
নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন রাজধানী কাঠমান্ডুর সীমা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রবিবার রাত থেকে কাঠমান্ডু, ললিতপুর ও ভক্তপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
তিন জেলার জেলা প্রশাসন পৃথক বিবৃতিতে জানায়, নতুন নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে।
প্রসঙ্গত, নেপালের সুপ্রিম কোর্ট গত বছর সব সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সরকারি নিবন্ধনের নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির সরকার ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দেয়। কিন্তু সময়সীমা শেষ হলেও ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি প্ল্যাটফর্ম নিবন্ধিত না হওয়ায় ৪ সেপ্টেম্বর থেকে এগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে সরকার।
এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ তরুণ প্রজন্ম। জেন জি নামে পরিচিত এ তরুণ সমাজ নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিন থেকেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিলেও রবিবার থেকে বিক্ষোভে নামে এবং সোমবার তা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে।
কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবির পাশাপাশি এখন সরকারের পদত্যাগও চাইছে।
চাপের মুখে রবিবারই পদত্যাগ করেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও পদত্যাগের দাবির স্লোগান উঠতে শুরু করেছে।
একইদিন রাতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের শান্ত হয়ে ঘরে ফেরার আহ্বান জানানো হয়।
তবে বিক্ষোভকারীরা এই সিদ্ধান্তে সাড়া দেবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট