
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন স্থগিত হওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীনসহ অন্যান্য শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করার ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির অফিস কক্ষে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।
অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন জানান, জকসু নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের পর তিনি নিজ বিভাগে একাডেমিক কাজ করার সময় ৩০-৪০ জনের একটি দল তাকে তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখে। সিসিটিভি ফুটেজের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, এক যুবক দৌড়ে এসে বিভাগের কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে চলে যায় এবং পরবর্তীতে হ্যান্ড মাইক নিয়ে একদল শিক্ষার্থী সেখানে নানাবিধ অশ্রাব্য স্লোগান ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ প্রদর্শন করে। সংবাদ পেয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন সেখানে গেলে তাকে লক্ষ্য করেও 'দালাল দালাল' স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাকে তালাবদ্ধ করা মানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা শিক্ষক সমাজকে তালাবদ্ধ করা। আমার উপরে যদি এই মব হতে পারে, তবে সাধারণ শিক্ষকদের নিরাপত্তা কোন জায়গায়? বিনা অপরাধে কারও দিকে সন্দেহের তীর ছোড়া এবং চরিত্র হরণ করা কোনো সভ্য সমাজের কাজ হতে পারে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “সিন্ডিকেট সভায় সকল সদস্যের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তেই জকসু নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আমি সভায় নির্বাক ছিলাম। অথচ নির্দিষ্ট কিছু পেজ এবং কতিপয় শিক্ষার্থী সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর হয়ে আমার দিকে সন্দেহের তীর ছুঁড়ছেন, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ মোশাররাফ হোসেন বলেন, আগামী ৪৮ ঘন্টার ভিতরে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে অপরাধীদের বহিষ্কার করতে হবে অথবা শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায়, আমরা সাধারণ সভা ডেকে আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো।
উল্লেখ্য, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে ভোর ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করেই একদল শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদককে অবরুদ্ধ করে এবং শিক্ষকদের লক্ষ্য করে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।