
ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বাহিনী। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এ অভিযানে দুটি ভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে একটি প্যালেস্টাইন-২ ক্লাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি জুলফিকার ক্ষেপণাস্ত্র। এগুলো সরাসরি তেল আবিবের কৌশলগত স্থানে নিক্ষেপ করা হয়।
ইয়াহিয়া সারির ভাষ্যে, হামলার পর লাখো “অবৈধ বসতি স্থাপনকারী” আশ্রয়কেন্দ্রে পালাতে বাধ্য হয় এবং বেন গুরিওন বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, গাজার জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং ইয়েমেনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব হিসেবেই এই আক্রমণ চালানো হয়েছে।
হুথি মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জায়নবাদী সরকার কখনই নিরাপত্তা ও শান্তি অনুভব করবে না। আগামী পর্যায়ে অভিযান আরও তীব্র হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ‘আল-আকসা স্টর্ম’ নামে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আকস্মিক প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। আল-আকসা মসজিদে দখলদার বাহিনীর আক্রমণের প্রতিক্রিয়াতেই এ অভিযান পরিচালিত হয়। সেই থেকে ইয়েমেন প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে।
অন্যদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৬৩ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ, যাদের মধ্যে অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
চলতি বছরের শুরুতে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর ২৭ মে থেকে ইসরায়েল জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে আলাদা ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে। তবে এই উদ্যোগ পরবর্তী সময়ে অঞ্চলজুড়ে খাদ্যঘাটতি ও দুর্ভিক্ষকে তীব্র করে তোলে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, ইসরায়েলি বাহিনী এখনো খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে, যাতে শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি, গাজায় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের জন্য ইসরায়েল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।