
দীর্ঘদিন ধরে চলা টানাপোড়েন ও দর-কষাকষির অবসান ঘটিয়ে শেষমেশ একটি ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার স্কটল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্কটল্যান্ডে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েনের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
এ চুক্তি অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানিকৃত পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। বার্তাসংস্থা আনাদোলু সোমবার (২৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ট্রাম্প নিজে এই চুক্তির ঘোষণা দেন স্কটল্যান্ডের টার্নবেরিতে অবস্থিত নিজের গলফ রিসোর্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ফন ডার লিয়েন তার পাশে ছিলেন।
ট্রাম্প বলেন, “আজ আমরা চুক্তি করলাম, এটা খুব ভালো হলো। কোনো ধরনের খেলা না খেলে একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারা দারুণ ব্যাপার।”
এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক বসাবে, যেখানে আগে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জানান, এই হার ১৫ শতাংশের নিচে নামানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি আরও বলেন, “এটি আমাদের আরও কাছাকাছি আনবে... এক ধরনের অংশীদারিত্ব তৈরি হবে।” ট্রাম্প এই চুক্তিকে “এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চুক্তি” হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং জানান, যুক্তরাষ্ট্র আরও তিন থেকে চারটি দেশের সঙ্গে নতুন চুক্তি করার কথা ভাবছে।
চুক্তির অংশ হিসেবে, ইইউ যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং সেখানে থেকে ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি ও সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করবে। ট্রাম্প বলেন, “জ্বালানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।”
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েনও এই চুক্তিকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেন। তিনি বলেন, এটি “বড় ধরনের একটি চুক্তি”। তার ভাষায়, “বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে এই চুক্তি হয়েছে, যা কঠিন আলোচনার পর সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই চুক্তি স্থিতিশীলতা ও পূর্বানুমানযোগ্যতা আনবে— যা উভয়পারের ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
ফন ডার লিয়েন নিশ্চিত করেন, সব খাতে ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি শুরুতেই জানতাম এটা কঠিন হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভালো একটি ফলাফলে পৌঁছাতে পেরেছি।”