেটা পদ্ধতিগতভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে সার্কুলার জারি করা যায় কিনা সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সমাজে যদি আলেম-ওলামাদের দাম না থাকে, তাহলে আমাদেরও দাম থাকার কথা না।’

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরে খালিদ হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। জুলাই বিপ্লবের পরে কিছু জায়গায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কিংবা অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক সম্প্রদায়ের বাড়ি ও উপাসনালয়ে কিছু হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অনেক বিদেশি রাষ্ট্র আমার অফিসে এসেও উদ্বেগ জানিয়েছে। আমি তাদেরকে বলেছি, এ ঘটনাগুলো কোন রূপ ধর্মীয় উগ্রবাদ কিংবা সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা থেকে হয়নি। এর পিছনে  রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি স্বার্থ জড়িত আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ দেশে নানা ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। আমাদের সংবিধানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের অধিকার সমান। এখানে আবহমানকাল থেকেই সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য বিরাজ করছে। এই সৌহার্দ্য যারা নষ্ট করতে চাই, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি সকলকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান।

দুর্নীতি প্রতিরোধে ইমামদের ভূমিকা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ দেশে প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি। প্রতি টেবিলে টেবিলে পার্সেন্টেজ দিতে হয়। সরকার গাছ লাগায়, আর আমরা সেটা চুরি করে ফার্নিচার তৈরি করি।’

তিনি দুর্নীতির মানসিকতা বদলে দেশের সেবা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

পটুয়াখালী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক আসমা আখতারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গর্ভনর সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ও মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক। উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ ও উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×