
চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গনের এক উজ্জ্বল নাম মোশাররফ করিম। বহু বছরের অভিনয় জীবনে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি। কখনো মফস্বলের সহজ-সরল মানুষ, আবার কখনো আধুনিক শহুরে চরিত্র—সব ভূমিকাতেই দেখিয়েছেন দক্ষতার ছাপ। তবে সম্প্রতি তিনি জানালেন, ভবিষ্যতে অভিনয় ছেড়ে দিলে বেছে নিতে পারেন সাংবাদিকতার পথ।
এক সাক্ষাৎকারে মোশাররফ করিম বলেন, যদি কখনো অভিনয় থেকে সরে দাঁড়াতে হয়, তবে সাংবাদিকতাই হতে পারে তার পরবর্তী গন্তব্য।
এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, সাংবাদিকতার প্রতি তার দীর্ঘদিনের আগ্রহ। মানুষের জীবনের নানামাত্রিক গল্প ও সামাজিক অসঙ্গতি তুলে ধরার সুযোগ এই পেশায় যেভাবে থাকে, তা তাকে দারুণভাবে আকর্ষণ করে।
মোশাররফ করিম বলেন, ‘আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, অভিনয়টা ছেড়েই দেব। কিন্তু আমি দেখছি এটাতে ১০-১২ দিনের বেশি থাকতে পারি না। মনে হয়, ১০-১২ দিন আগে যেটা ভাবছি সেটা ভুল ভাবছি। মনে হয়, আমি অন্য কোনো কিছু করতে পারছি না। পারব না। আমি তো উপভোগ করিও না।’
অভিনয়ের বাইরে লেখালেখি এবং সাংবাদিকতার মতো সৃজনশীল কাজে আগ্রহ রয়েছে বলেও জানান তিনি। ‘আমার চাকরি করতে হবে, এটা ভাবতেই পারি না। আমার আবার অন্য ক্রিয়েটিভ কাজ যেমন লেখালেখি করতে ইচ্ছা করে। সাংবাদিকতা করতেও ইচ্ছা করে। অনেক আগে থেকেই আমার মনে হয়, আমি তারিক ভাইয়ের (তারিক আনাম খান) ইন্টারভিউ নিই। এটা প্রায়ই মনে হয়। অনেক সময় হায়াত ভাইয়ের (আবুল হায়াত) ইন্টারভিউ নিতে ইচ্ছে করে, দীর্ঘ ইন্টারভিউ।’
সাংবাদিকতার প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে, যা তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। ‘সাংবাদিকতার সৃজনশীলতা হচ্ছে একজন মানুষকে বের করে নিয়ে আসা যায়, উপলব্ধি সম্পর্কে জানা যায়। আলাপ-আলোচনা কী আসলে, আলাপ-আলোচনা হচ্ছে—আমি নিজে সমৃদ্ধ হব, সেই আলোচনা দেখে বা পড়ে অন্যরাও সমৃদ্ধ হবে, আনন্দিত হবে। নতুন দিক সম্পর্কে জানতে পারবে। কোনো দিন অভিনয় ছেড়ে দিলে সাংবাদিকতা করতেও পারি। এই পেশাকে আমি ভীষণ শ্রদ্ধাও করি।’
এই বক্তব্যে অভিনেতার প্রতি তার ভক্তদের প্রতিক্রিয়া হয়েছে নানা রকম। কেউ মনে করছেন, সমাজের জন্য এটি হবে ইতিবাচক একটি সিদ্ধান্ত। আবার অনেকেই চান, তিনি যেন কেবল অভিনয়ের জগতেই থাকেন।
তবে এখনই অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনার কথা জানাননি মোশাররফ করিম। বরং তার মন্তব্যে উঠে এসেছে একজন শিল্পীর সামাজিক সচেতনতা ও বিকল্প সৃজনশীলতার প্রতি আকর্ষণ—যা তার ভাবনার পরিধি ও অন্তর্দৃষ্টির পরিচয় দেয়।