আওয়ামীপন্থীদের অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে তৎপর ববি প্রশাসন, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের


আওয়ামীপন্থীদের অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে তৎপর ববি প্রশাসন, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধিতাকারী ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার গদি রক্ষায় গোপন সভাকারী আওয়ামী দোসরদের অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়ে ফের পুনর্বাসন চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে ববি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমের নিকট একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়ে তারা জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

আবেদনে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিরোধীতাকারী আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে একটি পদোন্নতি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা একে “ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তারা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে এসব ফ্যাসিস্ট শক্তির বিচারের দাবি জানিয়ে আসছে। এমনকি সদ্য বিদায়ী উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে আপস করায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে ফুঁসে ওঠে, যার ফলেই কয়েক মাসের মাথায় বিদায় নিতে বাধ্য হন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন উপাচার্য কর্তৃক আবারো পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই উদ্যোগে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে তীব্র সেশনজট ও শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে। ৫১টি প্রভাষক পদের বিপরীতে মাত্র ১০ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। অথচ প্রশাসন একাডেমিক সংকট সমাধানের পরিবর্তে ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের মতো বিতর্কিত প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত রয়েছে।

তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, “আমরা বহুবার পত্রপত্রিকার সূত্রে নানা মাধ্যমে উপাচার্যকে জানিয়েছি; ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনবিরোধী ফ্যাসিস্টদের দৃশ্যমান বিচারের তথ্যপ্রমাণসহ বিচারের দাবিতে আবেদন করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব দাবির প্রতি বিন্দুমাত্র ভ্রূক্ষেপ করেনি; বরং বিভিন্ন একাডেমিক ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের পদায়নের মাধ্যমে বারবার পুরস্কৃত করেছে। যা জুলাই-আগস্ট শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি স্পষ্ট অবমাননা। আমরা এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই।”

শিক্ষার্থীরা সর্বশেষ উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছেন - শিক্ষক সংকট নিরসন ও শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সমস্যা সমাধানকে অগ্রাধিকার দিয়ে অবিলম্বে ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া বন্ধ করা হোক।

ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন - এস. এম. ওয়ালিদুর রহমান, মো. শরীফ উল্লাহ, রবিউল ইসলাম, মো. মাইনুল ইসলাম এবং মোস্তফা শাহরিয়ার।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×