
ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নিপীড়ন এখন কার্যত রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে গড়ে উঠছে, জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই ভয়াবহ চিত্র। মারধর থেকে খাদ্য- পানিতে বাধা, ইলেকট্রিক শক, এমনকি যৌন নির্যাতন, প্রতিবেদনে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেছে কমিটি।
কমিটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে অনেককে আইনজীবী বা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো সুযোগ ছাড়াই মাসের পর মাস ধরে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ অসংখ্য ফিলিস্তিনিকে প্রশাসনিক আটক আইন এবং ‘আনলফুল কম্ব্যাট্যান্টস’ আইনের আওতায় দীর্ঘ সময় ধরে রাখার বিষয়েও তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের নিয়মিত খাবার থেকে বঞ্চিত করা, কুকুর দিয়ে আক্রমণ করানো, স্থায়ীভাবে শেকলে আটকে রাখা, টয়লেট ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া এবং নিয়মিত মারধরের মতো আচরণ যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল হতে পারে।
কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, অভিযোগগুলো এতটাই ভয়ানক যে তারা “স্তম্ভিত” হয়েছেন। একই সঙ্গে তারা ইসরায়েলকে স্বাধীন তদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েল অবশ্য এসব অভিযোগ একেবারেই অস্বীকার করেছে। শুনানিতে দেশটির প্রতিনিধি বলেছেন, জাতিসংঘ পক্ষপাতদুষ্ট এবং প্রতিবেদনের অভিযোগগুলো “ভ্রান্ত”।
এমন সময় এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো যখন ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ছে। জাতিসংঘ জানায়, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত দুই ফিলিস্তিনির ঘটনা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো মনে হচ্ছে।
অন্যদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চললেও ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ। মানুষ শীত-বৃষ্টিতে তাঁবুতে দিন কাটাচ্ছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ মিলছে না এবং পর্যায়ক্রমে ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে।