
রাজধানীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’ থামিয়ে দিয়েছে পুলিশ, যার ফলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মাজার রোড এলাকায়। রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শহীদ মিনার থেকে বের হওয়া মিছিলটি মাজার গেটের সামনে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে শহীদ মিনার থেকে থালা-বাটি হাতে মিছিলটি শুরু হয়। স্লোগানে মুখরিত এ মিছিলে শিক্ষকরা জানান দেন তাদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও বঞ্চনার গল্প। “যৌক্তিক আন্দোলন, মেনে নাও নিতে হবে”, “২০% বাড়িভাড়া দিতে হবে”, “ভাতা মোদের দাবি নয়, অধিকার অধিকার”, “আবু সাইদের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই” - এসব স্লোগানে প্রতিবাদ জানান তারা।
পুলিশ ও বিজিবির উপস্থিতিতে বর্তমানে শিক্ষক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন মাজার রোড এলাকায়।
মিছিলের একপর্যায়ে শিক্ষক এনামুল হক স্বপন বলেন, “আমরা এ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছি, জাতির মেরুদণ্ড শক্ত করছি। কিন্তু আজও নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির নিশ্চয়তা পাই না। বছরের পর বছর ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নানা প্রতিশ্রুতি শুনেছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো ফল মেলেনি। আমরা এবার প্রস্তুতি নিয়েই রাজপথে নেমেছি, দাবি আদায় ছাড়া ফিরে যাব না।”
এই কর্মসূচির ঘোষণা এসেছিল শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে, যখন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জানান, “আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ছি, কিন্তু আমাদের স্বীকৃতি ও নিরাপত্তা এখনো নিশ্চিত নয়। খালি থালা হাতে নামা আমাদের বঞ্চনা ও অসম্মানের ভাষা।”
এর আগে গত ১২ অক্টোবর প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানকালে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরদিন ১৩ অক্টোবর থেকে শিক্ষকরা কর্মবিরতি শুরু করেন।
সরকার ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষকরা। তাদের দাবি, সরকারকে অবশ্যই ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা বাস্তবায়ন করতে হবে, অন্যথায় আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি তাদের।