
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, তার সঠিক সুবিধা পাবে শুধুমাত্র স্বৈরাচারী শাসক ও তাদের সহযোগী।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা-বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল নানা দাবি তুলে যেমন পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। তবে এর বাস্তব প্রভাব বিবেচনা করা জরুরি। নির্বাচন প্রলম্বিত হলে লাভবান হবে যারা স্বৈরাচারের সময়ের সুবিধাভোগী ছিলেন। তারা প্রশাসন, বিচারালয়, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে আছে। দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে নিশ্চিত করছে নির্বাচন পিছিয়ে যাবে। ফলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে উপকার পাবে পলায়নকৃত স্বৈরাচার। যারা বুঝে না বুঝে এই দাবিগুলো তুলে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছেন, তারা কি পরোক্ষভাবে স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করছেন, তা কি ভাবেননি?
তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, আর বিলম্ব নয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগের মধ্যে নির্বাচনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনকে রিকোয়েস্ট করেছেন। এখন আমরা চাই, নির্বাচনী রোডম্যাপ তৎক্ষণাৎ ঘোষণা করা হোক।
ডা. জাহিদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি কেউ স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করেন এবং নির্বাচনের বিষয়ে মানুষের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি করেন, তাহলে উপকার পাবে পলায়নকৃত স্বৈরাচার। এটি কি ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই হয়েছিল, তা সকলকে মনে রাখতে হবে। রাজনীতিকে রাজনীতির মাধ্যমে মোকাবিলা করুন। কোনও অবস্থাতেই গায়ের জোরে কিছু চাপিয়ে দেবেন না। গায়ের জোর যদি ন্যায়ের জন্য ব্যবহার করা হয়, মানুষ প্রশংসা করবে, অন্যায়ের জন্য ব্যয় করলে কেউ সাধুবাদ দেবে না।
তিনি পিআর পদ্ধতিসহ নির্বাচনের ধারা নিয়ে সতর্ক করে বলেন, যদি পিআর পদ্ধতি চালু হয়, দেশের রাজনৈতিক ধারা ধ্বংসের দিকে যাবে। তিনদিন পরপর সরকার পরিবর্তন হবে। জনগণ বুঝবে না সে কাকে ভোট দিয়েছে, কে তার প্রতিনিধি, এবং কে এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংস্থার সভাপতি অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম। বক্তব্য রাখেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহবুব হোসেন, আবুল কাশেম চৌধুরী, গাজী মোশাররফ হোসেন, আজহারুল ইসলাম প্রমুখ।