‘ইয়াছিনকে ধানের শীষ না দিলে বিএনপি ছাইড়া জামায়াতে যোগ দিমু’

‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর! কুমিল্লাতে যদি হাজী ইয়াছিন ছাড়া অন্য কেউ ধানের শীষ নিয়া আসে পিঠের চামড়া রাখব না। ইয়াছিন ভাইকে ভালোবেসে পরিবার ছেড়েছি, মেম্বার পদ ছেড়েছি । মনে রাখবেন; কুমিল্লার গণমানুষের নেতা যদি নমিনেশন না পায়, তাহলে কুমিল্লার বিএনপি আর বিএনপি থাকবে না।’

এক ভিডিও বার্তায় বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে কুমিল্লার আমড়াতলী ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত ভাইরাল হয়। জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া চার মিনিটের এই ভিডিও বার্তায় সাবেক মেম্বার কামাল হোসেন আরও বলেন, “হাজী ইয়াছিন যদি নমিনেশন না পায়; কুমিল্লার মাটি পর্যন্ত রাখব না। প্রয়োজনে আমরা বিএনপি ছেড়ে জামায়াতে যোগ দিমু। বিএনপির জন্য দেশ ছাড়ছি, আবার আওয়ামী লীগের জন্য দেশে নামব। গত ১৭ বছর কুমিল্লার মাটি মানুষের সঙ্গে মিশে পাশে ছিল ইয়াছিন ভাই। এখন কোনো আউল্লা বাউল্লারে নমিনেশন দিলে কেউ মেনে নেব না।”

তিনি বলেন, “কুমিল্লায় আমার কেন্দ্রের ভেতর কেমনে মনিরুল হক চৌধুরী ঢোকে দেখে নেব। আমরা তো আওয়ামী লীগ আমলেই এমপি চেয়ারম্যানকে পাত্তা দেইনি। তারেক রহমান সাহেবকে অনুরোধ করব; যদি কুমিল্লায় ইয়াছিন ভাই নমিনেশন না পায়, গত ১৭ বছর যেমন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, তেমনি বিএনপির বিরুদ্ধেও লড়াই করে যাব।”

মির্জা ফখরুলকে সরাসরি টার্গেট করে তিনি বলেন, “আপনি কার প্রেসক্রিপশনে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম বলছেন? আমাদের সব আপদ বিপদে কাজ করবে ইয়াছিন; আর আপনি মনে করছেন কোন এক মিয়ারে নমিনেশন দিলেই আমরা বিএনপি মেনে ফেলব, এটা অসম্ভব।”

কামাল হোসেন আরও উল্লেখ করেন, “হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিনের সঙ্গে রাজনীতি করতে এসে ১৭ বছর মামলা, হামলা, নির্যাতনের শিকার হইছি। আবার ১৭ বছর বিএনপির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করব মনে রাইখেন। কুমিল্লা বাসীর কাছে অনুরোধ করব, হাজি ইয়াছিন ভাই ছাড়া অন্য কেউ বিএনপি থেকে আসলে সবাই মিলে আওয়ামী লীগের মতো তাদের বিরুদ্ধেও লড়াই করব।”

কুমিল্লা-৬ আদর্শ সদর-সদর দক্ষিণ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নানা জল্পনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত আসনে মনোনয়ন পান বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী। এর আগে মনির চৌধুরীর বাইরে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন।

দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দলের সেবা করে আসা মনোনয়ন বঞ্চিত বিএনপি নেতা হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন এবং তার সমর্থকদের মধ্যে হতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।