
জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ হিসেবে আবু সাঈদ নয়, ছাত্রদল কর্মী ওয়াসিম আকরামের নাম উল্লেখ করে নতুন দাবি তুলেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত 'জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান'-এর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের বিভাগীয় সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. শাহাদাত বলেন, "আমি শহীদ আবু সাঈদের অবদান কখনোই অস্বীকার করি না। তবে ঘটনার নিরিখে যদি সময় অনুযায়ী বিচার করি, তাহলে প্রথম শহীদ হচ্ছেন ছাত্রদলের ওয়াসিম আকরাম। তিনি ১৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আর আবু সাঈদের মৃত্যুর সময় রাত।"
তিনি বলেন, ওয়াসিম ছিলেন আন্দোলনের এক সাহসী যোদ্ধা। মৃত্যুর ঠিক আগে মুরাদপুর থেকে আন্দোলনের একটি ছবি তাকে ইনবক্সে পাঠিয়েছিলেন ওয়াসিম, সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী। সেই ছবিগুলো এখনো তার কাছে সংরক্ষিত আছে। "আমরা যখন কারাগারে ছিলাম, তখন ব্যক্তিগত কারণে নয়, আন্দোলনের কারণেই ছিলাম। তাই শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব," বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ওয়াসিম আকরামের ছবি বা নাম না থাকায় সেখানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, "ওই অনুষ্ঠানে শহীদ ওয়াসিম আকরামের কোনো ছবি বা নাম ছিল না। আমি তখনই বলেছি, যেখানে শহীদ ওয়াসিম নেই, আমি সেখানে যাই না। ইতিহাস বিকৃতি আমি মেনে নিতে পারি না।"
আন্দোলন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে না গেলেও বিএনপি যেভাবে ১৬ বছর আন্দোলন করেছে, তা তারা অব্যাহত রাখত। “১৯৮৬ সালেও ছাত্র-জনতা কঠোর আন্দোলন করেছিল। এখন সময়ের প্রেক্ষাপটে মনে করি, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠন করবে।”
তিনি জানান, ওয়াসিম আকরামের নামে একটি ফ্লাইওভার ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে তার নামে একটি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। "ওয়াসিম আকরাম ও তার মতো শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখাটাই আমাদের রাজনৈতিক এবং নৈতিক দায়িত্ব," বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচি। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সমাবেশে বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী পেশাজীবী সংগঠন—ডক্টরস ফোরাম, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাডভোকেট ফোরামসহ নানা স্তরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।