
গাজার বিধ্বস্ত জনপদে টানা ২২ মাসের ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। পাশাপাশি অবরোধ আরোপের কারণে চরম খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এই ভূখণ্ডের বাসিন্দারা। এমন মানবিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে সহায়তার হাত বাড়াচ্ছে পাকিস্তান। দেশটি নতুন করে গাজায় পাঠাচ্ছে আরও ১০০ টন মানবিক সহায়তা।
রোববার (৩ আগস্ট) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, এই চালানে থাকবে প্রস্তুতকৃত খাবার, শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য এবং ওষুধ। সোমবার ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে এই সহায়তা পাঠানো হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নির্দেশে এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রোববার এ উপলক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইনাম হায়দার মালিক।
এছাড়া অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনডিএমএ এবং আলখিদমাত ফাউন্ডেশনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, “পাকিস্তান এই সংকটময় মুহূর্তে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে আছে এবং তাদের প্রয়োজন মেটাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছি এবং বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমারেখা অনুযায়ী একটি টেকসই দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক রাজনৈতিক সমাধানে গুরুত্ব দিচ্ছি।”
অনুষ্ঠানে পাকিস্তানে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত, ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে ইসলামাবাদ ও পাকিস্তানি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবার নিয়ে পাকিস্তান থেকে গাজায় ১৭তম চালান পাঠানো হলো। ১০০ টন সহায়তার এই ধাপে রয়েছে ৬৫ টন রেডি-টু-ইট খাবার, ২০ টন গুঁড়া দুধ, ৫ টন বিস্কুট এবং ১০ টন ওষুধ। পুরো সহায়তা কর্মসূচির আওতায় মোট ২০০ টন ত্রাণ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যার দ্বিতীয় দফা সহায়তা শিগগিরই পাঠানো হবে।
এ চালান পাঠানোর পর গাজায় পাকিস্তানের দেওয়া মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াবে ১ হাজার ৭১৫ টনে। পরবর্তী চালান পৌঁছালে তা বাড়বে ১ হাজার ৮১৫ টনে।