
সিলেটে সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তার দাবি, এবার প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করেছে এবং সর্বদলীয় চাপের কারণেই তাদের যোগসাজশ ছিল।
রোববার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার সর্বদলীয় ঐক্যের কারণে প্রশাসনের নিশ্চয়ই যোগসাজশ ছিল। তা না হলে এখন তারা কীভাবে বের করতে পারে যে পাথরগুলো কোথায়? আবার নীরবতাও ছিল, তারা হয়তো অতটা ঝুঁকি নিতে পারছিল না।
তিনি জানান, পাথর উত্তোলন বা লুট তার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নয়। তবে তিনি একজন পরিবেশ কর্মী এবং সরকারের অংশ হিসেবে দায়িত্বশীল, তাই দায় এড়াবেন না। কিন্তু পাথর লুটের দায় তার ওপর চাপানো ঠিক হবে না।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, “এখন দেখা যাচ্ছে তারা মামলা করছে। সেখানে প্রকৃত অপরাধীদের কতটা তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে, সেটাই আমাদের নজর রাখতে হবে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, যখন তিনি এবং আরেকজন উপদেষ্টা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং হামলার শিকার হয়েছিলেন, তার পরই তিন দিনব্যাপী অভিযান চালানো হয়। সে সময় পাথর ভাঙার সব মেশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছিল। তবে চার-পাঁচ দিন পর রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়ে চাপ প্রয়োগ করে ঘোষণা দেয় পাথর তুলতে দিতে হবে। পরিবহন মালিকরাও ধর্মঘটের হুমকি দেন।
এরপর তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ২০২০ সালে যখন পাথর তোলা বন্ধ হয়েছিল, করোনার সংকটকালেও তারা দু’বার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছিল। “যদি সত্যিই জনগণের প্রতি তাদের মায়া থাকতো, তবে এমন দুর্যোগের সময় ব্যবসায়িক স্বার্থে ধর্মঘট ডাকতে পারতেন না, মন্তব্য করেন তিনি।
আবারও সর্বদলীয় প্রভাবের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রশাসন হয়তো রাজনৈতিক চাপের কারণে অতিরিক্ত ঝুঁকি নিতে পারেনি। তাহলে এখন তারা কীভাবে বের করছে পাথরগুলো কোথায়? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
জনগণের শক্তিকেই আসল শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, লুটেরা চক্রকে যখন মানুষ প্রতিরোধ করে দাঁড়িয়ে যায়, তখন রাজনৈতিক সমর্থন যতই থাকুক না কেন, শেষ পর্যন্ত মানুষের শক্তিই জয়ী হয়।
তিনি জনগণের আন্দোলনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমি জনগণকে ধন্যবাদ জানাই তারা তীব্র প্রতিবাদ করেছে। যার ফলে আজ যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে কেউ পাথর লুটের আগে দু’বার ভাববে।