
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমান ফেসবুকে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাসে তার দাদি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্মরণ করেছেন।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে জাইমার ফেসবুক আইডিতে এই স্ট্যাটাস প্রকাশিত হয়। পরে এটি বিএনপির ভেরিফায়েড পেজ ও মিডিয়া সেল, এবং তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিনের পেজেও শেয়ার করা হয়।
জাইমা লিখেছেন, “দাদুকে নিয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলোর একটি হলো, পরিবারকে আগলে রাখা একজন অভিভাবক হিসেবে তিনি কতটা মমতাময়ী ছিলেন। আমার বয়স তখন এগারো। স্কুলের ফুটবল টিম জেতার পর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন যাতে আমি নিজেই বিজয়ের গল্প বলতে পারি, আমার মেডেল দেখাতে পারি। দাদু মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে পরে সেই গল্প অন্যদেরও বলতেন।”

তিনি আরও লিখেছেন, “দাদুর কাঁধে ছিল দেশের দায়িত্ব। তবু আমার স্মৃতিতে তিনি ছিলেন পরিবারের জন্য মমতাময়ী অভিভাবক। লাখো মানুষের কাছে তিনি প্রধানমন্ত্রী হলেও আমার কাছে তিনি আমাদের ‘দাদু’। তিনি সব সময় আমাদের খেয়াল রাখতেন, সময় বের করতেন, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে সাহস দিতেন, উজ্জীবিত করতেন। এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো থেকেই আমি নেতৃত্বের প্রথম শিক্ষা নিয়েছি—নম্রতা, আন্তরিকতা ও মন দিয়ে শোনার মানসিকতা।”
জাইমা বলেন, “বাংলাদেশের বাইরে কাটানো ১৭ বছর আমাকে বাস্তববাদী করেছে, বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। তবু আমার হৃদয় সবসময় বাংলাদেশে ছিল। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শৃঙ্খলা শিখিয়েছে, কিন্তু মানুষের সঙ্গে কাজ করা আমাকে দায়িত্বশীল হতে শিখিয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেছেন, “আইন পেশায় মানুষের সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে, মানুষ হিসেবে কেমন হতে চাই তা শিখিয়েছে। দাদু ও আব্বুর সততা, দেশপ্রেম সবসময় প্রেরণা দিয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ও ৫ আগস্টের ঘটনায় নেপথ্য থেকে সহযোগিতা করেছি, বেশি শুনেছি, কম বলেছি।”
জাইমা লিখেছেন, “এবার দেশে ফিরে দাদুর পাশে থাকতে চাই। আব্বুকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে চাই। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চাই। মানুষের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে চাই, প্রিয় বাংলাদেশকে নতুন করে জানতে চাই। আশা করি, দেশ আবারো এগিয়ে যাবে, গর্জে উঠবে।”

তিনি স্বীকার করেছেন, “আমাদের পরিবারকে ঘিরে দেশের জনগণের কৌতূহল ও প্রত্যাশা রয়েছে। সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়ভার আমরা সবাই অনুভব করি। এই হলো আমার গল্প। প্রত্যেকের জীবনে একটি নিজস্ব গল্প আছে, যা ধারণ করে আমরা সবাই একসাথে পথ এগোতে পারি।”