
জার্মানির নতুন লিঙ্গ-নিবন্ধন আইনকে কাজে লাগিয়ে এক উগ্র ডানপন্থি পুরুষ কারাবন্দি তার লিঙ্গ পরিচয় নারী হিসেবে পরিবর্তন করেছেন, যাতে তিনি নারী কারাগারে সাজা ভোগ করতে পারেন। জার্মান দৈনিক ফ্রাংকফুর্টার অ্যালগেমাইনে সাইটুঙ্গ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ১৮ মাসের কারাদণ্ডে কেমনিটজ নারী কারাগারে রয়েছেন ওই ব্যক্তি।
সোভেন লিবিচ নামে পরিচিত এই ব্যক্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত নব্য-নাৎসি গোষ্ঠী ব্লাড অ্যান্ড অনার-এর সাবেক সদস্য। ২০২৩ সালের জুনে স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের হ্যালে জেলা আদালত ঘৃণা ছড়ানো, মানহানি ও অপমানজনক আচরণসহ একাধিক অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। পরে আপিল করেও ব্যর্থ হন তিনি।
২০২৩ সালের শেষদিকে লিবিচ ‘স্ব-সংকল্প আইন’-এর আওতায় নিজের লিঙ্গ পরিচয় বদলে নারী হন। জার্মানিতে ওলাফ শলৎস সরকারের সময় পাস হওয়া এ আইন ২০২৩ সালের নভেম্বরে কার্যকর হয়। নতুন আইনের অধীনে কেউ চাইলে আদালতের রায় ছাড়াই শুধু রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে নিজের লিঙ্গ ও প্রথম নাম পরিবর্তন করতে পারেন।
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ লিবিচ তার সরকারি পরিচয়পত্রে লিঙ্গ পরিচয় পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে নারী করেন এবং নতুন নাম গ্রহণ করেন মার্লা-সভেনজা।
তার দাবি, পুরুষদের কারাগারে বৈষম্য থেকে বাঁচতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে জনসমক্ষে তার চেহারা ও আচরণ এই দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আদালতে হাজিরার সময় তাকে চিতাবাঘ প্রিন্টের টপ, বড় টুপি, মেকআপ ও হ্যান্ডব্যাগে দেখা গেলেও তিনি গোঁফ রেখে দিয়েছেন।
জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে, লিবিচ একজন অতি-ডানপন্থি ও চরমপন্থি হিসেবে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সক্রিয়। তাকে কালো পোশাক, নাৎসি ধাঁচের আর্মব্যান্ড এবং লাল-সাদা-কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা গেছে। ওই আর্মব্যান্ডে লেখা ছিল ‘সিচেহাইটস-অ্যাবটেইলুং’ (এসএ)—যা হিটলারের স্টর্মট্রুপার বাহিনীর নামের প্রতিরূপ।
৫৩ বছর বয়সী লিবিচ অতীতে প্রাইড পতাকা পুড়িয়ে ট্রান্সজেন্ডারদের ‘পরজীবী’ বলে মন্তব্য করেছিলেন, যা তার লিঙ্গ পরিবর্তনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
প্রধান সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, কারাগারে তার উপস্থিতি নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য হুমকি কি না, তা মূল্যায়ন করা হবে। প্রয়োজনে তাকে অন্য কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।