
উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ও মামলার জট কাটাতে সরকার চালু করল নতুন নিয়ম, যা সম্পত্তি বণ্টনের প্রক্রিয়ায় আনছে বড় পরিবর্তন। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে উত্তরাধিকার সম্পত্তি ভাগাভাগি ও হস্তান্তরের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট ও আইনি কাঠামো বাধ্যতামূলক করা হলো।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত কোনো সম্পত্তি বিক্রি, নামজারি বা রেকর্ড সংশোধনের আগে আপোষ বণ্টননামা দলিল তৈরি করা বাধ্যতামূলক হবে। সংশ্লিষ্ট সব ওয়ারিশের সম্মতিতে এই দলিল সম্পন্ন না হলে ভবিষ্যতে ওই সম্পত্তি হস্তান্তর বা নিবন্ধন করা যাবে না।
কেউ যদি উত্তরাধিকারভুক্ত কোনো জমি বিক্রি করতে চান, তাহলে এখন থেকে তাকে অবশ্যই জমিটির সব ওয়ারিশকে অন্তর্ভুক্ত করে আপোষ বণ্টননামা দলিল প্রস্তুত করতে হবে। এই দলিল ছাড়া জমি বিক্রি বা নামজারি সম্ভব হবে না। সরকারের উদ্দেশ্য হলো সম্পত্তির ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করা এবং একক সিদ্ধান্তে বা ব্যক্তিগত ইচ্ছার ভিত্তিতে সম্পত্তি বিক্রির প্রবণতা বন্ধ করা।
একই সঙ্গে, যে কোনো সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয়ের সময় সংশ্লিষ্ট পক্ষকে আপোষ বণ্টননামা দলিল দেখাতে হবে। কোনো সম্পত্তির নামজারি বা রেকর্ড সংশোধন সম্পন্ন হলেও মালিকানা তখনই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে, যখন তা এই দলিলের মাধ্যমে আইনগতভাবে নিশ্চিত থাকবে।
এই নিয়ম শুধু প্রশাসনিক দিক থেকেই নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক পরিবার এখনো অনানুষ্ঠানিকভাবে সম্পত্তি ভাগ করে বসবাস করছে, যা ভবিষ্যতে আইনি বিরোধের কারণ হতে পারে। একবার আপোষ বণ্টননামা দলিল সম্পন্ন হলে তা বাতিল করার সুযোগ থাকবে না, ফলে ভবিষ্যৎ বিরোধের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩-এর বিধিমালার আওতায়, নতুন এই নিয়ম অমান্য করে কেউ সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয় করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই নাগরিকদের আইন সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত সব প্রক্রিয়ায় সঠিক নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সরকারের এই পরিবর্তনের ফলে উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ও জটিলতা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং সম্পত্তি বণ্টন ও মালিকানা নির্ধারণে একটি স্বচ্ছ ও সুসংহত পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হবে।