
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি আবাসিক এলাকায় নেমে আসে অভিবাসন বিভাগের কঠোর অভিযান, যেখানে ধরা পড়ে বিপুলসংখ্যক অবৈধ অভিবাসী। মালয়েশিয়ার রাজধানীর বুকিত আঙ্কাসা এলাকার পান্তাই ডালাম অ্যাপার্টমেন্টে চালানো এই ঝটিকা অভিযানে ২৭ জন বাংলাদেশিসহ মোট ১৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ৩১ ডিসেম্বর ভোরে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় দুই সপ্তাহের গোয়েন্দা নজরদারির পর অভিবাসন বিভাগের প্রায় ৩৫ জন কর্মকর্তার একটি দল ভোরের দিকে ব্লক ২১ পান্তাই ডালাম অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান শুরু করে। অভিযানের সময় প্রায় ২০০ জনের কাগজপত্র যাচাই করা হয় এবং অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৩৩ জনকে আটক করা হয়।
ব্লক ২১-এর আবাসিক কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সুহাইলী তাম্বি বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে এই অ্যাপার্টমেন্টের চিত্র বদলে গেছে। বর্তমানে এখানকার প্রায় ৮০ শতাংশ বাসিন্দাই বিদেশি।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “এই বিদেশি নাগরিকদের অনিয়ন্ত্রিত আচরণ বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিকেল ৬টার পর বারান্দা ও করিডোরগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকে যা অনেকটা বাজারের মতো মনে হয়। আমাদের এলাকার তরুণীরা কাজ থেকে ফিরতে ভয় পায়। তারা যত্রতত্র পানের পিক ফেলে নোংরা করে এবং লিফট ভাঙচুর করে। এমনকি অনেকে মদ্যপ অবস্থায় সিঁড়িতেই ঘুমিয়ে থাকে এবং পরিবেশ নোংরা করে।”
অভিযানে উঠে আসে চরম অব্যবস্থাপনার চিত্র। দেখা যায়, প্রতিটি তিন কক্ষের ফ্ল্যাটে গাদাগাদি করে প্রায় ১৫ জন করে বসবাস করছেন। ফ্ল্যাটগুলোর পরিবেশ ছিল অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। জানা গেছে, স্থানীয় কিছু মালিক এসব ফ্ল্যাট বিদেশিদের কাছে মাসে ১৮০০ থেকে ২০০০ রিঙ্গিত ভাড়ায় দিয়ে থাকেন। পাশের শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের উপস্থিতিই এখানে বেশি লক্ষ্য করা যায়।
কুয়ালালামপুর অভিবাসন বিভাগের পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সাউপি ওয়ান ইউসুফ জানান, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, সেকশন ৫৫ই, ৬(১)(সি) এবং ১৫(১)(সি) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আটককৃতদের বর্তমানে বুকিত জলিল এবং কুয়ালালামপুর অভিবাসন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে।