
দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন নাইম ইসলাম, সাগর ইসলাম, আহাদ শেখ, বিপ্লব, নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ, জাহাঙ্গীর, সোহেল মিয়া, হাসান, মোহাম্মদ রাসেল, আব্দুল বাকের শেখ ওরফে আলামিন, রাশেদুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, আবুল কাশেম, প্রান্ত সিকদার এবং রাজু আহমেদ।
ঘটনার প্রেক্ষিতে রোববার রাতেই ঢাকার তেজগাঁও থানায় প্রথম আলো ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নাশকতা, সন্ত্রাস বিরোধী আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে। মামলা দাখিলের পর ১৫ জনকে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালতের সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পরিদর্শক আবদুল হান্নান তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামি বিপ্লব ও হাসানের পক্ষে অ্যাডভোকেট হোসেন আহামাদ, আর বাকিদের পক্ষে এমদাদউল্লাহ মোল্লাহ ও মো. আব্দুল্লাহ জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বর রাত সোয়া ১১টার দিকে ২০ থেকে ৩০ জন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে মিছিল করে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে আসে। পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট ছড়িয়ে আরও লোক জড়ো করে। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে তারা কার্যালয়ের ফটকের কাচ ও শাটার ভেঙে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা আসবাবপত্র, নথি এবং অন্যান্য মালপত্র ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, হামলার সময় দুষ্কৃতকারীরা ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নষ্ট করে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে সাক্ষ্য প্রমাণ নষ্ট করে। তারা ফায়ার সার্ভিসকেও আগুন নেভাতে বাধা দেয়। শুধু লুটপাট করা সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা।
ঘটনার পর প্রথম আলোর হেড সিকিউরিটি অফিসার মেজর (অব.) মো. সাজ্জাদুল কবির বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।