
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর সাহসিকতার প্রসংশা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে দেওয়া স্ট্যাটাস তিনি লিখেছেন, ‘আশপাশে এমন বহু শত্রু আছে, যারা সুযোগ পেলে খুন করে ফেলবে, এইটা জানার পরেও মবের মধ্যে ঢুকে মারামারি থামানোর কথা বলতে হেডম লাগে। অন্য কেউ এই সাহস করে নাই। সাহস করেছে হাসনাত আবদুল্লাহ।’
‘সাহসটা করার জন্যে হাসনাতকে মাথায় তুলে ফেলতে হবে সেটা বলছি না, তবে ন্যূনতম এপ্রিশিয়েটটা অন্তত করতে শেখেন। হয়তো ফলাফল প্রত্যাশিত হয়নি। কিন্তু, এর চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারতো। সবচেয়ে বড় কথা উদ্দেশ্য সৎ ছিল।’
সারজিস আলম আরও লিখেছেন, ‘এই ছেলেটার (হাসনাত) সমস্যা হলো এর মাথা গরম আর সব সময় গ্রেটার পার্পেপেক্টিভ চিন্তা করে। কিন্তু সত্যি এটাই যে, মাথা গরম বলেই সেই জুলাইয়ে ভিসি চত্ত্বরে গায়েবানা জানাজা শেষে যখন সবাই পুলিশের টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড আর ছোররা বুলেটে ছোটাছুটি যাচ্ছিল তখন এই ছেলেটা সর্বপ্রথম স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ওই পুলিশের দিকে দুই হাত প্রশস্ত করে এগিয়ে যায় আর বলে ‘উই আর ওপেন টু কিল্ড’! ঠিক যেমনিভাবে গতকাল গিয়েছিল।’
‘হাসনাত সেই জুলাইয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে রাজাকার-রাজাকার মিছিলের সামনের সারিতে মাঝখানে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যখন অনেকেই নিজেকে সেফ জোনে রেখেছিল। এই ছেলেটাই সর্বপ্রথম এবং একা সচিবালয়ে আনসারলীগের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে এবং পরবর্তী ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় সচিবালয় অনেকটা সুরক্ষিত হয়ে ওঠে। এই মাথা গরম, ক্ষ্যাপা ছেলেটার দোষ হচ্ছে যখনই কোথাও অস্থিতিশীল অবস্থা দেখা দেয়, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায় তখনই কোনো কিছু চিন্তা না করে সমাধানের জন্য ছুটে যায়। হোক সেটা ক্যাম্পাস, রাজপথ কিংবা অন্য কোথাও।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির এই মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘আপনারা যারা শুধু ঘরে বসে স্যোশাল মিডিয়ার ঝড় তুলতে পারেন, তাদের মতো সেইফ গেম প্লে না করতে পারাটা হাসনাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু তিক্ত সত্য এটাই যে, এই মাথা গরম স্বভাবওয়ালা ক্ষ্যাপা তরুণ প্রজন্মের কারণেই এই নতুন বাংলাদেশ।’
‘কতজনের এখন কতরকম স্বার্থ আর ধান্দা সেটা আমরা বুঝি, অপ্রত্যাশিত কিছু হলে এরা যে আবার গর্তে যাবে সেটাও জানি। কিন্তু, দিনশেষে চোখের সামনে রক্ত আর হাজারো জীবনের বিনিময়ে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা রক্ষা করতে হাসনাতরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আপনাদের মতো গুটিকয়েক ভন্ড, সুবিধাবাজ, কালপ্রিট কি বলল আর কি বিহেভ করল তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। হাসিনার পোষারা এর চেয়ে কম বলেনি বা করেনি।’
সারজিস আলম আরও লিখেছেন, ‘মিনিমাম কমনসেন্স থাকলে বোঝা উচিত কারা করছে, কেন করছে। রকেট সাইন্স না বোঝাটা। উই আর হাসনাট অ্যান্ড প্রাউড টু বি এ ফেলো-ফাইটার অফ হাসনাত।’