
জামালপুরে এক প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা অফিসের দায়িত্ব এড়িয়ে সরাসরি একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে অংশ নেন এবং সেখান থেকে দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান। শুধু তাই নয়, ওই সমাবেশে নিজের বক্তব্যের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশও করেন তিনি।
অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম মো. মনিরুজ্জামান। তিনি মেলান্দহ পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (পৌনির) এবং জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার এই কর্মকাণ্ড সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি ৫(১) ও ৫(২) লঙ্ঘনের সামিল বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
গত রোববার (০৯ নভেম্বর) বিকেলে, সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের বাটিকামারী এলাকায় বিএনপির ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নিয়ে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সরিষাবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম, যিনি জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী।
সমাবেশে উপস্থিত থেকে মনিরুজ্জামান বক্তব্য দেন এবং প্রকাশ্যে ফরিদুল কবীর তালুকদারের পক্ষে ভোট চান। ওই দিন তিনি অফিসে উপস্থিত না থাকায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, “প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক সভা বা সমাবেশে অংশ নিতে পারেন না। বক্তব্য দেওয়া তো আরও অনুচিত। আমরা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কর্মকর্তাদের সচেতন থাকার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।”
ঘটনা সম্পর্কে জানতে সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মো. মনিরুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে দুপুর ১২টার দিকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার এমন কাজ সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা লঙ্ঘন হয়, এটা আমি জানি। আমি যা করেছি, সব জেনে-শুনেই করেছি। আপনি দেখা করে সাক্ষাতে কথা বলেন। আর আমি তো আমার ফেসবুকে সব দিয়েছি, আপনারা সব জানেন।”
এদিকে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক এস.এম. আলমগীর জানান, “তিনি গত সপ্তাহেও অফিসে ছিলেন না। গতকাল ও আজও অনুপস্থিত। তার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তার ফেসবুক আইডিতে সমাবেশের ছবি ও বক্তব্যের ভিডিও দেখেছি। সেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এরপর তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”