
ফরিদপুরে ইসলামপন্থি দলগুলোর মতবিনিময় সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “শাপলা চত্বর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ফ্যাসিস্টদের অত্যাচারে মায়েদের আর্তনাদ এখনো থামেনি। অথচ তখনই স্বার্থান্বেষী এক শ্রেণি চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্টেশন ও ঘাট দখল, বালু লুটপাটে নেমেছে। তারা পাথর মেরে মানুষ হত্যা করে আনন্দ পায়। আমরা ওদের ঘৃণা জানাই।” একইসঙ্গে তিনি এ চক্রকে বাংলার মাটি থেকে উৎখাতের আহ্বান জানান।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামপন্থিদের ঐক্য এবং উলামায়ে কেরামের করণীয় নিয়ে আয়োজিত এ সভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে ফরিদপুর শহরের গেয়ালচামট এলাকার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পৌর অডিটোরিয়ামে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের জেলা শাখা এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা সৈয়দ শামসুল হক এবং প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মুফতি রেজাউল করিম আবরার।
চরমোনাই পীর সকল ইসলামী দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই ডাকে ইতিবাচক সাড়া মিলছে। এখনই ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার সময়। এই অগ্রযাত্রা দেখে ফ্যাসিস্ট চরিত্র ও চাঁদাবাজরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তারা ওলামাদের ও চরমোনাইয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে যাদের আহ্বানে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, তাদের নানা সমালোচনা করছে। অথচ তারা ১৭ বছরে এক ট্রাক বালুও সরাতে পারেনি।
তিনি নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিটি ভোটারের মূল্যায়ন করতে হবে। এটাই সবচেয়ে বড় সংস্কার। পাশাপাশি শাপলা চত্বর থেকে জুলাই পর্যন্ত সব হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এই সরকার না করলে, অন্য সরকার এলেও বিচার না হলে তা গুঁড়েবালিতে পরিণত হবে।”
সভায় অংশ নেওয়া অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য প্রফেসর আব্দুত তাওয়াব, জেলা আমির বদরুদ্দীন, প্রবীণ আলেম আল্লামা শাহ আকরাম আলী, আল্লামা হেলালুদ্দিনসহ বিভিন্ন ইসলামপন্থি দলের নেতৃবৃন্দ। তারা জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধন করে শাপলা চত্বরের অবদান যুক্ত করা, নির্বাচনে একজন প্রার্থীকে সমর্থনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট দেওয়া এবং ইউনিয়ন থেকে গ্রাম পর্যায়ে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।