
নিউইয়র্ক সিটির আসন্ন মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানিকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে জয়ী হলে মামদানির পরামর্শক হিসেবে কাজ করার প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি।
রবিবার (২ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওবামা ও মামদানির এই ফোনালাপের খবর প্রথম প্রকাশ করে নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওবামা ফোনে মামদানির নির্বাচনী প্রচারণার প্রশংসা করেন এবং জানান, তিনি মামদানির জন্য “একজন বন্ধুত্বপূর্ণ পরামর্শদাতা” হিসেবে পাশে থাকতে চান।
ওবামার সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়টি পরে নিশ্চিত করেন মামদানির মুখপাত্র ডোরা পেকেচ। তিনি বলেন, “জোহরান মামদানি ওবামার শুভেচ্ছা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা নিউইয়র্কে নতুন ধরনের রাজনীতি গড়ে তোলার প্রয়োজন নিয়েও আলোচনা করেছেন।”
উগান্ডায় জন্ম নেওয়া এই প্রগতিশীল রাজনীতিক বর্তমানে নিউইয়র্ক রাজ্যের আইনসভার সদস্য। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, মেয়র নির্বাচনে তিনি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন।
কুয়োমো ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে মামদানির কাছে পরাজয়ের পর এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলস সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কার্টিস স্লিওয়া।
গত ২৪ জুন প্রাইমারিতে মামদানির চমকপ্রদ জয়ের পর থেকেই তার প্রচারণা ব্যাপক গতি পেয়েছে। তার সমর্থনে এখন পর্যন্ত কামালা হ্যারিস, ক্যাথি হোচুলসহ ডেমোক্র্যাট পার্টির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা এগিয়ে এসেছেন। এছাড়া, মামদানি ছোট ছোট দাতাদের কাছ থেকে নিয়মিত অনুদানও পাচ্ছেন, যা তার তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণাকে আরও শক্তিশালী করছে।
তবে মামদানির নীতিমালা—যেমন ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধি, করপোরেট ট্যাক্স বাড়ানো, ভাড়া স্থগিতের প্রস্তাব এবং সরকারি আবাসন বৃদ্ধি—শহরের আর্থিক মহলে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ব্যবসায়িক মহল আশঙ্কা করছে, এসব উদ্যোগ নিউইয়র্কের অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জোহরান মামদানির উত্থান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জন্য যেমন একটি তরুণ প্রজন্মের সুযোগ, তেমনি এটি বিতর্কের ঝুঁকিও বয়ে আনছে। তার সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা তরুণ ভোটারদের আকর্ষণ করলেও, ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান রিপাবলিকানদের হাতে নতুন আক্রমণের অস্ত্র তুলে দিতে পারে।