
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সংগঠনকে জড়ানোর অভিযোগকে ‘মিথ্যা’, ‘অসত্য’ এবং ‘বড় ধরনের স্পর্ধা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নুরকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাশেদ খাঁন বলেন, “জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী গণঅধিকার পরিষদকে দায়ী করে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি তার বড় ধরনের স্পর্ধা। আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের সঙ্গে আমাদের সংগঠনের ন্যূনতম কোনো সম্পর্ক নেই।”
তিনি জানান, শাহবাগে অনুষ্ঠিত গণঅধিকার পরিষদের শান্তিপূর্ণ সংহতি সমাবেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ ৩০টিরও বেশি দল অংশ নেয়। কর্মসূচি শেষে হঠাৎ করে কে বা কারা জাপার কার্যালয়ে হামলা চালায়, তা তারা জানেন না। তবে তিনি নিশ্চিত করেন, “গণঅধিকার পরিষদ বা সংহতি সমাবেশে অংশ নেওয়া কোনো দলই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।”
রাশেদ খাঁন অভিযোগ করেন, “পুলিশের সামনেই জাতীয় পার্টির নেতারা মিছিল করেছেন। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছুই করেনি। আমরা দেখেছি পুলিশ ভাঙচুরের সময় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটি সরকারের একাংশ এবং প্রশাসনের একাংশের নীরব মদদ ছাড়া সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ যেমন তেজগাঁওয়ে বড় মিছিল করেছে অথচ তাদের প্রতিহত করা হয়নি, তেমনি জাতীয় পার্টিকেও মাঠে নামতে সহায়তা করা হচ্ছে। এর মানে স্পষ্ট, সরকারের একটি মহল তাদেরকে প্রটেকশন দিচ্ছে।”
রাশেদ খান জানান, এটি কোনো নতুন আন্দোলন নয়। গণঅধিকার পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছে। সাত-আট মাস আগে প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিতভাবে এই দাবি জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তার ভাষায়, “আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জড়িত জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দল দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। তাই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম যেমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে।”
জিএম কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “জিএম কাদের নিজেই প্রকাশ্যে বলেছেন, ভারতের অনুমতি ছাড়া তিনি আলোচনা সংক্রান্ত কিছু বলতে পারবেন না। এর মানে তিনি ভারতের অনুগত দাসে পরিণত হয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে কে বিরোধী দল হবে, কে সরকার হবে, এই সিদ্ধান্ত এদেশের জনগণ নেবে। কোনো প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা ভারতের মতো বহিরাগত শক্তি এতে নাক গলাতে পারবে না। তবুও যদি জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল বানানোর ষড়যন্ত্র হয়, তবে সেটা জনগণ কখনো মেনে নেবে না।”
শামীম হায়দার পাটোয়ারীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে রাশেদ বলেন, “তাতে বোঝা যায় তারা ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে গেছে।”
তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে। রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুদের মতো অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাহলে জিএম কাদের এখনো কেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন না? সরকার এ ব্যাপারে দ্বিমুখী নীতি নিলে জনগণ কখনো তা মেনে নেবে না।”
শেষে রাশেদ খাঁন বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো স্থান নেই। ফ্যাসিস্ট ও তাদের দর্শকদের বিরুদ্ধে লড়াই যতদিন না এই শক্তি বিনাশ হয়, ততদিন গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে থাকবে। জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই অংশ নিতে পারবে না। তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমও চলবে না। জনগণের স্বার্থেই এই অবস্থান আমরা ধরে রেখেছি এবং রাখব।”