
গাজায় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এরই মধ্যে রবিবার (২৪ আগস্ট) ইয়েমেনের রাজধানী সানায় আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। কাতারভিত্তিক আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত এবং ৮৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক হুথি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
হুথি-সংযুক্ত আল মাসিরাহ টেলিভিশন জানিয়েছে, টার্গেট করা হয়েছিল সানার একটি তেল স্থাপনা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রকে। ইসরায়েলের দাবি, তাদের হামলার আরেকটি লক্ষ্য ছিল প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস, যা নাকি একটি সামরিক কমপ্লেক্সের ভেতরে অবস্থিত।
হুথিদের বক্তব্য, গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ ও হামলার প্রতিবাদ জানাতে গত শুক্রবার তারা ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অবশ্য বলছে, হুথি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ধারাবাহিক আক্রমণের জবাবেই এই হামলা চালানো হয়েছে। তাদের দাবি, ইয়েমেন থেকে একাধিকবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছিল ইসরায়েলি ভূখণ্ডের দিকে।
আল মাসিরাহর খবরে জানানো হয়, হুথিদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলোকে আংশিকভাবে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে এবং অনেকগুলোকে ফিরে যেতে বাধ্য করেছে। আল জাজিরার যাচাইকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার পর সানার আকাশে আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠে যাচ্ছে।
হুথি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-বুখাইতি এক বিবৃতিতে বলেন, “যত ত্যাগই স্বীকার করতে হোক না কেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন আমাদের গাজাকে সমর্থন করা থেকে বিরত করতে পারবে না।”
অন্যদিকে, হুথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবেদ আল-থাওর অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার ভাষায়, “তারা বেসামরিক অবকাঠামোকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করে ইয়েমেনিদের কষ্ট বাড়াচ্ছে।”
ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস একে ‘আরব সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইনের নগ্ন লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়েছে। একইসঙ্গে তারা হুথিদের অবস্থানকে ‘সাহসী’ বলে প্রশংসা করে সব আরব ও মুসলিম দেশকে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত এক মাস ধরে ইসরায়েল ইয়েমেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দরগুলোতে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। এর আগেও গত সপ্তাহে ইসরায়েলি নৌবাহিনী সানার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আঘাত হানে।
হুথিরা গত শুক্রবার জানিয়েছিল, তারা ইসরায়েলের দিকে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও দুটি ড্রোন ছুড়েছে। তাদের অঙ্গীকার, গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং অবরোধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা ফিলিস্তিনের পাশে থাকবে।