
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, “রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে যদি অনেক আগে থেকে কার্যকর প্রচেষ্টা চালানো হতো, তাহলে বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে নিজেকে প্রচার করতে চেয়েছিলেন, যা মূল বিষয়কে সরিয়ে দিয়েছে। এর ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ, সুদানের গৃহযুদ্ধ ও গাজায় গণহত্যার মতো আন্তর্জাতিক সংকটের দিকে বৈশ্বিক মনোযোগ চলে গেছে।”
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম জানান, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করেন ১৯৭৮, ১৯৯১ ও ২০০৬ সালে। সবচেয়ে বড় ঢল এসেছিল ২০১৭ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে, তখন প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা দেশটিতে প্রবেশ করে। এরপর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা এ দেশে এসেছে, যা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়া পর্যন্ত এই সংকট কার্যত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিস্তৃতভাবে আলোচনায় আসেনি।
প্রেস সচিব বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় সাফল্য হলো এই সংকটকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে আনা। প্রফেসর ইউনূসের অনুরোধে এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের চারজন নেতা এবং শীর্ষ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বক্তব্য দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এই কনফারেন্সে ৯৬ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলস্টোন।”
তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশে সফর করেছেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। এছাড়া কক্সবাজারে ও কাতারের দোহায় রোহিঙ্গা বিষয়ক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। শফিকুল আলম বলেন, “প্রথম দিন থেকেই এই সরকার বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস ছিল। প্রফেসর ইউনূস হাই-রেপ্রেজেন্টেটিভ অফিস শুরু করেন। আমাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফলে এখন গোটা বিশ্ব এই সংকট সম্পর্কে সচেতন। এর ফলাফল হয়তো এখন দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু সামনের দিনগুলোতে তা অবশ্যই মিলবে।”