
ছাত্র উপদেষ্টারা পদত্যাগ করবেন এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সরকারি কর্মকাণ্ডে গতি শ্লথ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তার মতে, দেশে সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর পারস্পরিক সহযোগিতা অটুট থাকলেও রাজনৈতিক চাপের কারণে অন্তর্বর্তী সরকার অনেক কিছু করতে পারছে না।
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত গণমাধ্যমের স্বনিয়ন্ত্রণ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি। এ আয়োজনকে সহায়তা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন।
মাহফুজ আলম জানান, সাংবাদিক সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও নির্দেশনার পরও কাজ তেমন অগ্রসর হয়নি। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও জামায়াত প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় ভাগাভাগি করে নিয়েছে। আমলারা এখন পরবর্তী সরকারের অপেক্ষায় আছেন। আর আমি অপেক্ষায় আছি, কবে নেমে যাব। যে কোনো সময় নেমে যেতে পারি, তাই পদত্যাগের দাবি করে লাভ নেই।
তিনি আরও বলেন, গত দু’মাস ধরে আমি অনিশ্চয়তায় আছি। মে মাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি তুলতে শুরু করেছে। আমার সরকারি বাসা থেকেও এসব স্লোগান শুনতে পেতাম।
তথ্য উপদেষ্টা অভিযোগ করেন, অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বাংলাদেশে গোষ্ঠী স্বার্থের জন্য সবাই কাজ করে, জাতীয় স্বার্থের প্রতি কারও দৃষ্টি নেই। এজন্য হতাশা তৈরি হয়েছে। আমি স্বল্প সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়েছি। যতটুকু সম্ভব করছি, তবে বয়স ও অভিজ্ঞতা কম হওয়ায় জনগণ আমাদের ক্ষমা করবে বলে আশা রাখি।
সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম বলেন, এই আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং যেকোনো মূল্যে বর্তমান সরকারের মেয়াদে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। খসড়া থেকে বিল পাস পর্যন্ত ১৮ ধাপ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, দু’মাস আগে প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনো দ্বিতীয় ধাপেই রয়েছে।
গণমাধ্যমকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সব গোষ্ঠী স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে এটি নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ও ঐকমত্যের ওপর।
তিনি আরও যোগ করেন, অন্য উপদেষ্টারা দায়িত্ব নেয়ার এক বছর পরও কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারেননি, আর তিনি এমন এক সময় দায়িত্ব নিয়েছেন যখন প্রতিদিনই পদ ছাড়তে হতে পারে এমন অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। তবে বর্তমান সরকারের মেয়াদে সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।