
ইরান বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে প্রথমবারের মতো একজন সুন্নি মুসলিমকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠাচ্ছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকায় নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জলিল রহিমি জাহনাবাদী ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তেহরান টাইমস জানিয়েছে, জলিল রহিমি ইরানের ১৪তম সরকারের প্রথম সুন্নি মুসলিম রাষ্ট্রদূত। ইরানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ শিয়া মুসলিম হলেও এই পদে সুন্নি মুসলিমকে নিযুক্ত করা হচ্ছে।
জলিল রহিমি দুইবার ইরানের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতি কমিশনেরও দায়িত্বে ছিলেন।
একই দিনে আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত নতুন রাষ্ট্রদূত ইসাব আল-হাবিবও আব্বাস আরাগচির সঙ্গে দেখা করেন। ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী নতুন রাষ্ট্রদূতদের ঢাকায় দায়িত্বভার গ্রহণের আগে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করেন।
ইরান ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক আগে বাংলাদেশকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ধীরে ধীরে তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
দুই দেশের সম্পর্ক শুধু ধর্মীয় ঐক্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহ্যগতভাবে ইরান বাংলাদেশের চা, চামড়া ও পাটজাত পণ্যে আগ্রহী। বর্তমানে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের একটি বড় অংশ জ্বালানি, বিশেষ করে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া তারা দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক ফোরামে বিভিন্ন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান রাখে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইরান বাংলাদেশের অবকাঠামো নির্মাণ, জ্বালানি সরবরাহ এবং কৃষি উন্নয়নে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই বিনিয়োগ ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে দীর্ঘকাল ধরে প্রভাবশালী।
সূত্র: তেহরান টাইমস