রেজিস্ট্রার পদ নিয়ে ইবির ভিসি কার্যালয়ে হট্টগোল


Jan 2025/Feb 2025/14-1741105976.webp

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে হট্টগোল হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, উপ-উপাচার্য ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ বিএনপিপন্থি এক কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষকদের মধ্যে থেকে রেজিস্ট্রার নিয়োগের দাবি জানিয়েছে। এ নিয়ে হট্টগোলের সময় সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে গেলে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বাধা দেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা পরিচালক, প্রধান প্রকৌশলীসহ বেশ কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনায় বসেন উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এ সময় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও  বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক পদ থেকে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের অপসারণ দাবিতে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। 

তাদের দাবির মুখে এক পর্যায়ে প্রশাসন পরিকল্পনা পরিচালক ড. নওয়াব আলীকে (আওয়ামীপন্থি) সভাকক্ষ থেকে বের করে দিতে বাধ্য হয়। স্থগিত করা হয় সভা। দুপুর পৌনে ১টার দিকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এয়াকুব আলী, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ফারুকুজ্জান খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুনের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা উপাচার্য কার্যালয়ে ঢোকেন। এ সময় সাংবাদিকরা সেখানে প্রবেশ করলে ছাত্রদল নেতা সাহেদ, মিথুনসহ অন্যরা তাদের বের করে দেন।

এক পর্যায়ে হঠাৎ রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় কক্ষের মধ্যে উচ্চবাচ্য শুনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বাধা দেন। পরে তাদের উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকলে সমন্বয়ক এস এম সুইট ও ছাত্রদল নেতা সাহেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য এয়াকুব আলী প্রক্টর অধ্যাপক শাহিনুজ্জামানকে ‘জামায়াত’ আখ্যা দিলে দু’জনের মধ্যে সৃষ্টি হয় বাগ্বিতণ্ডা ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সুইট বলেন, আগে দেখতাম ছাত্রলীগ পদ ভাগাভাগি নিয়ে হট্টগোল, প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করত। এখন ছাত্রদল একই পথে হাঁটছে। ভিসি কার্যালয়ে হট্টগোলের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা ভিসিকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। 

শাখা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার ওয়ালিদ হাসান পিকুলকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য প্রো-ভিসি, ছাত্রদল নেতা সাহেদ, মিথুন উঠে পড়ে লেগেছেন। আমরা চাই জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের যোগ্য একজন ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার বানানো হোক। আর সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজ দলের কর্মীদের চেয়েও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের এমন আচরণের দায় ছাত্রদল নেবে না।

উপ-উপাচার্য এয়াকুব আলী বলেন, ভিসি কার্যালয়ে এক জুনিয়র শিক্ষক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। উপাচার্য এর বিচার না করলে আমি বিষয়টি অন্যভাবে দেখব।

উপাচার্য অধ্যাপক নকীব বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। যেহেতু শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে, সেহেতু আমরা উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেব।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×