
মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে শক্তির নতুন সমীকরণ গড়তে পারে সৌদি আরব—কারণ দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পেতে যাচ্ছে। তবে এই চুক্তির মূল চাবিকাঠি এখন ইসরায়েলের শর্তে আটকে আছে।
রোববার (১৬ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস–এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদির কাছে এফ-৩৫ বিক্রিতে ইসরায়েলের আপত্তি নেই। তবে শর্ত হিসেবে তারা বলেছে রিয়াদকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের দুই কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী মঙ্গলবার সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সম্ভাব্য এফ-৩৫ চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ—এই তিনটি বিষয়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে।
অ্যাক্সিওস জানায়, গত মাসে এমবিএসের সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্প বলেন, “গাজা যুদ্ধ শেষ হয়েছে, এখনই সৌদি আরবের সামনে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সঠিক সময়।”
গত শুক্রবার প্রেসিডেন্টের প্লেনে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, তিনি আশা করেন সৌদি আরব শিগগির ‘আব্রাহাম চুক্তি’-তে যোগ দেবে। পাশাপাশি তিনি নিশ্চিত করেন যে এফ-৩৫সহ সম্ভাব্য অস্ত্রচুক্তি যুক্তরাষ্ট্র বিবেচনা করছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো কূটনৈতিক অগ্রগতি ছাড়া সৌদির হাতে এফ-৩৫ তুলে দেওয়া ঠিক হবে না। তাদের দাবি নতুন সম্পর্কের বিনিময়ে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রয়োজন।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে এফ-৩৫ কেবল ইসরায়েলেরই কাছে রয়েছে। সৌদির হাতে এই উন্নত যুদ্ধবিমান এলে আঞ্চলিক সামরিক ভারসাম্য উল্লেখযোগ্যভাবে বদলে যেতে পারে এবং ইসরায়েলের ‘কোয়ালিটেটিভ মিলিটারি এজ’ সামরিক প্রাধান্যের অবস্থান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তির সময় ইসরায়েল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে এফ-৩৫ দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছিল, তবে সেটি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এবার সৌদি চুক্তিতে ইসরায়েল আরও বেশি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছে কারণ দেশ দুটি ভৌগোলিকভাবে খুবই কাছাকাছি।
এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, “সৌদি আরব থেকে ইসরায়েলে এফ-৩৫ পৌঁছাতে কয়েক মিনিটের বেশি লাগে না। তাই আমরা চাইব বিমানগুলো সৌদির পশ্চিমাঞ্চলীয় ঘাঁটিতে না রাখা হোক।”
মার্কিন কর্মকর্তারা আশা করছেন, ট্রাম্প–এমবিএস বৈঠকে এই বিষয়ে কিছুটা অগ্রগতি হবে। যদিও সৌদি ও ইসরায়েলের শর্তের মধ্যে এখনও বড় ব্যবধান রয়েছে। ইসরায়েলি দুই কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন, তারা চান ট্রাম্প এমবিএসকে কিছু শর্ত শিথিল করতে রাজি করান এবং তিন দেশের মধ্যে একটি নতুন শান্তিচুক্তির পথ তৈরি হয়।