
ভোটের মাঠে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নারী অধিকার নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, নাগরিকের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়, এতে কোনো ধরনের চাপ বা জবরদস্তি চলতে পারে না।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর ভাসানটেক এলাকায় ঢাকা-১৭ আসনে জামায়াত প্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, শনিবার শুরার সমাপনী অধিবেশনেই জামায়াতের নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। সেখানে অমুসলিম ও নারী প্রার্থী মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, “ধর্মীয় কোনো বিশ্বাস ধারণ করা প্রত্যেক নাগরিকের নিজস্ব ব্যাপার। এখানে কোনো জোরজবরদস্তি চলবে না। আগামী নির্বাচনে জামায়াতের হয়েও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কেউ কেউ ইনশাআল্লাহ সংসদ সদস্য পদে লড়াই করবে। এর মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যের জায়গায় আনতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণ পরিবর্তনের আশা করেছিল, কিন্তু “ফ্যাসিবাদ এখনও রয়ে গেছে।” ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ যে দলকে নির্বাচিত করবে, জামায়াত সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে প্রস্তুত।
বিএনপির অবস্থানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “জনগণ যদি মহান আল্লাহর ইচ্ছায় জামায়াতকে নির্বাচিত করে, আমরা ইনশাল্লাহ আপনাদের বাদ দেব না। বিভক্ত জাতি আর দেখতে চাই না। যারা বিভক্ত করে তারা জাতির দুশমন।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতের প্রচার মিছিলে হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটছে এবং “পুরাতন সন্ত্রাসীরা নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করছে।”
নারী অধিকার নিয়ে প্রচারিত নেতিবাচক বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, “মুখে নয়, কর্মের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ সকল অপপ্রচারের জবাব দেব।”
ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে দলের ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী এসএম খালিদুজ্জামান এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
এদিকে সমাবেশের মঞ্চ জাতীয় পতাকার রঙে সাজানোয় সামাজিকমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, এতে পতাকার অবমাননা হয়েছে। তবে জামায়াতের সমর্থকরা পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, লাল-সবুজ রঙে মঞ্চ সাজানো অন্যান্য রাজনৈতিক দলও নিয়মিত করে থাকে।