
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের কালিরচর গ্রামে মেঘনা নদীসংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি রক্ষার দাবিতে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ড্রেজার শ্রমিকদের ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা দুইটি ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। ওই দিনই উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে সদর বালুমহাল এলাকা থেকে দুইজন ড্রেজার শ্রমিককে আটক করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আটককৃতরা হলেন—আব্দুর রহমান ও মো. জাকির।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, নির্ধারিত মহালের বাইরে নদী ঘেঁষে তাদের ফসলি জমি ও বসতভিটার নিকট থেকে বালু উত্তোলন করছিল একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় তারা বাধা দিতে গেলে এই উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে। বিক্ষুব্ধ জনতা দুটি স্থির ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেয়।
কালিরচর গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, “নৌ-পথের ডাকাত কিবরিয়া মিজি, জিএস মনির এবং বাচ্চু মেম্বার অবৈধভাবে আমাদের মৌজার জমি থেকে বালু কাটছেন। যেখানে তারা উত্তোলন করছেন, সেটি আমাদের সম্পত্তি।”
স্থানীয়দের দাবি, ভাসানচর মৌজার বালুমহালের ইজারা থাকলেও কার্যক্রম চলে কালিরচর এলাকায়। এতে ফসলি জমি হারানোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। গ্রামের বাসিন্দা খলিল মিজি বলেন, “তিন ফসলি জমির ওপর ভাঙনের হুমকি। গ্রামের মানুষ জমি রক্ষা করতে গিয়ে বাধা দিয়েছে।”
রিনা বেগম নামের এক নারী বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। বাড়ি ঘর ভেঙে গেলে কোথায় যাব? যারা বালু কাটে তারা বড়লোক। আমাদের কথা কেউ শোনে না। আমরা এর সুষ্ঠু প্রতিকার চাই।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভাসানচর বালুমহালের ইজারাদার জিএস মনিরুজ্জামান মনির বলেন, “আমরা বৈধভাবে ইজারা নিয়েছি এবং প্রশাসনের নির্ধারিত স্থানে নদীর গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছি। তবুও আমাদের বিরুদ্ধে অবৈধ বালু কাটার অভিযোগ আনা হচ্ছে।”
চরআব্দুল্লাহ নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, “সকালে আমরা ঘটনাস্থলে অভিযান চালাই। পরে দুইজনকে আটক করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনিয়ম পেলে আমাদের অভিযান চলবে।”
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম হাসানুর রহমান বলেন, “বালুমহাল নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করি। পরে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আইন ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”