
দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে তার নামে থাকা কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. সাব্বির ফয়েজ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আল-আমিন। তিনি কাজী নাবিল আহমেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং তার নামে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন জানান।
আবেদনে বলা হয়, সাবেক এমপি কাজী নাবিল আহমেদ সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ স্বার্থে অবৈধভাবে জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩৫৪ টাকার সম্পদ অর্জন করেন এবং তা ভোগদখলে রাখেন। এ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় তার বিরুদ্ধে গত ১৯ আগস্ট মামলা দায়ের করা হয়।
তদন্তে দেখা গেছে, কাজী নাবিল ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ৪৫টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৫৪ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৯৮৪ টাকা জমা এবং ৫৪ কোটি ২৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০৯ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮৮ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামি যেন বিদেশে যেতে না পারেন, তা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি তার নামে থাকা সম্পদ হস্তান্তর বা বিক্রির আশঙ্কা থাকায় তা অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
আদালতের আদেশে ধানমন্ডিতে ২ কোটি ২৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা মূল্যের ১১ শতক জমিসহ ছয়তলা ভবন, গুলশানের চারুত হোমস লিমিটেডে ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৬ টাকার একটি ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুরে ৬৬ লাখ ৬ হাজার ৮৬৫ টাকার ১৯৫ দশমিক ২১ শতাংশ জমি এবং পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯৯ দশমিক ২৩৯১ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব স্থাবর সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৮ কোটি ৭৫ লাখ ৬৭ হাজার ১৯২ টাকা।
এছাড়া, ৪৫টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৬১ লাখ ২ হাজার ৭৬১ টাকা এবং ৬২টি কোম্পানির নামে থাকা ২২ কোটি ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৩২১ টাকা ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।